সংবাদ সম্মেলনে ছেলের দাবি : হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানকে ফাঁসানো হয়েছে

আগের সংবাদ

কুরবানি ঘিরে চাঙা অর্থনীতি : ৭০ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হওয়ার সম্ভাবনা, রেমিট্যান্স প্রবাহে রেকর্ড

পরের সংবাদ

বাংলাদেশে বাড়বে চাল উৎপাদন : এশিয়ায় চালের দাম দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ

প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : করোনা মহামারির ধাক্কা সামলে গতিশীল হচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতি। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশে দেশে বাড়ছে চালের চাহিদা। কিন্তু বহুমুখী প্রতিবন্ধকতার কারণে চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ভোক্তা দেশগুলোকে। বিশেষ করে আমদানিনির্ভর ও নি¤œ আয়ের দেশগুলো বেশি বিপাকে। বৈরী আবহাওয়ায় চালের সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ তীব্র আকার ধারণ করেছে। এর প্রভাবে এশিয়ার বাজারে অব্যাহত বাড়ছে চালের দাম। চলতি সপ্তাহে এ অঞ্চলের শীর্ষ দেশগুলোয় চালের রপ্তানি মূল্য বেড়ে দুই বছরের সর্বোচ্চ পর্যায়ে।
এদিকে জাতিসংঘের গেøাবাল ফুড আউটলুক শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩-২৪ বিপণন মৌসুমে বাংলাদেশে চাল উৎপাদন গত বছরের তুলনায় ১ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়তে পারে। উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৩ কোটি ৮৯ লাখ টনে।
তথ্য মতে- চলতি সপ্তাহে ভিয়েতনাম ৫ শতাংশ ভাঙা চাল টনপ্রতি ৪৯৫-৫০৫ ডলার মূল্যে রপ্তানি করছে। ২০২১ সালের এপ্রিলের পর এটিই সর্বোচ্চ দাম। গত সপ্তাহে দেশটি এ জাতের প্রতি টন চাল রপ্তানি করেছিল ৪৯৮ ডলার মূল্যে। হো চি মিন সিটিভিত্তিক ব্যবসায়ীরা জানান, সরবরাহ সংকটে ভিয়েতনামের স্থানীয় বাজারে অব্যাহত বাড়ছে চালের দাম। এ কারণে রপ্তানিকারকরা তাড়াহুড়ো করে চাল রপ্তানি করছেন। উদ্দেশ্য দাম আরো বাড়ার আগে রপ্তানি চুক্তি অনুযায়ী সরবরাহ সম্পন্ন করা। বৈরী আবহাওয়ায় গ্রীষ্ম ও শরৎকালীন উৎপাদনও এবার প্রত্যাশা অনুযায়ী বাড়বে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। শুল্ক বিভাগের তথ্য বলছে, ভিয়েতনাম জুনের প্রথমার্ধে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৭৯৮ টন চাল রপ্তানি করেছে। বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত রপ্তানি করা হয়েছে ৩৯ লাখ টন। বার্ষিক চাল রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভিয়েতনাম। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটি রপ্তানির পরিমাণ ৪০ লাখ টনে নামিয়ে আনবে, যা বর্তমান সময়ের তুলনায় অন্তত ৪৪ শতাংশ কম। স¤প্রতি এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে দেশটির সরকার তথ্যটি নিশ্চিত করে।
ভিয়েতনাম বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ চাল রপ্তানিকারক। ভারত ও থাইল্যান্ডের পরই দেশটির অবস্থান। গত বছরও দেশটি ৭১ লাখ টন চাল রপ্তানি করেছে। তবে আগামী বছরগুলোয় রপ্তানি এর চেয়ে অনেক কমিয়ে আনা হবে। উদ্দেশ্য স্থানীয় খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা। পাশাপাশি উচ্চমানসম্পন্ন চাল রপ্তানি বাড়ানো।
এদিকে থাইল্যান্ড চলতি সপ্তাহে প্রতি টন ৫ শতাংশ ভাঙা চাল ৫০৫ ডলারে রপ্তানি করছে। দেশটির চালের দামও দুই বছরের সর্বোচ্চে। গত সপ্তাহে রপ্তানি করা হয়েছিল ৪৯৫ ডলারে।
ব্যাংককভিত্তিক ব্যবসায়ীরা জানান, রপ্তানিকারকরা পর্যাপ্ত সরবরাহ পেতে হিমশিম খাচ্ছেন। বাজারে এখনো নতুন চাল ঢোকেনি। ফলে রপ্তানিকারকরা ঠিক সময়ের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন করতে পারছেন না। স্থানীয় বাজারে দাম বাড়ায় রপ্তানি মূল্য আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জানুয়ারি-মে পর্যন্ত পাঁচ মাসে থাইল্যান্ড ৩৪ লাখ ৭০ হাজার টন চাল রপ্তানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। বৈদেশিক বাজারে উচ্চ চাহিদা ও থাই মুদ্রা বাথের মূল্যমান দুর্বল হয়ে যাওয়ায় রপ্তানি বেড়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
রয়টার্সের প্রকাশিত খবরে বলা হয়, আগের বছরের তুলনায় শুধু মে মাসে চাল রপ্তানি ৮৮ শতাংশ বেড়ে প্রায় ৮ লাখ ৮৫ হাজার টন হয়েছে। ২০২৩ সালে মোট রপ্তানি ৮০ লাখ টনে গিয়ে ঠেকতে পারে। ফলে রপ্তানির পরিমাণ মন্ত্রণালয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশ্ব ও এশিয়ার শীর্স চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত। চলতি সপ্তাহে দেশটি প্রতি টন ভাঙা সেদ্ধ চাল ৩৯৭-৪০৫ ডলারে রপ্তানি করছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর এটিই সর্বোচ্চ রপ্তানি। গত সপ্তাহে রপ্তানি মূল্য ছিল ৩৯০-৩৯৮ ডলার। ভারতে ধানের দাম বাড়ছে। এ কারণে রপ্তানিকারকরা চালের রপ্তানি বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি মাসে ভারতের মুদ্রা রুপির বিনিময় মূল্য বেড়েছে।
ফলে চালের ওপর আরো ঊর্ধ্বমুখী চাপ তৈরি হয়েছে। ভারত সরকার স¤প্রতি কৃষকদের থেকে ধান ও চাল সংগ্রহের ঘোষণা দিয়েছে। এক্ষেত্রে ধান-চালের দাম আগের তুলনায় ৭ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়