ডিবিতে অভিনেত্রী তিশার অভিযোগ : লুবাবার অভিযোগকারী আটক

আগের সংবাদ

সমঝোতা হলে পুনঃতফসিল : সুযোগ আছে সংবিধানে > আপত্তি নেই আওয়ামী লীগের > সিদ্ধান্ত নিতে হবে ১০ দিনের মধ্যেই

পরের সংবাদ

স্বপ্নরাজ্যের বালিশ

প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দুপুরবেলায় নীতু একদমই ঘুমোতে চায় না, খাওয়া-দাওয়া সেরে সোজা খেলতে চলে যায়। সারাদিন রোদের ভেতর উঠোনে বসে খেলাধুলা করা রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনো শাসন-বারণ শোনেই না। এজন্য মায়ের হাতে অনেক বকুনি খেয়েছে। শেষে দাদি একটি বুদ্ধি বের করেন। পুরাতন কাপড় ও তুলা দিয়ে ছোট্ট একটি বালিশ বানিয়ে নীতুকে বলেন, দুপুরবেলা এই বালিশে ঘুমালে তুমি নানান রকম স্বপ্ন দেখতে পাবে। ঘুমের মধ্যে নানান দেশের পরীদের স্বপ্নরাজ্যে যেতে পারবে। সেখানে তাদের সঙ্গে মজা করে সময় কাটাতে পারবে, ঘুরতে পারবে। খেতে পারবে হরেক রকমের ফলফলাদিও। নীতু দাদির কথা বিশ্বাস করে বালিশটি হাতে নিয়ে খুব খুশি হয়। বলে, তাহলে আজ থেকে এই বালিশে আমি ঘুমাব।
দুপুরের ভাত খাওয়ার পর দাদি নীতুকে ঘুমানোর জন্য ডাকতে থাকেন। নীতুর খুব মন খারাপ। সে আজ বাইরে খেলতে পারবে না! তবুও দাদির ডাকে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে চলে আসে। পরক্ষণেই মন ভালো হয়ে যায় দাদির দেয়া বালিশটি দেখে। দাদি নীতুকে ঘুম পাড়ানোর জন্য নতুন বালিশে শুইয়ে দেয়। তারপর নিজেও পাশে শুয়ে শুয়ে পরীদের গল্প শোনাতে থাকে। গল্প শুনতে শুনতে নীতু একদমই ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে যায়। দাদি যখন বুঝতে পারে সে ঘুমিয়ে গেছে, তখন তার গায়ের ওপর পাতলা কাঁথাটি জড়িয়ে দেয়। দাদিও নীতুর পাশে শুয়ে থাকে, একসময় ঘুমিয়ে যায়।
নীতুকে কে জানি ডাকছে- এই নীতু জলদি বাইরে আয়। নীতু বাইরে বের হয়ে দেখে, কী সুন্দর একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে, ঠিক যেন পরীর মতোন!
নীতু বলল- কে তুমি?
মেয়েটি বলল- আমি স্বপ্নরাজ্যে থাকি, আমার নাম মেঘাপরী।
– কী চাও তুমি?
– আমি কিছু চাই না। বাইরে গিয়ে খেলতে পারছ না বলে আজ তোমার মন খারাপ, তাই না?
– হ্যাঁ, তুমি ঠিকই ধরতে পেরছ।
– মন খারাপ করো না, আমার সাথে চলো, তোমাকে আজ আমাদের স্বপ্নরাজ্যে ঘুরতে নিয়ে যাব।
– কিন্তু আমি কীভাবে যাব? আর মা বকা দেবে তো।
– আরে ধুর, কিচ্ছু হবে না! তুমি তো ঘুমিয়েই আছ, কেউ কিছু বুঝতেই পারবে না। তোমাকে আমি ডানার উপর বসিয়ে নিয়ে যাব।
তারপর দুজন মিলে অল্প সময়ের মধ্যে স্বপ্নরাজ্যে চলে গেল। নীতু সেখানে গিয়ে অবাক হয়ে যায়, চারদিক কত সুন্দর! মন ভালো করার মতো চমৎকার সব দৃশ্য।
নীতু সেখানে অনেক সুন্দর সুন্দর পরী দেখতে পায়! ভিনগ্রহের এই পরীদের দেখে সে ভয় পেয়ে যায়। মেঘাপরী তার মা-বাবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। মেঘাপরীর মা-বাবা এসে অভয় দেন, তখন নীতুর মনে সাহস সঞ্চার হয়।
পৃথিবী থেকে একটা মেয়ে এসেছে- খবরটি রটে যায় পুরো স্বপ্নরাজ্যে। সবাই দল বেঁধে দেখতে আসে, নীতুকে সবাই রংবেরঙের ফুল দিয়ে স্বাগত জানায়। পরীরা সবাই মিলে নীতুকে নানান ধরনের ফলফলাদি খেতে দেয়, সে তাদের সঙ্গে মজা করে খেতে থাকে। এরপর পরীরা নীতুকে নিয়ে দল বেঁধে নাচে গানে আনন্দ করে এবং তাদের সঙ্গে নিয়ে পুরো স্বপ্নরাজ্য ঘুরে দেখায়। আনন্দ-আড্ডায় নীতুর সময়টি খুব সুন্দর কাটে। তার আরো কিছুক্ষণ থেকে যেতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু একটু পরই তো মা ডাকবে। তাই নীতু চলে আসার ইচ্ছে প্রকাশ করে।
মেঘাপরী নীতুকে প্রস্তুতি নিতে বলে। এই ফাঁকে নীতু আবার আসবে বলে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নেয়। সব পরীর চোখের কোণে অশ্রæ ছলছল করছে দেখে নীতুরও চোখে অশ্রæ ঝরতে শুরু করে। এরপর মেঘাপরী নীতুকে তার ডানায় তুলে উড়াল দেয়, কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়ি পৌঁছে যায় সে। মেঘাপরীকে এবারের মতো সুন্দরভাবে বিদায় দিয়ে আস্তে আস্তে উড়ে চলে যায় সে।
এর মধ্যেই হঠাৎ করে নীতুর ঘুম ভেঙে যায়! ঘুম থেকে উঠে চোখ কচলাতে থাকে, চারিদিকে তাকিয়ে দেখে- পাশে তো দাদি শুয়ে আছে!
তখন সে বুঝতে পারে, দাদির তৈরি বালিশ মাথায় দিয়ে এতক্ষণ ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখছিল!

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়