যাত্রী কল্যাণ সমিতি : ২৭ জুন সরকারি ছুটি ঘোষণার দাবি

আগের সংবাদ

রাজশাহীতে নজীরবিহীন নিরাপত্তা

পরের সংবাদ

দুর্গম চরে ১১২ কোটি টাকার গরু বেচাকেনার সম্ভাবনা

প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে : আর মাত্র কয়েক দিন পরই মুসলিমদের দ্বিতীয় প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদ। এ কুরবানির ঈদ সামনে রেখে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার সোনাতনী ইউনিয়নের দুর্গম চরের বিভিন্ন গ্রামে ছোট ছোট খামারে দেশি ও বিদেশি জাতের প্রায় ৮ হাজার ষাঁড় গরু মোটাতাজা করেছে খামারিরা। যার আনুমানিক বিক্রয় মূল্য প্রায় ১১২ কোটি টাকা। দেশীয় ও প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছেন তারা। স্থানীয় পশুর হাটগুলোর পাশাপাশি এগুলো রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার কুরবানির পশুর হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে যাবেন তারা। তাই বাড়তি লাভের আশায় খামারের পাশাপাশি বাড়িতে বাড়িতে পশুর বাড়তি যতœ আর লালন পালন করেছেন খামারি ও প্রান্তিক কৃষকরা।
বিভিন্ন বাড়ি ও খামারে তারা স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগে দেশি ও বিদেশি জাতের ফ্রিজিয়ান, শাহীওয়াল, দেশি শংকর, অস্ট্রেলিয়ান, জার্সিসহ বিভিন্ন জাতের ষাঁড় বাছুর ক্রয় করে হৃষ্টপুষ্ট করছেন। মাত্র ৬-৮ মাসে এঁড়ে বাছুর লালন পালন করে কুরবানির ঈদের গরুর হাটে বিক্রি করে সব খরচ বাদ দিয়েও বিনিয়োগের চেয়ে বেশি অর্থ আয় করতে পারবেন বলে খামারিরা আশা প্রকাশ করেছেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে- সোনাতনী ইউনিয়নের দুর্গম চর- বানতিয়ার, কুরসী, ধিতপুর, ছোট চানতারা, বড় চানতারাসহ বিভিন্ন গ্রামে প্রতিটি বাড়িতেই ২ থেকে ৫টি হৃষ্টপুষ্ট গরু রয়েছে। কুরসী গ্রামের একদিন মজুরের স্ত্রী রহিমা খাতুন ভোরের কাগজকে জানান- আমার থাকার জন্য আটখানা টিনের একটা ছাপড়া ঘর আছে। ওখানেই ৪টি ছেলেমেয়ে নিয়ে কোনো রকম মাথা গুঁজে বসবাস করছি। এ বছর ২টি ষাঁড় গরু লালনপালন করেছি। মাঠের কাঁচাঘাস আর সামান্য কিছু দানাদার খাদ্য খাওয়ায়ে গরু দুটি বড় করেছি। আল্লাহ যদি ভালোভাবে বিক্রি করতে দেয় তাহলে প্রায় ৪ লাখ টাকা বেচতে পারব। একটা গরু বিক্রির টাকা দিয়ে ২টি এঁড়ে বাছুর কিনে আগামী কুরবানির সিজনে বড় বানাইয়া বেচব। আর একটার টাকা দিয়ে একটা ভালো করে ঘর বানিয়ে ছেলেমেয়ে নিয়ে থাকব।
জানা গেছে- এই দুর্গম চরে রহিমার মতো অনেকেই ষাঁড় গরু লালনপালন করে মুনাফার টাকা দিয়ে পূরণ করতে চলেছেন নানা স্বপ্ন। দুর্গম চরের মানুষগুলো ফসলের মাঠে কৃষিকাজ বা বাড়ির অন্যান্য কাজের পাশাপাশি ষাঁড় গরু হৃষ্টপুষ্ট করে অতি অল্প সময়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে ছোলা, সবুজ ঘাস, খৈল, ভূসি, চিটা গুড়, ছোলা, গম, মসুর, কালাই, খেসারি, জব, ভুট্টা খাওয়ায়ে ষাঁড় গরু লালনপালন করছেন তারা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. বিল্লাল হোসেন ভোরের কাগজকে জানান, আসন্ন কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার সোনাতনী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ছোট ছোট গো-খামারে দেশি ও বিদেশি জাতের প্রায় ৮ হাজার ষাঁড় গরু হৃষ্টপুষ্ট করেছেন গো-খামারিরা। যার আনুমানিক বিক্রয় মূল্য প্রায় ১১২ কোটি টাকা। আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে ষাঁড় হৃষ্টপুষ্ট করার কাজে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে খামারিদের প্রশিক্ষণ দেয়ার পাশাপাশি চিকিৎসা সেবা প্রদান করার মাধ্যমে তাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়