ইসলামী আন্দোলন : নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের রূপরেখা ঘোষণা

আগের সংবাদ

কুরবানির পশুর দাম বেশি যে কারণে > আফতাবনগর হাট : এখনো জমেনি হাট গরুও উঠেছে কম

পরের সংবাদ

বিদ্রোহের পর প্রিগোশিন ও তার ওয়াগনার বাহিনী এখন কী করবে?

প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : রাশিয়ার ভাড়াটে সৈন্যদের বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের বিদ্রোহ মোকাবিলায় মস্কোতে যেসব জরুরি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল, বিদ্রোহ অবসানের কয়েক ঘণ্টা পরেও রাজধানীতে সেসব ব্যবস্থা বহাল রাখা হয়েছে। ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিনের নেতৃত্বে এই বিদ্রোহকে রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিবিসি
এই গ্রুপের যোদ্ধারা গত শনিবার ইউক্রেন সীমান্ত পার হয়ে রাশিয়ার ভেতরে ঢুকে দক্ষিণের বড় একটি শহর রোস্তভ অন ডন দখল করে নেয়ার পর রাজধানীর দিকে অগ্রসর হতে থাকলে মস্কোতে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জারি করা হয়।
মস্কোয় কর্মকর্তারা বলছেন, বিদ্রোহ অবসানের পরেও লোকজনকে নিরাপত্তাজনিত কারণে সোমবার কাজে যোগ না দিতে বলা হয়েছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ পরিচালনা নিয়ে রুশ বাহিনীর সঙ্গে ওয়াগনার গ্রুপের উত্তেজনা শুধু বাড়ছিল। প্রিগোশিন সা¤প্রতিক মাসগুলোয় রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা শুরু করেছিলেন।
প্রেসিডেন্ট পুতিনের কড়া হুঁশিয়ারির পর ওয়াগনারপ্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন তার বাহিনীর মস্কোর অভিমুখে অগ্রসর হওয়ার পরিকল্পনা বাতিল ঘোষণা করেন। পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে প্রিগোশিনের বৈঠকে কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা শ্বাসরুদ্ধকর এই বিদ্রোহ অবসানের ব্যাপারে সমঝোতা হয়। তবে এই সমঝোতায় অনেক প্রশ্নেরই উত্তর নেই।
এরপরই শনিবার সন্ধ্যায় পিগ্রোশিন তার সৈন্যদের রাশিয়া ছেড়ে ঘাঁটিতে ফিরে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন। সমঝোতা অনুসারে প্রিগোশিন নিজেও চলে যাবেন প্রতিবেশী বেলারুশে। সমঝোতার পর ভিডিওতে দেখা যায়, ওয়াগনার সৈন্যরা রোস্তোভ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। তাদের সমর্থকরা উল্লাস করছে এবং ওয়াগনার সেনাদের সঙ্গে তারা হাত মেলাচ্ছেন।
এর বিনিময়ে ক্রেমলিন বলেছে, প্রিগোশিন ও তার সৈন্যদের বিরুদ্ধে যেসব আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল সেগুলো প্রত্যাহার করা হবে।
পুতিনের প্রেস সেক্রেটারি দিমিত্রি পেসকভ বলেন, প্রিগোশিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করা হবে এবং তার ও তার সৈন্যদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করে নেয়া হবে। আর ওয়াগনারের যেসব যোদ্ধা বিদ্রোহে অংশ নিতে রাজি হয়নি, এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ইউনিটও আছে, তাদের রুশ প্রতিরক্ষা বাহিনীতে যোগ দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হবে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ওয়াগনারের কোনো ভাড়াটে সৈন্য চুক্তি করতে চাইলে তারা এখনো তা করতে পারবে বলে জানিয়েছেন পেসকভ।
প্রিগোশিন এখন কোথায়?
শনিবার সন্ধ্যায় হওয়া সমঝোতা অনুযায়ী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিনের বেলারুশে চলে যাওয়ার কথা থাকলেও তিনি এখন কোথায় অবস্থান করছেন সেটা পরিষ্কার নয়। প্রিগোশিন যে বেলারুশে চলে যাবেন এই খবর শুধুমাত্র ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভের মুখ থেকেই শোনা গেছে।
কিন্তু শনিবার সন্ধ্যায় তাকে শেষবারের মতো দেখা গিয়েছিল। তিনি একটি গাড়িতে ছিলেন। এ সময় তিনি উৎফুল্ল কিছু লোকজনের সঙ্গে করমর্দন করছিলেন। এরপর প্রিগোশিনের কাছ থেকে কিছু শোনা যায়নি। তাকে কোথাও দেখাও যায়নি। তার টেলিগ্রাম চ্যানেলেও এ বিষয়ে নতুন কিছু পোস্ট করা হয়নি।
তাহলে প্রিগোশিনের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে? বিবিসির একজন সাংবাদিক বলছেন, সমঝোতা যে প্রিগোশিনের পক্ষে গেছে তা বলা যাবে না। কারণ ক্রেমলিনের কথা যদি সত্য হয়, তাহলে এর অর্থ হচ্ছে তাকে বেলারুশে নির্বাসনে পাঠানো হচ্ছে।
রাশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বর্তমানে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ। ওই এলাকাটিকে নো-ফ্লাই জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তার মানে রোস্তভ শহরের সবচেয়ে কাছের বিমানবন্দর হচ্ছে ভলগোগ্রাদ এবং সোচি। কিন্তু এই দুটো বিমানবন্দরই প্রায় ২৫০ মাইল দূরে।
বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, প্রিগোশিন গাড়িতে কিংবা ট্রেনে করে বেলারুশে যেতে পারেন। কিন্তু সেই পথ হবে অনেক দীর্ঘ, কারণ তাকে ইউক্রেনের বাইরে দিয়ে যেতে হবে।
প্রশ্ন হচ্ছে এই বিদ্রোহের পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন এখন কী করবেন? বিবিসির রুশ বিভাগের সাংবাদিক ওলগা ইভশিনা বলছেন, অবশ্যই তিনি তার শক্তি প্রদর্শন করবেন যা তিনি আগেও করেছেন।
তিনি বলছেন এ ঘটনার পর রাশিয়ার ভেতরে অভ্যন্তরীণ স্বাধীনতা খর্ব হতে পারে। টেলিগ্রাম চ্যানেলসহ সংবাদমাধ্যমের ওপর আরো নিয়ন্ত্রণ আরোপেরও আশঙ্কা রয়েছে।
ওয়াগনার যোদ্ধারা কী করবে?
সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ওয়াগনার যোদ্ধারা রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় রোস্তভ শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছে। বিদ্রোহের শুরুতে তারা এই শহরের সামরিক ঘাঁটিগুলো দখল করে নিয়েছিল।
একপর্যায়ে তারা রোস্তভ ও মস্কোর মধ্যবর্তী একটি শহর ভরোনেঝও দখল করে নেয়। এখন এই অঞ্চলের গভর্নর জানাচ্ছেন যে ওয়াগনার বাহিনী সেখান থেকেও চলে যাচ্ছে।
তিনি বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতির অবসান ঘটলেই চলাচলের ওপর যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল সেগুলো প্রত্যাহার করে নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়