কাগজ প্রতিবেদক : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, কুরবানির পশুবাহী কোনো যানবাহন জোর করে থামানো যাবে না। এমনকি সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও যানবাহন থামাতে পারবে না। কেউ এসব যানবাহন থামালে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপারকে জানাতে হবে। সুবিধার জন্য পশুবাহী গাড়িগুলো কোন হাটে যেতে চায় সেই তথ্য যানবাহনের সামনের ব্যানারে লিখে রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সড়ক ছাড়াও নদী পথে আসা পশুবাহী নৌযানের সামনেও ব্যানার রাখতে হবে। গতকাল রবিবার সচিবালয়ে কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় এসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সভা শেষে তিনি বলেন, এবার সারা দেশে ৪ হাজার ধ৩৯৯টি পশুর হাট বসবে বলে আমাদের কাছে এ পর্যন্ত খবর এসেছে। এসব হাটে নিরাপত্তা দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। মন্ত্রী বলেন, কুরবানির পশু ঠিকমতো যাতে শহরে ঢুকতে পারে ও পরিবহন যাতে সুন্দর হয় এজন্য গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড় ও বড় জায়গার পশুর হাটে ওয়াচ টাওয়ার বসানো হবে। পশুর হাটগুলো সিসি ক্যামেরায় ঢাকা থাকবে। সীমান্তের দুর্গম এলাকা দিয়ে মিয়ানমার থেকে কিছু পশু দেশে ঢুকছে বলেও জানান তিনি। সড়ক-মহাসড়কে কোনো প্রকার হাট যাতে না বসে সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী এলাকায় পশুর হাট বসলে তা যেন কোনোক্রমেই যেন মহাসড়কের ভেতর না আসতে পারে, সেজন্য ওই হাটের কর্মকর্তাদের ব্যবস্থা নিতে হবে বলে। এ সময় পশুর হাটে হাসিলের তালিকা দৃশ্যমান রাখার নির্দেশনার কথাও বলেন তিনি।
পশুর হাটে জাল নোট শনাক্তকরণ মেশিন ও এটিএম বুথ থাকবে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, বাস, লঞ্চ টার্মিনাল, রেল স্টেশন ও ফেরিঘাটে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সতর্ক অবস্থায় থাকবে। মলম ও অজ্ঞানপার্টি যাতে কোনো কার্যক্রম করতে না পারে সেজন্য গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর থাকবে। পশুর হাটে ভেটেরিনারি চিকিৎসক থাকবেন। এছাড়াও ঈদের ছুটিতে সারা দেশে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ রোধে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হবে। র‌্যাবের টহল থাকবে।
ঈদযাত্রায় দেশজুড়ে ২৪টি স্থানকে যানজট ঝুঁকিপূর্ণ স্থান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, এই স্থানগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিরাপদ ঈদযাত্রার জন্য হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সমন্বয় করে কাজ করবে। ফায়ার সার্ভিস ও অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাও থাকবে। যানজট নিরসনে মহাসড়ক, সড়ক ও শহর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ও মোড়ে হাইওয়ে পুলিশ বা ব্যাটেলিয়ন আনসার থাকবে।

যানজটপ্রবণ স্থানে ওয়াচ টাওয়ার থেকে পর্যবেক্ষণ করে যানজট নিরসন করা হবে।
নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে নৌযানে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ফেরি ঘাটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লক্ষ্য রাখবে। লঞ্চের ধারণ ক্ষমতার বাইরে কাউকে উঠতে দেয়া হবে না। এজন্য লঞ্চ মালিকদের অনুরোধ করা হবে তারা যেন লঞ্চের ধারণ ক্ষমতা লিখে রাখেন। এছাড়াও পোশাক শ্রমিকদের জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন ও ঈদ বোনাস ছুটির আগেই দিতে কারখানার মালিকদের বলা হয়েছে। যানজট নিরসনে পোশাক কারখানায় পর্যায়ক্রমে ছুটি দেবেন বলে মালিকরা সম্মত হয়েছেন। ঈদের জামাতেও নিরাপত্তা দেয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, করোনা এখনো যায়নি। এজন্য আমরা বলেছি, স্বাস্থ্যবিধি যথাসম্ভব মেনে চলতে। ঈদযাত্রায় যানবাহনের ভাড়া যাতে না বাড়ানো হয় সে বিষয়েও মনিটরিং করা হবে।