আব্দুল কুদ্দুস, কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) থেকে : মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার দক্ষিণাঞ্চলের বৃহৎ বিদ্যাপীঠ লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজ। কিন্তু দীর্ঘ ১৭ বছরেও ডিগ্রি কোর্স এমপিওভুক্ত হয়নি। এ কারণে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তবে থেমে নেই পাঠদান কার্যক্রম। আর্থিক সংকটে থেকেও শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদানে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের মধ্যে কোনো প্রকার অবহেলা দেখা যায়নি।
জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের রাউৎগাঁও, টিলাগাঁও, পৃথিমপাশা, কর্মধা, হাজীপুর ও শরীফপুর ইউনিয়নের শিক্ষাপ্রেমী লোকজনের সহযোগিতায় ১৯৯৮ সালে লংলা কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৬ সালে ডিগ্রি কোর্স চালু হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে উপজেলায় সেরা ফলাফল অর্জন করছে শিক্ষার্থীরা।
কলেজ সূত্র জানায়, শিক্ষকদের অক্লান্ত শ্রম আর বিলিয়ে দেয়া জ্ঞানে শিক্ষার্থীরা আলোকিত হলেও প্রতিষ্ঠানটির ডিগ্রি কোর্স এখনো এমপিওভুক্ত হয়নি। তবে প্রতি বছর প্রতিষ্ঠানটি সফলতার চমক দেখায়। এমনকি উপজেলার মধ্যেও সেরা অবস্থান। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি আজও। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। বর্তমানে ওই কলেজে প্রায় ২ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী রয়েছে।
শিক্ষকরা জানান, এই কলেজে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের কার্যক্রমের আওতায় ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর প্রদর্শনী, মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র ও ১৯৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা লিপিবদ্ধ করে ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে পাঠানো হয় এবং সেগুলো জাদুঘরে রক্ষিত আছে। এখানে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার রয়েছে। রয়েছে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের শাখা।
প্রতিবছর কলেজে ক্রীড়া ও সাহিত্য-সংস্কৃৃতি সপ্তাহ উদযাপন করা হয়। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সেরা পুরস্কার লাভ করে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া জাতীয় বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বিশেষ স্থান অর্জন করে শিক্ষার্থীরা। স¤প্রতি উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বঙ্গবন্ধু কুইজ প্রতিযোগিতায় কলেজ পর্যায়ে তিনটি পুরস্কারের মধ্যে প্রথম ও তৃতীয় স্থান অর্জন করে লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজ। ফুটবল প্রতিযোগিতায় উপজেলা পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে মৌলভীবাজার জেলায় রানার আপ শিরোপা অর্জন করেছে। কলেজটির ডিগ্রি কোর্স এমপিওভুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।
লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আতাউর রহমান জানান, দীর্ঘ ১৭ বছরে ডিগ্রি কোর্স এমপিওভুক্ত হয়নি। এতে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীরা অনাহারে-অর্ধাহারে জীবনযাপন করছেন।
যার ফলে শিক্ষার্থীদের যথাযথ পাঠদান করানো সম্ভব হচ্ছে না। এমপিওভুক্ত হলে জাতীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, শিক্ষাবান্ধব এই সরকারের আমলেই সারাদেশে সবচেয়ে বেশি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি হয়েছে। কুলাউড়া উপজেলার মধ্যে লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজ বৃহৎ একটি প্রতিষ্ঠান। ফলাফলেও প্রতিবছর প্রতিষ্ঠানটির অর্জন সন্তোষজনক। প্রতিষ্ঠানটির ডিগ্রি কোর্স এমপিওভুক্তি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।