প্রিপেইড মিটার স্থাপনে আর্থিক লেনদেন না করার আহ্বান

আগের সংবাদ

হাটে পর্যাপ্ত গরু, দাম চড়া : কেনাবেচা আজ থেকে > শর্ত মানছেন না ইজারাদার > ট্রাক নিয়ে টানাটানি

পরের সংবাদ

কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ : ট্যানারি মালিকরা পাবেন ২৬০ কোটি টাকা

প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : আসন্ন ঈদুল আজহায় কাঁচা চামড়া সংরক্ষণে ট্যানারি মালিকরা ২৫৯ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ পাবেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যদিও নির্ধারিত এ ঋণের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় ১৮৪ কোটি টাকা কম। ১২টি সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এ ঋণ বিতরণ করা হবে। চলতি বছরের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঋণ দেবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংক ২৫ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংক ১০০ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংক ৩৫ কোটি এবং অগ্রণী ব্যাংক ৮০ কোটি টাকা দেবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, কুরবানির ঈদে চামড়া সংগ্রহের জন্য ট্যানারি শিল্পের অনুকূলে ৫০০ কোটি টাকা ঋণ সংস্থানের ব্যবস্থা করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছেন ট্যানারি মালিকরা। শিল্পমালিকরাও বলছেন, কাঁচা চামড়া কেনা ও ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে ঋণ সহায়তা প্রয়োজন। প্রতি বছর কুরবানি ঈদের সময় ঋণের ব্যবস্থা করতে সরকারের নীতি সহায়তা চান উদ্যোক্তারা। ট্যানারি শিল্প উদ্যোক্তাদের পূর্বের ঋণের বড় একটি অংশই খেলাপি থাকায় ব্যাংকগুলো সহজে ঋণ দিতে চায় না, যে কারণে ঋণ পেতে সরকারের সহায়তায় চান তারা।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশনের (বিটিএ) চেয়ারম্যান মো. শাহীন আহমেদ বলেন, চামড়া একটি পচনশীল পণ্য, যা দ্রুত সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হয়। সারাদেশ থেকে বিভিন্ন আড়তের মাধ্যমে সংগৃহীত চামড়া কিনতে হয়, যার জন্য নগদ টাকা প্রয়োজন হয় কারণ মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনে আড়তে বিক্রি করে। তিনি আরো বলেন, ট্যানারি মালিকরা নিজস্ব ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল দিয়ে ব্যবসা করলেও কুরবানির সময় বেশি নগদ অর্থের প্রয়োজন হয়, যা নিজস্ব ফান্ড থেকে ম্যানেজ করা সম্ভব হয় না। বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশন (বিটিএ) চামড়া খাতের উদ্যোক্তাদের শীর্ষ সংস্থা। এই খাতের শিল্প মালিকরা সারাদেশ থেকে আড়তের মাধ্যমে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাত করে থাকেন। প্রক্রিয়াকরণের পর উদ্যোক্তারা কেউ কেউ চামড়া শিল্পের সংযোগ শিল্পে বিক্রি করে ও কেউ কেউ আবার বিদেশে রপ্তানি করে।
এদিকে বিটিএ সূত্রে জানা গেছে- ট্যানারি মালিক ও বাণিজ্যিক রপ্তানিকারক মিলিয়ে সংগঠনটিতে বর্তমান প্রায় ৮০০ সদস্য রয়েছেন। সারাদেশে ১৮৬৬টি বৃহৎ ও মাঝারি আড়ত রয়েছে। এর বাইরেও ছোট আকারে অনেক আড়ত রয়েছে, যারা মৌসুমী উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে ঈদুল আজহার সময় চামড়া সংগ্রহ করে। আড়তদাররা মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চামড়া সংগ্রহের পর নিজেরাই লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করে, পরবর্তী সময়ে বড় ট্যানারির কাছে বিক্রি করে। রাজধানীর পোস্তা, নাটোরের রেলওয়ে বাজার, যশোরের রাজারহাট, গাইবান্ধার পলাশবাড়ি, রংপুরের তারাগঞ্জ, নওগা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, আমিনবাজার ও টঙ্গী-গাজীপুরের আড়তসমূহে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও মজুদ করা হয়। ব্যবসায়ীরা বলেন, বৈদেশিক মুদ্রা আয়, জাতীয় প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও মূল্য সংযোজনের নিরিখে সম্ভাবনাময় খাত চামড়াশিল্প। এই শিল্পের সিংহভাগ কাঁচা চামড়া সংগৃহীত হয় ঈদুল আজহায়। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে প্রতি বছর প্রায় ৩০ শতাংশ চামড়া নষ্ট হয়।
জানা গেছে- স¤প্রতি আবারো চামড়া রপ্তানি বাড়ছে, এর ফলে আগামীতে সম্ভাবনা দেখছেন উদ্যোক্তারা। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের এগারো মাসে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় ১১২০ মিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১১১৫ মিলিয়ন ডলার।
জানা গেছে- ২০১৭ সালে উচ্চ আদালতের রায়ে রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে ট্যানারিগুলোকে সাভার চামড়া শিল্প নগরীতে স্থানান্তর করা হয়। কমপ্লায়েন্স ইস্যু ও স্থানান্তরের কারণে চামড়া রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, ফলে রপ্তানি কমে যায়।
শিল্পের উদ্যোক্তারা জানান, দীর্ঘদিন পর চামড়া রপ্তানি বৃদ্ধিপেয়েছে, বিদেশি ক্রেতাদের চাহিদাও এখন বেশ ভালো। তবে রপ্তানি বাড়াতে আরো সহায়তা দরকার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়