মৃত্যুদণ্ড থেকে বাঁচতে পরিচয় বদল, ৩০ বছর পর গ্রেপ্তার : কেরানীগঞ্জে বাবা-ছেলে হত্যা

আগের সংবাদ

‘স্বতন্ত্র’ নিয়ে নমনীয় আ.লীগ : ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি বাড়ানো প্রধান টার্গেট > সরকার চায় অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন

পরের সংবাদ

লাল সবুজে বিজয়ের বসন

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আধুনিকতা বলুন আর সচেতনতা বলুন, আমাদের সংস্কৃতির একটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে দিবসভিত্তিক সাজ- পোশাকের ব্যাপারটি। বিজয় দিবসও এর ব্যতিক্রম নয়। আমাদের আবেগ, ভালবাসা, হাসি-কান্নার সবটুকু ঘিরে আছে যে শব্দের অবস্থান তা হলো আমাদের স্বাধীনতা। আর এই স্বাধীনতার গৌরব আমরা ধারণ করেছি আমাদের হৃদয়ে। সেই গৌরব এবং ভালবাসার কিছু বহির্প্রকাশ ঘটে সাজে এবং পোশাকে। একারনেই বাংলাদেশের উৎসব আর দিবসভিত্তিক পোশাকে বিজয় দিবস উল্লেখযোগ্য। তবে নকশার ভাবনায় একঘেয়েমি থেকে বেরিয়ে সময়োপযোগী করার তাগিদ সেভাবে দেখা যায় না দেশীয় ব্র্যান্ডগুলোর সংগ্রহে। যদিও বরাবরই পোশাকের ক্যানভাসে প্রাধান্য পাচ্ছে পতাকার রঙ-ই!

সাদিকুর রহমান সাকিব

বিশেষ দিবস ও পোশাকের বিষয়ে আগের তুলনায় অনেক বেশি সচেতন হয়েছে মানুষ। বিশেষত তরুণেরা। সেই সঙ্গে ফ্যাশনসচেতন মানুষের রুচি-পছন্দ ও বিশেষ দিনগুলোর কথা মাথায় রেখে দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোও নিয়ে আসে থিমভিত্তিক পোশাক-আশাক। তেমনিই একটা দিন ১৬ ডিসেম্বর। ভাবা যায়, গোটা দেশ এই দিন লাল-সবুজে ছেয়ে যাবে! শুধু কি পতাকায়? পোশাকেও থাকবে লাল-সবুজের ছোঁয়া।

আমাদের দেশীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো নতুন প্রজন্মকে পোশাকের দিক থেকে করেছে স্বদেশমুখী। তাদের ডিজাইনের একটা বড় অংশজুড়ে রয়েছে দেশাত্মবাধের চেতনা। এবারের বিজয় দিবসে লাল-সবুজের প্রত্যয়ে আবারও সে চেষ্টাই চালিয়েছেন তারা। মূলত, ফ্যাশনের ধারাটা সময়কে ধারণ করে। স্টাইল, স্মার্টনেস, আউটলুকিংয়ের সামগ্রিক কনসেপ্টে বৈচিত্র্য এলেও বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ফ্যাশনে দেশাত্মবোধের ভাবধারাটা উন্মোচিত হয়। এর সঙ্গে আমাদের অন্যান্য উৎসবকেন্দ্রিক ফ্যাশন প্রবাহের রয়েছে এক বিরাট পার্থক্য। তাই তো আজ পোশাকে ডিজাইন, নকশা ও রঙে উঠে আসে বাংলাদেশের অবিস্মরণীয় জন্ম লাভের ইতিহাস। তাতে রয়েছে বাঙালির স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, বাংলা ভাষার প্রতি সশ্রদ্ধ মমতা এবং এক রক্তক্ষয়ী ইতিহাসের প্রবল অনুরণন। যে অনুরণনের প্রতিটি পল-অনুপলে রয়েছে স্বাধীনচেতা বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যের মহিমান্বিত গৌরবগাঁথার মহোত্তম স্বপ্ন বিকাশের আদিগন্ত স্ফূরণ। দীর্ঘ আন্দোলন, সংগ্রাম, যুদ্ধ এবং পরিণতিতে স্বাধীনতা অর্জন। এ ফ্যাশন-স্টাইলে উৎসবী আমেজ থাকলেও তার থেকে বেশি থাকে দেশাত্মবোধ তথা দেশপ্রেম। আর সেই কারণেই বিজয়, স্বাধীনতা কিংবা ভাষা দিবসের ফ্যাশনের প্রথম চিত্রকল্প হিসেবে পোশাকে, শো-পিসে, পটে উঠে আসে মুক্তিযুদ্ধের স্থিরচিত্রের চিত্রকর্ম; বঙ্গবন্ধুর মুখচ্ছবি। ’৭১-এর আত্মত্যাগের বাঙালি ধরনটা যেমন হৃদয় ছোঁয়া, মর্মস্পর্শী, আবেগঘন; তেমনি আনন্দময়তার রেশটাও কম নয়। ফলে দু’টি রূপেরই প্রতিফলন বিস্মিত হয় ১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মার্চ এবং ২১ ফেব্রুয়ারির ফ্যাশন কনসেপ্টে। আর এই ফ্যাশন বোধের মর্মকথাটা চিত্রে ও কবিতার পঙক্তির মাধ্যমে পোশাকে উৎকীর্ণ করার সফল প্রয়াসটা প্রতি বছরের এই বিশেষ দিনগুলোতে করে থাকেন প্রতিষ্ঠিত আউটলেটগুলোর পক্ষে স্ব-স্ব ডিজাইনাররা।
এবারের বিজয় দিবসও এর ব্যতিক্রম নয়। ইতিমধ্যে দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ফ্যাশন হাউজগুলো বিভিন্ন প্রজন্মের ফ্যাশন সচেতনদের জন্য আউটলেট সাজিয়েছে পোশাকের মনোহর পসরা।
ফ্যাশন ব্র্যান্ড অঞ্জন’স এর শীর্ষ নির্বাহী শাহীন আহম্মেদ বলেন, দিবসভিত্তিক এসব আয়োজন করতে খুবই ভালো লাগে। মনে হয়, দেশের সব শ্রেণির মানুষের কাছে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি দেশের প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার বার্তা। এ ধরনের কাজ অনুপ্রাণিত করে। রং হিসেবে লাল-সবুজ প্রাধান্য পেয়েছে। আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, সব বয়সী মানুষের দিকে লক্ষ রেখে পোশাক তৈরি করা হয়েছে, যেন সবাই বিজয় দিবসে নিজেদের রাঙিয়ে নিতে পারেন স্বদেশপ্রেমের চেতনায়।
কেবল বড়দের নয়, প্রতিটি উপলক্ষে ছোটদের পোশাককে সমান গুরুত্ব দিয়ে থাকে বলেই বাচ্চাদের সংগ্রহও হয় বিশেষভাবে আকর্ষণীয়। রয়েছে পরিবারের সবার জন্য একই ধরনের ম্যাচিং পোশাক।
সব ফ্যাশন ব্র্যান্ডের পোশাকেই সবুজ ও লাল রং প্রাধান্য পেয়েছে। পাশাপাশি থাকছে নানা বিজয় দিবস ভিত্তিক মোটিফ। অর্থাৎ ফ্যাশন ডিজাইনাররা সব পোশাকের মাধ্যমে আমাদের অহংকার, আমাদের বিজয় দিবসের বিষয়গুলোকে প্রকাশের চেষ্টা করেছেন।

পোশাকে ব্যবহার করা হয়েছে নিজস্ব উইভিংয়ে করা ডিজাইন, টাই অ্যান্ড ডাই, স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, অ্যাপলিক, এমব্রয়ডারিসহ বিভিন্ন মাধ্যম। কারোর পোশাকে উঠে এসেছে বাংলাদেশের মানচিত্র, কারোর নকশায় প্রাধান্য পেয়েছে জাতীয় পতাকা, কোনোটায় রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের নানা ছবি, লেখা, কবিতার লাইন ও জাতীয় ফুল। অর্থাৎ বিজয় উৎসবের বিভিন্ন প্রতীক ব্যবহার করে ডিজাইন করা হয়েছে বিজয় দিবসের পোশাকগুলোতে।
ভ্যালু এডিশন হিসাবে পোশাকে কাজ করা হয়েছে এমব্রয়ডারি, অ্যাপ্লিক, ব্লক, হাতের কাজ, হ্যান্ড পেইন্ট, টাইডাই প্রভৃতি। লাল-সবুজের পাশাপাশি পোশাকে ব্যবহার করা হয়েছে আকাশি, মেরুন ও ধূসর রং। বিজয় দিবসে ফ্যাশন হাউস নিপুণ সেজেছে লাল-সবুজের বিজয় রঙে। পাঞ্জাবি, শাড়ি, কুর্তি, সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে বাচ্চাদের পোশাকেও রয়েছে বিজয়ের রং।

পোশাক : অঞ্জন’স

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়