ঢাবি উপাচার্য : বিদেশিরা উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে চায়

আগের সংবাদ

সিগন্যালের অপেক্ষায় তারা : ৮০ থেকে ১০০ আসনে জোট-মিত্রদের ‘ছাড়’ > ১৭ ডিসেম্বরের আগেই সমঝোতা

পরের সংবাদ

সংসদ নির্বাচনে একঝাঁক তারকা প্রার্থী

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ২, ২০২৩ , ১:০২ পূর্বাহ্ণ

মুক্তো বিন্দুর মতো শিশির জমতে শুরু করেছে ঘাসের ডগায়, ধানের শীষের ওপর। আদিগন্ত মাঠজুড়ে এখন ধানের প্রাচুর্য। দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। দিনভর গরম থাকলেও বিকাল থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে প্রকৃতি। নিচ্ছে শান্ত-নীরব রূপ। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সারাদেশে শুরু হয়েছে আনন্দের জোয়ার। মিছিল-মিটিংয়ে সরগরম রাজপথ। যার ঢেউ এসে পড়েছে শোবিজ জগতেও। তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী দৌড়ে শামিল হন চলচ্চিত্র, টেলিভিশন নাটক ও সংগীতাঙ্গনের বেশ কয়েকজন তারকা। রুপালি পর্দায় আলো ছড়ানো কিছু তারকা আলাদা করে নজর কেড়েছেন। অনেকে নৌকার টিকেট চেয়েও পাননি। নায়ক শাকিল খান বাগেরহাট-৩, বরিশাল-৩ থেকে মাসুদ পারভেজ রুবেল, ফেনী-৩ থেকে রোকেয়া প্রাচী ও শমী কায়সার, ঢাকা-৮ থেকে গায়ক এস ডি রুবেল, ঝিনাইদহ-১ থেকে চিত্রনায়িকা শিমলা, ঢাকা-১৭ ও টাঙ্গাইল-১ থেকে অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে যেমন প্রার্থী আছেন, সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে আলোচনায় এসেছেন কেউ কেউ।
এর আগে কোনো নির্বাচন নিয়ে তারকাদের এমন আগ্রহ দেখা যায়নি। রাজধানী ঢাকার-১০ আসন থেকে চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন। সুজন মাঝি থেকে নৌকার মাঝি হওয়ার পর উচ্ছ¡াস প্রকাশ করেন নায়ক ফেরদৌস। আওয়ামী লীগের হয়ে ঢাকা-১০ আসনের চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়ে ভীষণ আনন্দিত নৌকার নতুন তারকা মাঝি। তিনি বলেন, ‘অনেক বড় দায়িত্ব। আমার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর এই আস্থা ও বিশ্বাস রক্ষার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করব।’
ফেরদৌস ছাড়া নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পাওয়া বিনোদন অঙ্গনের অন্য দুজন হলেন- আসাদুজ্জামান নূর ও মমতাজ। তারা যথাক্রমে নীলফামারী-২ এবং মানিকগঞ্জ-২ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন। তারা আগেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সাল থেকেই আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন আসাদুজ্জামান নূর। টানা পঞ্চমবার নৌকার মনোনয়ন পান তিনি।
অন্যদিকে ২০০৯ সালে নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মনোনীত হন মমতাজ বেগম। আর ২০১৪ সাল থেকে মানিকগঞ্জ-২ আসনে নির্বাচিত হয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মমতাজ।
বাংলাদেশের সুরসম্রাজ্ঞী বলে খ্যাত মমতাজ তার চার দশকের কর্মজীবনে ৭০০-এর অধিক গান রেকর্ড করেছেন। তিনি দুইবার শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
এবার তাদের সঙ্গে নতুন তারকা হিসেবে সংসদ নির্বাচনে নৌকার মাঝি হয়ে অংশ নিচ্ছেন ফেরদৌস।
এর বাইরে বেশ কিছুদিন ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠা মাহিয়া মাহিও রাজশাহী-১ থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। তিনি এর আগেও উপনির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন চেয়ে পাননি।
এদিকে নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে (বিএনএম) যোগ দিয়ে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন সংগীতশিল্পী ডলি সায়ন্তনী। পাবনা-২ আসন থেকে ভোটে দাঁড়াবেন এই শিল্পী। রাজনীতিতে আসা নিয়ে ডলি বলেন, ‘আমি কখনোই কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সক্রিয় ছিলাম না। কখনোই রাজনীতি করিনি। রাজনীতিতে নতুন।’ দল হিসেবে বিএনএমকে বেছে নেয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানান, বিএনএম তাকে অফার করেছে। অন্যরা কেউ করেনি।
‘হঠাৎ বৃষ্টি’ দিয়ে অভিনয় শুরু চিত্রনায়ক ফেরদৌসের। ১৯৯৮ সালে মুক্তি পাওয়া এ ছবি তাকে ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়। সম্প্রতি তাকে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠতে দেখা যায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নির্বাচনে জনসংযোগে তাকে সরব দেখা গেছে।
নীলফামারী-২ (সদর) আসনে সংসদ সদস্য পদে টানা পঞ্চমবারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন দেশবরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। ১৯৬৩ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নে যোগদানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে যোগদান করেন আসাদুজ্জামান নূর। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। দীর্ঘদিন প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে নিজেকে বিরত রেখে সংস্কৃতি কর্মী হিসেবে নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। ১৯৯৮ সালে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ২০০২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন এবং পরবর্তী সময়ে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্ব লাভ করেন।
আসাদুজ্জামান নূর নীলফামারী-২ আসন থেকে ২০০১, ২০০৮ এবং ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।
এদিকে ৩০ নভেম্বর মনোনয়ন ফরম জমা দেয়া শেষ করার মাধ্যমে শুরু হয়েছে ভোটযুদ্ধ। মনোনয়ন যাচাই-বাছাই শেষ হবে ১-৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ১৮ ডিসেম্বর। আর ভোট অনুষ্ঠিত হবে ৭ জানুয়ারি।

:: মোহাম্মদ ইব্রাহীম

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়