ডিবিতে অভিনেত্রী তিশার অভিযোগ : লুবাবার অভিযোগকারী আটক

আগের সংবাদ

সমঝোতা হলে পুনঃতফসিল : সুযোগ আছে সংবিধানে > আপত্তি নেই আওয়ামী লীগের > সিদ্ধান্ত নিতে হবে ১০ দিনের মধ্যেই

পরের সংবাদ

দরজা ও জানালার বন্ধুত্ব কঙ্কন সরকার

প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

একঘরে এক দরজা ও দুই জানালা বাস করে। অনেকদিন থেকে তাদের এই বসবাস। একসঙ্গে থাকতে থাকতে ভালো বন্ধু হয়ে গেছে তারা। তো হঠাৎ একদিন দরজা ও জানালার মাঝে কী নিয়ে যেন ঝগড়া বেঁধে গেল। ছোট সে ঝগড়া হতে হতে বড়তে রূপ নিল। দরজা বড়। তাই সে হুংকার দিয়ে উঠল- জানালা তুই তো পুঁচকে, এত ভাব কীসের তোর!
জানালা মুখ ভেংচিয়ে বলল- শুধু বড়দেরই ভাব থাকতে হয় বুঝি!
দরজা বলল- এই, আমার ভেতর দিয়ে ঢুকতে না পারলে তো তোর কাজই নেই!
জানালাও নাছোড়। সে বোঝাল- দেখো, তোমার ভেতর দিয়ে ঢুকতে পারে কিন্তু আমার ভেতর দিয়ে আলো বাতাস ঢোকে!
দরজা এবার খেঁকিয়ে উঠে বলে- আলো বাতাস ঢোকে! পর্দায় ঢেকে দিলে আলো-বাতাস না কচু!
এবার জানালাও অনেকটা ক্ষেপে উঠল। বলল- হয়েছে হয়েছে, দেখেছ কী যখন কারো মন খারাপ হয় কিংবা একলা থাকতে ইচ্ছে জাগে তখন আমার গ্রিল ধরে আকাশ দেখে, রাতের তারা দেখে, চাঁদ দেখে, প্রকৃতি দেখে। দেখোনি তা!
ন্যাকামোর মতো করে দরজা বলল- দেখোনি তা! তারপর নতুন যুক্তি দেখিয়ে বলল- শোনো, তোমায় সবসময় প্রয়োজন না-ও লাগতে পারে! তাইতো কখনো কখনো ফার্নিচার বসিয়ে তোমায় বন্ধ করে রাখে।
এবার জানালা একটু ঝাঁকুনি খেলো মনে হয়! তবু নিজেকে সামলিয়ে বলল- হ্যাঁ করে, কিন্তু তোমার মতো ঝামেলা সহ্য করতে হয় না!
কৌতূহলে দরজা বলল- মানে!
জানালা মুচকি হাসি দিয়ে বলল- মানে হচ্ছে তুমি তো খুব গর্ব করে বললে, তোমার ভেতর দিয়ে প্রবেশ করে, বাহির হয়। সে যেন মুখটা এগোবে এমন ভাব করে বলল- আচ্ছা বলতো, তোমায় সবসময় ব্যস্ত থাকতে হয় না? স্বস্তি আছে? আরাম হয়?
দরজা মুখ ফুলিয়ে বলল- অলসদের যত কথা!
জানালা আবারো হাসি দিয়ে কিছু বলতে যাবে তখনই ঘরের বাসিন্দা অমৃতামনি ঢুকল। দরজা জানালাকে দেখেই বুঝতে পারল কিছু একটা হয়েছে! বললো- কী ব্যাপার, কী হয়েছে তোমাদের!
দরজা জানালা দুজনই চুপচাপ।
অমৃতামনি অনেকটা রেগে বলল- কী? চুপচাপ কেন? বলো, কীসের জন্য চিৎকার চেঁচামেচি চলছিল!
জানালাকে এবার দরজা বলল- এই জানালা, কী হয়েছে বল।
জানালাকে কাঁচুমাচু করতে দেখে দরজা হেসে বলল- এখন কেন কাঁচুমাচু! এতক্ষণ না মুখে খৈ ফুটল… আমি এ, আমি ও!
জানালা ফোঁস করে উঠে বলল- নিজে বড় হওয়ার অহংকার!
অমৃতামনি মাথা দুলিয়ে বলল- ও! নিজেদের মাঝে ঝগড়া বাঁধিয়েছ বড়-ছোট নিয়ে! শোনো, ছোট-বড় হতেই পারে তাই বলে কেউ ফেলনা নয়। বড়র যেমন দরকার ছোটরও তেমন গুরুত্ব আছে। সবাই যদি যার যার জায়গা থেকে হাত বাড়িয়ে দেই, দেখো সবকিছু কত্তো সুন্দর হয়!
বলতে বলতে অমৃতা দুুনার দিকে তাকালো। তারপর আবার বলল- এই যেমন দরজা না হলে হয় না, আবার জানালা না থাকলে সেটা ঘর হলো!
খানিকক্ষণ সবাই চুপচাপ। দরজা ও জানালার ঝগড়ার ভাবটি নেই আর। অমৃতামনিই বলল- শোনো ঝগড়া করে কি বড় হওয়া যায়! কাউকে ছোট করাও যায় না। ঝগড়ায় মন খারাপ হয়। এই যে এতদিন মিলেমিশে ছিলে, কী ভালো যে লাগছিল!
দরজা জানালা দুজনেই এক সঙ্গে বলল- মন খারাপ করোনা অমৃতামনি। আমরা আর ঝগড়া বাঁধাবো না। আগের মতো মিলেমিশে থাকব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়