রাজধানীতে ৩ দিনের সুন্নি ইজতেমা শুরু ১৪ ফেব্রুয়ারি

আগের সংবাদ

পোশাক খাতে সম্ভাবনার আলো

পরের সংবাদ

গানে গানে ‘বসন্ত’

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গান কিংবা কবিতায় সবচেয়ে বেশি রূপক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে বসন্তকাল। প্রাচীন সাহিত্য নিদর্শন ‘চর্যাপদ’ থেকে শুরু করে আধুনিক কালের বিভিন্ন গানে সৌন্দর্য বা সুদিনের প্রতিনিধি ঋতুরাজ ‘বসন্ত’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার ‘মায়ার খেলা’ গীতিনাট্যে লিখেছেন ‘আহা আজি এই বসন্তে, এতো ফুল ফোটে, এতো বাঁশি বাজে, এতো পাখি গায়।’ গাছের ডালে নতুন পাতা, বর্ণিল ফুল ও পাখির গান এ ঋতুর অনন্তÍ রূপ। শীতের উত্তরাল হাওয়া শেষে প্রকৃতিতে খেলা করে দখিনা হাওয়া। যার শিহরণে দোলা দেয় মানবহৃদয়। তাই হয়তো রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘আজি দখিন-দুয়ার খোলা/এসো হে, এসো হে, এসো হে আমার বসন্ত এসো/দিব হৃদয়দোলায় দোলা/এসো হে, এসো হে, এসো হে আমার বসন্ত এসো।’ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান-কবিতায় ঘুরে ফিরে এসেছে বসন্তের কথা। যার ছন্দে নেচে উঠে প্রেমিক মন, গেয়ে উঠে ‘জীবনে বসন্ত এসেছে/ফুলে ফুলে ভরে গেছে মন/ও বান্ধবী অনামিকা/আজ তোমাকেই প্রয়োজন; তবে এই গানটি ‘নারীর মন’ চলচ্চিত্রে সংগীতশিল্পী খালিদ হাসান মিলুর গাওয়া। একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে যে সিনেমা ও গান মাতিয়েছিল হাজার দর্শক। বসন্তের উল্লেখ পাওয়া যায় কবি কাজী নজরুল ইসলামের রচিত গানেও। তিনি লিখেছেন, ‘বসন্ত আজ আসলো ধরায়, ফুল ফুটেছে বনে বনে, শীতের হাওয়া পালিয়ে বেড়ায় ফাল্গুনী মোর মন বনে।’ অথবা ‘বসন্ত এলো এলো এলোরে, পঞ্চম স্বরে কোকিল কুহুরে।’ এমন হাজারো গীতিকবিতায় কখনো শূন্যতা বা কখনো পূর্ণতায় উঠে এসেছে ‘বসন্ত’। এ সময়ের অনেক গানেই রয়েছে এর প্রকাশ। ব্যান্ডদল ‘শূন্য’ তাদের ‘কেউ জানে না’ গানে বলছে, ‘ভোরের আলোরা কেউ জানে না/বসন্তের বাতাসও মানে না/যতই সময় পেরিয়ে দেখি আমি/মন যে তোমায় ভুলে না’; এই গান যেন এক ধরনের শূন্যতাবোধের কথা বলে। তবে বসন্ত প্রতিবারই ফিরে আসে। কুমার বিশ্বজিত গেয়েছেন ‘যেখানে সীমান্ত তোমার সেখানে বসন্ত আমার, ভালোবাসা হৃদয়ে নিয়ে, আমি বারেবারে আসি ফিরে, ডাকি তোমায় কাছে।’ এই গানটি লিখেছেন কাওসার আহমেদ চৌধুরী। শচীনদেব বর্মণ তার ‘শুনো গো দখিনা হাওয়া’ গানে গেয়েছেন, ‘রচিগো হেমন্তে মায়া শীতেতে উদাসী, হয়েছি বসন্তে আমি বাসনা বিলাসী।’ আবার রবি গুহ মজুমদারের কথায় অন্য এক গানে শচীনকর্তা গাইছেন, ‘কী করি আমি, কী করি/বনে ফাগুন, মনে আগুন’। বসন্ত নিয়ে সবচেয়ে সাড়া ফেলা গানটি হলো বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের লেখা, ‘বসন্ত বাতাসে সই গো বসন্ত বাতাসে, বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ, আমার বাড়ি আসে। বন্ধুর বাড়ির ফুল বাগানে, নানান রঙের ফুল, ফুলের গন্ধে মন আনন্দে ভ্রমর হয় আকুল।’ এই গানটি সংগীতশিল্পী কায়ার কণ্ঠেও বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। বসন্ত নিয়ে হাসান গেয়েছেন ‘শীত নয় গ্রীষ্ম নয় এসেছে বসন্ত’; এই গানটিও সংগীতশ্রোতাদের পাগল করা একটি গান। এ ছাড়া আমেরিকান সংগীতশিল্পী জন ডেনভারের ‘এ্যানিস সং’ অনুকরণে সুমন ও এলিটার গাওয়া ‘তোমার জন্য’ শিরোনামে ‘তুমি ভরেছো এ মন বসন্তেÍর পাহাড় চূড়ায় আর বৃষ্টি দিয়ে’ গানটিও শ্রোতাদের মনে করিয়ে ফুল ফোটা এক পাহাড় কিংবা অরন্যের কথা। যাইহোক, ‘ফুল ফুটুক আর না ফুটুক/আজ বসন্ত’; কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের লেখা বসন্তের এই পঙ্ক্তিটি প্রায়ই মূর্ত হয়ে উঠে মানুষের জীবনযাপন ও বাস্তবতায়। এ ছাড়া নির্মাতা সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘চতুষ্কোণ’ চলচ্চিত্রে বসন্ত নিয়ে অনুপম রায়ের কথা ও সুরে লগ্নজিতা চক্রবর্তীর গান ‘একরাশ বিষাদের মাঝখানে শুয়ে আছি, কানাঘুষা শোনা যায় বসন্ত এসে গেছে’ বেশ জনপ্রিয়।

:: মেলা প্রতিবেদক

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়