কাগজ প্রতিবেদক : বোন ও নানিকে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সৎ ভাইয়ের বিরুদ্ধে। গতকাল রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে গাজীপুর জয়দেবপুর সিঁড়িরচালা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। দগ্ধরা হলেন- হাজী নুরুল ইসলাম মডেল একাডেমির সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার আয়েশা (১৩) ও তার নানি বেবি বেগম (৫৫)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুজনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
দগ্ধ সানজিদার বাবা শফিকুর রহমান শফিক জানান, প্রথম স্ত্রী অর্থাৎ সানজিদার মা ইভা ইসলাম ২০১৩ সালে মারা যান। এরপর ২০১৫ সালে তিনি মনিরা বেগম নামে অন্য এক নারীকে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর সংসারেও দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। দ্বিতীয় বিয়ের পর কিছুদিন ভালো গেলেও পরবর্তিতে মনিরার দুই ছেলেই খারাপ পথে চলে যায়। সেজন্য দুই ছেলেকে তার বাড়ি থেকে চলে যেতে বলেন তিনি। সবশেষ গত মাসে দ্বিতীয় স্ত্রী মনিরাও তাকে ছেড়ে চলে যান। পরে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দেন। তবে চলে যাওয়ার সময় তার বাসা থেকে ৯ লাখ টাকার পৃথক ৪টি চেক চুরি করে নিয়ে যান। সেই ঘটনায় শফিক একটি মামলা করেন। এরপর থেকেই মনিরার ছেলে শুভ তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়। গত বৃহস্পতিবার সানজিদা স্কুল থেকে একাই বাসায় ফেরার পথে শুভসহ ৩ জন মিলে সানজিদাকে হুমকি দেন। তারা বলেন, তোর বাবারে বলবি, আমার মায়ের নামের মামলা উঠিয়ে নিতে। না হইলে তোরে তুলে নিয়ে মেরে ফেলব। এই ঘটনার পরই গত শুক্রবার জয়দেবপুর ধানায় তিনি একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তার জের ধরে গতকাল নানিসহ মেয়ে স্কুল থেকে ফেরার পথে শুভ পরিকল্পিতভাবে তার সহযোগীদের নিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এই ঘটনার কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন শফিক।
স্বজনরা জানান, বেবি বেগমের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায়। সপ্তাহখানেক আগে নাতনি সানজিদাকে দেখতে গাজীপুর এসেছিলেন তিনি। বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, সানজিদা শরীরে ৫২ শতাংশ ও বেবির শরীরের ৫০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাদের দুজনেই শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সানজিদাকে আইসিইউতে আর বেবিকে ফিমেল এইচডিইউতে ভর্তি রাখা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।