ভোটের দিন বাইক চালাতে পারবেন সাংবাদিকরা : ইসির অতিরিক্ত সচিব

আগের সংবাদ

ভিডিওবার্তায় তামিম ইকবাল : নোংরামিতে থাকতে চাইনি > কখনো বলিনি ৫ ম্যাচের বেশি খেলব না > তীর ৩ শীর্ষ কর্মকর্তার দিকে

পরের সংবাদ

তমালের রানু দি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

: রানু দি, তোমার বিয়ে?
: হ্যাঁ
: আর দেখা হবে না, তাই না?
: হবে। মাঝে মাঝে আসব তো।
: বিয়েটা না করলে হয় না? তোমাকে ছেড়ে থাকতে পারব আমি? কে আমায় ঘুড়ি বানিয়ে দেবে? গুগলি ঘাটে কার সঙ্গে মাছ ধরব? ফড়িং ধরার মাঠে মেলায় যাব কার সঙ্গে? তুমি আমার কথা একটুও ভাবলে না। বিয়েতে রাজি হয়ে গেলে?
: এটাই তো নিয়মরে তমাল। মেয়েদের জীবনটাই তো এ রকম। আমারই বা কম কষ্ট হচ্ছে? আগের মতো আর গাছে উঠতে পারব? সাহেব বাড়ির আম বাগানে দোলনা বানিয়ে কত দোল খেয়েছি। নদীর পাড়ে কাশের বনে কত লুকোচুরি খেলা; সেসব ভোলা যায়?
: বৃষ্টির সময় তোমার সঙ্গে ভেলায় চড়েছি। ফুল বাড়ির হাটে ভানুমতির খেল দেখেছি কত! এখন তার কী হবে? তোমাকে যেমনটি ভেবেছিলাম, তুমি সে রকম নও। পচা একটা মেয়ে তুমি।
: রাগ করিস না তমাল। দেখবি একটা সময় সব ঠিক হয়ে যাবে। আমাকেও হয়তো এক সময় ভুলে বসবি।
: মিথ্যা কথা। তোমাকে আমি কখনো ভুলব না। তোমাকে আমি কত ভালোবাসি, তা জানো তুমি?
: এই পাগল, আমার দিকে তাকা, কাঁদিস নে, শোন। কথা শোন তমাল।
: না। আমি আর তোমার কোনো কথা শুনব না। তুমি একটা পচা দুষ্টু মেয়ে।
: চকলেট খাবি?
: না। দরকার নেই।
: চল পারলাটের বিলে ঘুরে আসি।
: না। তাও যাব না। লাভ কী? কদিন পরেই তো তুমি এক্কেবারে চলে যাবে।
: শোন তমাল, একদিন না একদিন সব মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি যেতে হয়। তুই এমন করলে এবার আমি সত্যি কাঁদব।
: কাঁদলেও তুমি চলে যাবে। হাসলেও চলে যাবে। তুমি কেন এমন হলে দিদি? তোমাকে ছাড়া আমার যে কিছুই ভালো লাগবে না।
: শোন, খুব দূরে তো নয়। হরিশপুর, এখান থেকে মাত্র কয়েক মাইল। তুই যখনই মন চাইবে, আমার কাছে চলে আসবি।
: তখন কি তুমি সব কাজকাম ফেলে আমার সঙ্গে ঘুড়ি ওড়াবে? গাছে উঠবে? আমাকে মিথ্যা সান্ত¡না দিচ্ছ তুমি।
: ঘুড়ি ওড়াতে না পারি। তোকে নিয়ে ঘুরতে তো পারব। তুইও দিদিকে দেখতে পেলি, আমিও তোকে দেখে প্রাণ জুড়ালাম।
এতক্ষণে কিছুটা স্বস্তি পেল তমাল। নিজেকে সান্ত¡না দিল মেয়েদের জীবনই তো এমন। ময়না পিসিও তো চলে গেছে। রানু দির বিয়ের পরও সমস্যা নেই। ইচ্ছা হলেই সাইকেলটা নিয়ে দিদিকে দেখে আসা যাবে। এই তো পাশের গ্রাম।
নির্দিষ্ট দিনে সানাই বাজল। বিয়ের পিঁড়িতে বসল রানু দিদি। তমাল দূর থেকে দিদিকে দেখে এলো। কী দারুণ দেখাচ্ছে দিদিকে! এত সুন্দর দেখাচ্ছে যে মন ভরে যায়। বিয়ের দিন একবারের জন্যও দিদির কাছে গেল না তমাল। শুধু পুকুর ঘাটে বসে কাঁদল।
বিয়ের রাতের পরের দিন। জামাই বাবু দিদিকে নিয়ে যখন চলে যাবে, ঠিক সেই মুহূর্তে দিদি বারবার চোখের জল ফেলে শুধু তমালের খোঁজ করে। কিন্তু কোথাও নেই তমাল।
বিশ্বজিৎ এসে খবর দিল- তমাল পুকুর ঘাটে।
দিদি-জামাই বাবু সেখানেই রওনা হলো। দিদিকে দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারল না তমাল। দিদিও কাঁদল অনেক। জামাই বাবু বলল- চলো তমাল। তোমাকে রেখে আমরা কোথাও যাব না। তৈরি হয়ে নাও।
খুশিতে চকচক করে উঠল তমালের মুখ। আনন্দে খানিকটা লাফিয়ে নিয়ে বলল- দিদিরে, আমি এক্ষুণি গুছিয়ে আসছি… বলেই ছুট লাগাল তমাল। দিদির জলে ভেজা চোখে খুশির রং ছড়াল।
– মিতুল সাইফ

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়