ফেনী প্রতিনিধি : ফেনীর দাগনভূঞার রাজাপুরে পুকুরে চুবিয়ে জান্নাতুল আরিফা আক্তার (৯) নামে এক শিশুকে হত্যা করেছেন বাবা। গতকাল রবিবার দুপুরে ঘাতক বাবা টিপু মিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজুদৌলার আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ৬৪ ধারায় বক্তব্য দিয়েছেন। গত শনিবার রাতে পুলিশ এ ঘটনায় বাবা টিপু মিয়াকে (৩৭) আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার রহস্য বের হয়ে আসে।
গত ১৮ জুন টিপু তার মেয়ে আরিফাকে নিজের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে আসেন। ২১ জুন বিকালে বাড়ির পাশে পুকুরে গোসল করানোর কথা বলে নিজ মেয়ে আরিফাকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেন টিপু। পরে আরিফাকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে এলাকায় মাইকিং ও নানা প্রচারণা চালান স্বজনরা। একপর্যায়ে পুকুরে আরিফার মরদেহ ভেসে ওঠার পর প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যে সন্দেহ হয় পুলিশের। এ সময় মরদেহ ময়নাতদন্তে দিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার টিপু মিয়া দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের জয় নারায়ণপুর গ্রামের কবির আহমেদের ছেলে। তিনি পেশায় অটোরিকশার চালক।
মামলার এজাহার ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে পারিবারিক কলহের জের ধরে টিপু মিয়ার সঙ্গে তার স্ত্রী রোমানা আক্তারের বিচ্ছেদ ঘটে। ওই সময় জান্নাতুল আরিফা আক্তারের বয়স ছিল ৯ মাস। পরে টিপু মিয়া আবার বিয়ে করলে সেখানে আরো ২ মেয়ের জন্ম হয়। প্রথম সংসারের মেয়ের ভরণপোষণ ও দ্বিতীয় সংসারের ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন স্বল্প আয়ের টিপু মিয়া।
দাগনভূঞা থানার ওসি হাসান ইমাম জানান, ঘটনার পর আরিফার বাবা আত্মগোপনে চলে যান। শনিবার রাতে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি মেয়ের ভরণপোষণ দেয়া থেকে বাঁচতে নিজ হাতে মেয়েকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেন বলে জানান।
এ ঘটনায় নিহত আরিফার মা রোমানা আক্তার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। গতকাল রবিবার বিকালে ঘাতক বাবা টিপু মিয়াকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।