রোড সেফটি ফাউন্ডেশন : জুলাই মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৭৩

আগের সংবাদ

শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত : ২০ বছর ধরে বিদ্যালয় ভবনে নৌপুলিশ ফাঁড়ির কার্যক্রম!

পরের সংবাদ

রঙিন তরমুজে লাভবান কৃষক

প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শেখ মাহতাব হোসেন, ডুমুরিয়া (খুলনা) থেকে : খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা স্বপন মল্লিক কৃষি খামারের মাচায় বাণিজ্যিকভাবে হলুদ তরমুজের চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। এটা মূলত ইউনাইটেডের সিড কোম্পানির তৃপ্তি জাতের হলুদ তরমুজ। গ্রীষ্মের রসালো ফল তরমুজ। এ গরমে তৃষ্ণা মেটাতে তরমুজের জুড়ি নেই। আছে অনেক স্বাস্থ্যগুণও। বিদেশি তৃপ্তি জাতের এ রসালো ফলটি বারোমাস চাষ করা যায়। তরমুজের রঙ বদলালেও স্বাদ বদলায়নি। বরং হলুদ রঙয়ের এ তরমুজ আরো মিষ্টি, আরো সুস্বাদু। যারা তরমুজ পছন্দ করেন তাদের কাছে নিঃসন্দেহে একটি ভালো খবর। বাণিজ্যিকভাবে উপজেলায় বারোমাসি তরমুজ চাষ হয়।
দুই জাতের একটি তরমুজের ভেতরে হলুদ বাইরে সবুজ। আর একটির ভেতরে রং লাল বাইরে দেখতে হলুদ। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার মাগুর খালী ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামে স্বপন মল্লিক, তিনি এ বছর বারোমাসী তরমুজ ইউনাইটেড সিড কোম্পানির তৃপ্তি হলুদ তরমুজের চাষ করেছেন।
স্বপ্নবাজ এ তরমুজ চাষি এবার তার মোট ১০০ শতক জমিতে ব্যতিক্রমী এই তরমুজের চাষ করেছেন। হলুদ তরমুজের আকর্ষণ বেশি। কদিন আগে এই তরমুজ কেটেছেন। বর্তমানে হলুদ ও লাল দুই রঙের তরমুজই পরিপক্ক হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে কিছু তরমুজ কেটে বাজারে বিক্রির জন্য দিয়েছেন। এক সপ্তাহের মধ্যেই লাল তরমুজগুলো কেটে ফেলবেন। আর হলদু তরমুজটা আরো ১০-১২ দিন পর কাটতে শুরু করবেন। তরমুজ ৭৫ দিনের ফসল। তাই বছরে ৩-৪ বার চাষ করা যায়। জানুয়ারি মাসে তরমুজের বীজ লাগিয়েছিলেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে ভোরের কাগজকে স্বপন মল্লিক বলেন, আমি ইউনাইটেডের অফিসার পলাশ কুমার মল্লিকের নিকট থেকে পরামর্শ নিয়ে ইউনাইটেড কোম্পানির তৃপ্তি হলুদ তরমুজ চাষ করি। প্রথমে মাচা তৈরি করতে হয়। এক বিঘা জমিতে এ তরমুজ চাষ করতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। আর বিক্রি করে পাওয়া যায় প্রায় দেড় লাখ টাকা। এক বিঘায় এ তরমুজের ফলন হয় ৬৫-৭০ মণ। আর পাইকারি বাজারে মণপ্রতি বিক্রি হয় দুই থেকে সর্বোচ্চ আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত।
তবে তরমুজের বাজারজাতকরণ নিয়ে সমস্যা রয়েছে। ফলে কাক্সিক্ষত ফলনেও উপযুক্ত দাম উঠছে না। খুলনার বাজারেই বিক্রি হচ্ছে স্বপন মল্লিকের রঙিন স্বপ্ন। পরিবহন সংকটে পাঠানো যাচ্ছে না রাজধানীতে। তাই খুলনা ও ডুমুরিয়ায় বাজারজাত করতে হচ্ছে। এতে খরচ বাদে পুঁজি উঠলেও আশানুরূপ লাভ হচ্ছে না। এরই মধ্যে কিছু তরমুজ কেটে বাজারে দিয়েছেন। এতেই বাজারের লাভ-ক্ষতির অবস্থা আঁচ করতে পারছেন।
জানা গেছে- ভেতরে লাল তরমুজ ১ হাজার ৬০০ টাকা মণ এবং হলুদ তরমুজ ২ হাজার টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বিক্রি করলেও প্রতি মণ তরমুজে ৪০০-৫০০ টাকা করে কম পাওয়া যাচ্ছে। এতে ফলন খরচ বাদ দিয়ে পুঁজি উঠে আসলেও আশানুরূপ লাভ হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে ডুমুরিয়া উপজেলার চন্ডিপুর ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুভাষ গাইন ভোরের কাগজকে বলেন, মালচিং পদ্ধতিতে এ তরমুজ চাষ করা হয়। বর্ষাকালীন তরমুজ চাষ করতে মাচা তৈরি করতে হয়। আর শীতকাল বা অন্য সময়ে মাটিতেই তরমুজ চাষ করা যায়। প্রথমবার মাচা তৈরি করলে সেই মাচা এক বছর ব্যবহার করা যাবে। দ্বিতীয়বারের উৎপাদন খরচ কম হবে। খুলনার ডুমুরিয়া তরমুজের চাষ শুরু করেছে। অন্যরাও ধীরে ধীরে এ তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
স্বপন মল্লিকের জমিতে ফলন ভালো হয়েছে। সারাবছরই বিশেষ এ জাতের তরমুজ চাষ করা যায়। তাই বাণিজ্যিকভাবে চাষের ব্যাপকতা সৃষ্টি হলে বারোমাসী তরমুজ কৃষকের জন্য লাভজনক হবে। তবে এবার বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় লাভ কম হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন উপসহকারী এ কৃষি কর্মকর্তা। ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. ইনসাদ ইবনে আমিন জানান, কৃষক স্বপন মল্লিক রঙিন তৃপ্তি হলুদ তরমুজের চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। কেউ রঙিন জাতের তরমুজ চাষ করতে আগ্রহী হলে আমরা সবধরনের সহযোগিতা করব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়