বিজিএমইএ নির্বাচন মার্চে

আগের সংবাদ

জাপার আসনে নৌকা প্রত্যাহার! ৩০ থেকে ৩৫ আসন প্রত্যাশা জাতীয় পার্টির > চলছে দেনদরবার

পরের সংবাদ

কমেছে স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক ঋণ : বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের সুদের হার বেড়ে যাওয়া এবং ডলারের দাম ক্রমাগত বাড়ার কারণে অক্টোবরে বেসরকারি খাতের স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক ঋণ ৩০০ মিলিয়ন ডলার কমেছে, যার চাপ বেড়েছে ডলার ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে- অক্টোবর শেষে বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার। সেপ্টেম্বর শেষে এটি ছিল ১২ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের বেসরকারি খাতের বিদেশি বিভিন্ন ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান থেকে নেয়া স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক ঋণের আউটস্ট্যান্ডিং ছিল ১৬ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার। ১০ মাসের ব্যবধানে সেটি প্রায় ৪ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার কমেছে। এসব পেমেন্টের মধ্যে ৫২৫ মিলিয়ন ডলার দিতে হয়েছে ইন্টারেস্ট হিসেবে।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা বলেন- গত ১০ মাসে আমাদের ফরেক্স রিজার্ভের বড় পতন হয়েছে। এর অন্যতম কারণ প্রাইভেট সেক্টরে শর্ট টার্ম ফরেন লোন কমছে। এসব শর্ট টার্ম লোন নিয়ে আমদানি করা হতো। বর্তমানে আমদানি কমে যাওয়ার কারণেও এসব লোনের চাহিদা কিছুটা কমছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশের রিজার্ভ আছে ১৯ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। অগাস্ট শেষেও এর পরিমাণ ২৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন ছিল। অর্থাৎ তিন মাসের মধ্যেই রিজার্ভ কমেছে ৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।
সংশ্লিষ্টরা আরো জানান- ডলারের ইন্টারেস্ট রেট এখন আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে। এছাড়া লোন গ্রহীতারা এক্সচেঞ্জ রেট রিস্কের বিষয়টিও মাথায় রাখছেন। ফলে তারা লোন রিপেমেন্ট বেশি করছেন। যেটি আদতে আমাদের ব্যালেন্স অব পেমেন্ট এবং রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে।
স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক ঋণের জন্য ৮ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি সুদ দিতে হয়। বৈদেশিক ঋণের বিপরীতে সর্বাধিক সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেট (এসওএফআর) এর সঙ্গে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ সুদ দেয়ার নিয়ম রয়েছে। এসওএফআর এখন ৫ শতাংশের বেশি। ২০২০ সালে এটি ১ শতাংশের কম ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে টাকা অবমূল্যায়ন করা হয়েছে প্রায় ৬ শতাংশ।
তবে ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, টাকার মান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষণার চেয়ে বেশি কমেছে। উদাহরণ দিয়ে তারা বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বর্তমানে রিজার্ভ থেকে ১১০ টাকা ২৫ পয়সা রেটে ডলার বিক্রি করছে, কিন্তু আমদানিকারকরা সর্বোচ্চ ১২৮ টাকা রেটে ডলার কিনছেন। এখানেই পার্থক্য ১৭ টাকার বেশি। টাকার মান এভাবে কমে যাওয়ার কারণে ঋণগ্রহীতাদের বেশি দামে ডলার কিনে ঋণ শোধ করতে হচ্ছে। ভবিষ্যতে মান আরো কমে যেতে পারে, ব্যবসায়ীদের মধ্যে এমন শঙ্কা রয়েছে।
এছাড়া ঋণ নেয়ার অন্য খরচও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকাররা। তারা জানিয়েছেন, এখন বৈদেশিক ঋণের ইন্টারেস্টের ওপর ২০ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হয়। এমনিতেই ঋণের ইন্টারেস্ট রেট বেড়ে গেছে। ট্যাক্সের কারণে আরো অতিরিক্ত ১ দশমিক ৭ শতাংশ যোগ হয়ে নেট ইন্টারেস্ট ১০ দশমিক ২ শতাংশের বেশি হয়ে যায়। এত ইন্টারেস্ট দিয়ে ঋণ নিতে ব্যবসায়ীরা আগ্রহী নন। তবে শুধু ঋণের চাহিদাই নয়, ঋণ আগের মতো পাওয়াও যাচ্ছে না। বিদেশি অনেক ব্যাংকের ঋণ দেয়ার লিমিট কমে গেছে। আগে আমরা পুরনো ঋণ পরিশোধ করলে তারা নতুন ঋণ দিত। এখন সেটি হচ্ছে না। অর্থাৎ আমাদের এভাইলেবল লোন কমে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, অক্টোবরে নতুন ঋণ পাওয়া গেছে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। এর বিপরীতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা সুদসহ ২ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করেছেন। এ ব্যাপারে বেসরকারি ব্যাংকের সাবেক এক এমডি বলেন- আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো আমাদের ক্রেডিট রেটিং আগের তুলনায় খারাপ করে দেয়ায় অনেক বিদেশি ব্যাংক এখন আগের মতো আমাদের লোন দিতে চাচ্ছে না।
এছাড়া সময়মতো কিছু ব্যাংকের লোনের টাকা ফেরত না দেয়ায় আমাদের দুর্নাম হয়েছে। ফলে নতুন লোন ডিসবার্স কম হচ্ছে। এছাড়া আমদানি এলসি খোলা কমে আসায় লোনের ডিমান্ডও আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়