প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছেও যে তারকারা কতটা একা, নিজেদের তিল তিল করে তৈরি করা জায়গা হারিয়ে ফেলার যে কত ভয়, সেসব বিড়ম্বনা জানতে পারেন না অনেকেই। আর এই ভয় ও নানা ধরনের হতাশা থেকেই তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্রমশ অবনতি হতে শুরু করে, যা একসময় তাদের চূড়ান্ত ডিপ্রেশনের দিকে ঠেলে দেয়। এমনকি কেউ কেউ মৃত্যুর কাছেও হার মানে। সুশান্ত সিং রাজপুতের অকাল মৃত্যুর পর বারবার তার মেন্টাল হেলথ নিয়ে আলোচনা হয়েছে সংবাদমাধ্যমে। বলিউডের এমন অনেক তারকাই আছেন, যারা অবসাদে ডুবে একসময় মারাই গিয়েছেন। আবার অনেকেই সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন জীবনের মূলস্রোতে। দাপিয়ে কাজ করছেন সিনেমাজগতে। বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পেরিয়ে এসে তাদেরই গল্প রইল এই প্রতিবেদনে
অমিতাভ বচ্চন
তিনি ‘বলিউডের শাহেন শাহ’। ছবির জগতে দীর্ঘ ৫৪ বছরের ক্যারিয়ারে অমিতাভ বচ্চনের খারাপ সময় খুবই কম। ১৯৯০ সালের পর থেকে তার একের পর এক ছবি ফ্লপ, নতুন জেনারেশনের তারকা হিসেবে শাহরুখ-সালমানদের উঠে আসা, সর্বোপরি নিজের কোম্পানি এবিসিএলের ভরাডুবিও হয় এই একই সময়ে। সবকিছু মিলিয়ে তখন প্রায় দেউলিয়া হওয়ার মুখে দাঁড়িয়েছিলেন বিগ বি। সেইসময়ই ডিপ্রেশনের শিকার হন তিনি। কিন্তু ওই অন্ধকার অধ্যায়কে পেছনে ফেলেই শুরু হয় তার অভিনয় ক্যারিয়ারের সেকেন্ড ইনিংস, যা আজো সমান গতিতে চলছে।
রাজেশ খান্না
বলিউডের প্রথম সুপারস্টার আখ্যা দেয়া হয় তাকে। ১৯৬৯-১৯৭২ এই সময়কালে টানা ১২টি সুপারহিট ছবি দিয়ে হিন্দি ছবির জগতে নিজেকে একক সম্রাট হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাজেশ খান্না। তার জীবনেও খারাপ সময় নেমে এসেছিল খুব শিগগিরই। অমিতাভ বচ্চনের উত্থান এবং সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে ক্রমশ তলিয়ে যেতে থাকেন একসময়ের সুপারস্টার। তার ওপর স্ত্রী ডিম্পল কাপাডিয়ার সঙ্গে অসুখী দাম্পত্য, সংসার ভেঙে যাওয়া- সবমিলিয়ে ওই যে রাজেশ ডিপ্রেশনের শিকার হলেন তারপর আর পুরনো উদ্যমে সিনেমাজগতে ফিরতেই পারলেন না।
শাহরুখ খান
শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি! ডিপ্রেশনের শিকার হয়েছিলেন বলিউডের ‘বাদশা’ শাহরুখ খানও। বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা হয়েও একসময় তাকে চারপাশ দিয়ে ঘিরে ধরেছিল চরম অবসাদ। ২০১০ সাল নাগাদ কাঁধে গুরুতর চোট পেয়েছিলেন শাহরুখ। এরপরই তার মনে হয়েছিল সব শেষ। আর বোধহয় আগের মতো অভিনয় করতে পারবেন না। কিন্তু সেই চোট সারিয়ে তিনি ফিরে এসেছেন। আর দাপিয়ে অভিনয় করছেন এখনো। আর সেজন্যই হয়তো এখন নিজেকে ‘দ্য লাস্ট অফ দ্য স্টারস’ বলতেও দ্বিধাবোধ করেন না শাহরুখ।
পারভীন ববি
বলিউডের তারকাদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা হবে, আর সেখানে পারভীন ববির নাম আসবে না, সেটা প্রায় অসম্ভব। একসময়ের অন্যতম সুন্দরী এবং সেরা অভিনেত্রীর শেষ জীবন যে কতটা কষ্টের কেটেছে, তা পারভীনের গল্প না জানলে বোঝাই যাবে না। স্কিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত এবং কর্মজীবন- দুইয়েরই চরম ক্ষতি হয়েছিল। শেষে ২০০৫ সালে মুম্বাইয়ের ফ্ল্যাট থেকে তার মরদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের সন্দেহ ছিল, অভিনেত্রীর দেহ মৃত্যুর পরও ৭২ ঘণ্টা ধরে পড়েছিল ফ্ল্যাটের ভেতরে।
দীপিকা পাড়ুকোন
দীপিকাই প্রথম সারির সেই অভিনেত্রী, যিনি সর্বপ্রথম নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির কথা সবার সামনে বলার সাহস দেখিয়েছিলেন। তিনি যে একসময় চূড়ান্ত ডিপ্রেশনের রোগী ছিলেন। তা কোনোরকম রাখঢাক না করেই সংবাদমাধ্যমের সামনে জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। দীপিকা যখন বলিউডের উঠতি তারকা, সেইসময় রণবীর কাপুরের সঙ্গে তার প্রেম ছিল। দুজনের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার কারণেই তার মানসিক স্বাস্থ্য একসময় খুবই খারাপ হয়ে যায়। অবসাদের কারণে নিজেকে তখন প্রায় ঘরবন্দি করে ফেলেছিলেন নায়িকা।
এছাড়াও টাইগার শ্রফ, হৃত্বিক রোশন, সঞ্জয় দত্তের মতো অভিনেতারাও একসময় ডিপ্রেশনে ভুগেছেন। তবে মানসিক দৃঢ়তা ও সঠিক গাইডেন্সে তারা আবার জীবনের মূলস্রোতে ফিরতে পেরেছেন। আবার জিয়া খানের মতো নতুন প্রজন্মের অভিনেত্রীরা কম বয়সেই অবসাদের শিকার হয়ে হারিয়ে গিয়েছেন অন্ধকারে।
: মেলা ডেস্ক
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।