কাগজ প্রতিবেদক : পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত কয়েকদিন ধরে গ্রামের উদ্দেশে রাজধানী ছাড়ছে লাখ লাখ মানুষ। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর পথে পথে ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড় ছিল লক্ষণীয়। গতকাল সকাল থেকেই নগরীর শ্যামলী, আসাদগেট, মোহাম্মদপুর, সায়েন্সল্যাব, যাত্রাবাড়ী ও শাহবাগ ঘুরে দেখা গেছে- রাজধানীতে নগর পরিবহনের তীব্র সংকট। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও মিলছে না যাত্রীবাহী বাস। এতে শুধু ঘরমুখো মানুষই নয়, যারা ঢাকায় ঈদ করবেন, জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হয়েছেন, তারাও পড়েছেন চরম বিপাকে।
রাজধানীর শ্যামলীতে সকাল ৮টার দিকে দেখা যায়, সড়কের দুপাশেই জটলা পাকিয়ে অপেক্ষা করছেন লোকজন। যাত্রাবাড়ী রুটের একটি বাস এসে দাঁড়াতেই ওঠার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়লেন নারী-পুরুষসহ অনেকেই। তবে বাস আগে থেকেই কানায় কানায় পূর্ণ। উঠতে পারলেন কয়েকজনই। দরজায় বাদুরঝোলা হয়েও গন্তব্যের পথে ছুটলেন কয়েকজন। ভোগান্তির এখানেই শেষ নয়। প্রতিটা বাসেই নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। খানিকবাদে কিছুটা খালি ‘৮ নম্বর’ একটি বাস এসে দাঁড়ায়। তবে হেলপারের ডাকাডাকিতে স্তম্ভিত হতে হলো। তিনি বলছেন, গন্তব্য যেখানেই হোক, বাসে উঠলেই গুণতে হবে সর্বনি¤œ ১০০ টাকা। ১০ টাকার ভাড়া ১০০ টাকা কেন? জানতে চাইলে বাসের হেলপার বললেন, দেহেন কী অবস্থা, গাড়ি নাই তো। আর ঈদের আগে, তাই একটু বাড়ায়া নিতাছি।
একই চিত্র রাজধানী আসাদগেটে। সেখানেও শত শত মানুষকে গাড়ির জন্য অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। কিন্তু যাত্রীর তুলনায় পরিবহনের সংখ্যা নিতান্তই কম। কথা হয় মোহাম্মদপুর থেকে হেঁটে আসা যাত্রী ইমাম হোসেনের সঙ্গে। অন্যান্য দিন বসিলা থেকে মিরপুর হয়ে আব্দুল্লাহপুরগামী প্রজাপতি ও পরিস্থান নামের দুটি পরিবহনের বাস অন্তত প্রতি ৫ মিনিট পরপর পাওয়া যায়। সেখানে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করেও একটি বাস পাননি তিনি। অবশেষে অন্য রুটের একটি বাসে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত এসেছেন তিনি। সেখান থেকে হেঁটেই আসাদ গেট এসেছেন। কলাবাগানে তার গন্তব্য। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে বাস না পেয়ে আবার হাঁটা শুরু করলেন তিনি।
এদিকে গণপরিবহনের ঘাটতির সুযোগে দৌরাত্ম্য বেড়েছে সিএনজি অটোরিকশা ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের। শ্যামলী থেকে এক যাত্রী যাবেন স্কয়ার হাসপাতালে। বাস সংকট দেখে দামদর করছেন এক মোটরসাইকেল চালকের সঙ্গে। ওই বাইকার ভাড়া চাইছেন ২০০ টাকা। বাইকে নিয়মিত ভাড়া যেখানে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা। উপায় না পেয়ে হেঁটেই গন্তব্যে রওনা দিচ্ছেন অনেকেই। নগরে গাড়ি সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে লাব্বাইক পরিবহনের ড্রাইভার রায়হান বলেন, বেশিরভাগ গাড়ি রাজধানী থেকে চুক্তিতে যাত্রী নিয়ে দেশের বিভিন্ন রুটে গিয়েছেন। এ কারণে রাজধানীতে গাড়ি সংকট।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।