সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে শরীফার গল্প বাদ দিতে নোটিস

আগের সংবাদ

লাল-সবুজ পতাকা হাতে সমাবেশ করবে আ.লীগ

পরের সংবাদ

উপন্যাস থেকে সিনেমা : বাণিজ্যিকভাবে কতটা সফল

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

উপন্যাস বা গল্প অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্রের প্রতি আলাদা আগ্রহ থাকে পাঠকদের। বিভিন্ন সময় তৈরি হওয়া চলচ্চিত্রের ব্যবসায়িক দিক পর্যালোচনা করে এই দাবি করেছেন সিনেমা সংশ্লিষ্টরা। বলিউডের কিছু চলচ্চিত্র নিয়ে এমনই একটি বিশ্লেষণধর্মী রিপোর্ট করেছিল টাইমস অব ইন্ডিয়া। যার শুরুটা হয়েছিল ১৯০২ সালে নির্মিত জর্জ মেলির অ্যা ট্রিপ টু দ্য মুন চলচ্চিত্রের আলোচনা দিয়ে। এটি অনুপ্রাণিত ছিল ১৮৬৫ সালে জুল ভার্ন রচিত ফ্রম দ্য আর্থ টু দ্য মুন ও এর সিক্যুয়াল অ্যারাউন্ড দ্য মুন নামের উপন্যাস দুটো। ১৯১৩ সালে দাদাসাহেব ফালকের এবং ভারতের প্রথম ফিচার ফিল্ম রাজা হরিশচন্দ্র নির্মিত হয়েছিল মার্কন্ডেয় পুরাণ থেকে। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দুর্গেশনন্দিনীকে চলচ্চিত্রে রূপায়ণ করেছিলেন প্রিয়নাথ গাঙ্গুলি। ১৯২৫ সালের নির্বাক ছবি প্রেম সন্ন্যাস ছবিটি ছিল এডউইন অরনল্ডের দ্য লাইট অব এশিয়া কবিতা অবলম্বনে। সত্যজিৎ রায় বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস থেকে নির্মাণ করেছেন বিখ্যাত অপু ট্রিলজি। দেব আনন্দের গাইড, গুরুদত্তের সাহেব বিবি অউর গোলাম, শ্যান বেনেগালের জুনুন ভারতীয় চলচ্চিত্র দুনিয়ায় সাহিত্যকর্ম থেকে সফল চলচ্চিত্র নির্মাণের ইতিহাস বেশ সমৃদ্ধই বলা চলে।
ম্যান বুকারজয়ী অরবিন্দ আদিগার উপন্যাস দ্য হোয়াইট টাইগার অবলম্বনে স¤প্রতি মুক্তি পেয়েছে চলচ্চিত্র। এতে অভিনয় করেছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, রাজকুমার রাও। পরিণীতি চোপড়া ডিজিটাল দুনিয়ায় কাজ শুরু করেছেন পলা হাকিন্সের দ্য গার্ল অন দ্য ট্রেন ছবির অফিসিয়াল রিমেকের মাধ্যমে। হৃত্বিক রোশান জন লা ক্যারের থ্রিলার অবলম্বনে দ্য নাইট ম্যানেজার ছবিতে কাজ করেছেন।
বই থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুধু সমালোচকদের পছন্দের টপিক হয়ে ওঠে না, বরং বক্স অফিসেও এর গুরুত্ব লক্ষ করা যায়। ভারতীয় ট্রেড অ্যানালিস্ট অতুল মোহন মনে করেন, কোনো বই থেকে ঠিকভাবে নির্মিত ছবি সবসময়ই বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়েছে। তার কথায়, ‘দিলীপ কুমার ও শাহরুখ খানের ‘দেবদাস’ বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়েছে। অন্যদিকে ফিতুর, সাত খুন মাফ ও সাওয়ারিয়ার মতো অসফল ছবিও আছে তালিকায়।’
চেতন ভগতের উপন্যাস হাফ গার্লফ্রেন্ড থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য চিত্রনাট্য লিখেছিলেন তুষার হীরানন্দানি, ছবিতে অভিনয় করেন অর্জুন কাপুর ও শ্রদ্ধা কাপুর। তার মতে, বই থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণের ব্যাপারে একটু সুবিধা থাকে, বইটা পাঠক কিভাবে গ্রহণ করেছেন সেটা আগেই জানা যায়। ‘পাঠকের রায় আগেই জানা যায়, তাই আপনি নিশ্চিন্তে ছবি নির্মাণ করতে পারেন। কারণ কিছু দর্শক তো ছবি নিয়ে আগ্রহী হয়েই থাকবেন।’
মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ দীপেশ শাহ বলেন, ‘একটা ভালো গল্পের নিশ্চয়তা থাকলে ছবির বিপণন করাটাও সুবিধাজনক হয়। উপন্যাসটির ভক্তরা ছবির জন্য নিজের গরজে প্রচারণা চালাতে থাকেন। এটা মার্কেটিং ও প্রমোশন ক্যাম্পেইনের ক্ষেত্রে খুব কাজে লাগে।’ মুম্বাইয়ের বুক নার্ড সিদ্ধার্থ জৈন প্রতিষ্ঠা করেছেন স্টোরি ইংক নামে একটি এজেন্সি। তাদের কাজ চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য গল্প-উপন্যাস খোঁজা, সেগুলোকে পরিচালক-প্রযোজকদের কাছে নিয়ে যাওয়া, চিত্রনাট্য তৈরি এবং সর্বোপরি লেখক-প্রকাশকদের সঙ্গে চুক্তি করিয়ে দেয়া।
সিদ্ধার্থ বলেন, ‘চলচ্চিত্র দুনিয়ায় একটা প্যারাডাইম শিফট হয়েছে। আগের দিনে সবকিছু ছিল তারকাকেন্দ্রিক। এখন ছবির গল্প নিয়ে কথা হয়। আগের দিনে তারকা ফর্মুলার হিন্দি ছবিতে বইনির্ভর কাহিনী মেলানো যেত না।’
সিদ্ধার্থ কিভাবে লেখক ও প্রকাশককে কাছে আনেন? এমন প্রশ্নের জবাবে সিদ্ধার্থ ব্যাখ্যা করেন, ‘যে নির্মাতা কাহিনীর স্বত্ব কেনেন, চাইলে তিনি তাতে কিছু বদল আনতে পারেন। কিছু লেখক বাদে বেশির ভাগই তাদের বই নিয়ে সিনেমা হলে খুশি হন। অনেকেই পরিচালকের সঙ্গে সমন্বয় করার সুযোগ পান না।’ ভারতের জনপ্রিয় লেখক চেতন ভগতের দাবি, থ্রি ইডিয়টস ছবিটির ৭০ শতাংশ তার ফাইভ পয়েন্ট সামওয়ান বই থেকে প্রভাবিত। তবে ছবিতে তাকে ঠিকমতো ক্রেডিট না দেয়া ও চিত্রনাট্য তাকে না দেখানোয় তিনি বিরক্ত হয়েছেন। কিন্তু পরিচালক রাজ কুমার হিরানি অবশ্য দলিলসহ চেতনের দাবিকে মিথ্যা বলে প্রমাণ করেছেন। অবশ্য চেতনের নিজের সময়ও বদলেছে থ্রি ইডিয়টসের সাফল্যের পর। তার কথায়, ‘এখন নির্মাতারা আমাকে ক্রেডিট দিতে চান। এমনকি তারা আমার নামের ব্র্যান্ড ছবির প্রচারণায় ব্যবহার করতে আগ্রহী। কারণ এতে আমার পাঠকরা ছবিটি হলে গিয়ে দেখতে আগ্রহী হন। এজন্য আমি ভাগ্যবান।’

:: মেলা প্রতিবেদক

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়