জিএম কাদের : স্বাধীনতার ৫০ বছরেও দেশে সাংবাদিকতা অনিরাপদ

আগের সংবাদ

রাজশাহীতে লিটনকে টেক্কা দেয়ার মতো প্রতিদ্ব›দ্বী নেই

পরের সংবাদ

ঢাকা-জয়দেবপুর রেললাইন নির্মাণে বাধা উড়ালসড়ক

প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ঢাকা থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ লাইন আটকে রয়েছে উড়ালসড়ক কাজের কারণে। রেললাইনের উপর দিয়ে উড়ালসড়ক নির্মাণকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত রেললাইনের কাজে হাত দেয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ঢাকা-টঙ্গী সেকশনের তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনের ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণকাজের মেয়াদ ও ব্যয় বেড়েই চলেছে। যে রেলপথ ৩ বছরে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল, সেখানে সময় লাগছে ১৫ বছর। নির্মাণাধীন এই রেলপথের ঠিক উপর দিয়েই হচ্ছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (উড়ালসড়ক)। এ কারণে তেজগাঁও ও বনানী রেলস্টেশনের উন্নয়নকাজ শুরুই হয়নি। এছাড়া টেলিকমিউনিকেশনসহ সাত স্টেশনের কম্পিউটারবেজড ইন্টারলকিং সিগন্যালিং সিস্টেম কেনার প্রস্তাবও অনুমোদন হয়নি বলে জানা গেছে।
রেলের প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, উড়ালসড়কের কাজের ফলে দুর্ঘটনার ভয়ে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুরের কাজ থমকে আছে। উড়ালসড়কের কাজ শেষ হওয়ার পর রেলপথ নির্মাণকাজ আবার শুরু হবে।
প্রকল্প প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়া জানান, ঢাকা-টঙ্গী সেকশন রেলপথের উপর দিয়ে ঢাকা উড়ালসড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। উপরে উড়ালসড়ক ও নিচে রেলপথ নির্মাণ করা হলে যে কোনো সময় উড়ালসড়কের নির্মাণসামগ্রী পড়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেজন্যই মূলত রেলপথ নির্মাণকাজের মেয়াদ আরো বাড়ানো হচ্ছে। উড়ালসড়ক নির্মাণের পরই আমরা এয়ারপোর্ট থেকে কমলাপুর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণকাজ শুরু করতে পারব।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্প আবারো সংশোধন করা হয়েছে। বারবার সংশোধনের ফলে বেড়েছে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয়। মূল অনুমোদিত প্রকল্পের ব্যয় ছিল ৮৪৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধিত প্রস্তাবে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ১০৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সংশোধিত প্রস্তাবে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৩৪২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে ভারতীয় ঋণ ২ হাজার ৮২১ কোটি ১৬ লাখ টাকা। বাকি অর্থ সরকারি কোষাগার থেকে মেটানো হবে। তৃতীয় দফায় ব্যয় ব্যতিরেকে সময় বাড়ানো হয়। এখন আবারো মেয়াদ বাড়ছে। মূল অনুমোদিত প্রকল্পটি জুলাই ২০১২ থেকে জুন ২০১৫ মেয়াদে অনুমোদন হয়। পরে সেটি চার ধাপে মেয়াদ বেড়ে জুন ২০২৭ পর্যন্ত করা হচ্ছে।
প্রকল্পের আওতায় ১০৭ দশমিক ৯৪ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ মেইন লাইন নির্মাণ বা পুনর্নির্মাণ, দুটি মেজর সেতু এবং ২২টি মাইনর সেতু/কালভার্ট নির্মাণ, তেজগাঁও, বনানী, টঙ্গী ও ধীরাশ্রম স্টেশন ভবন পুনর্নির্মাণ এবং ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন ভার্টিকালি বর্ধিত করা হবে। ১৪টি প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ/পুনর্নির্মাণ এবং চারটি প্ল্যাটফর্ম বর্ধিত করা, ৯টি প্ল্যাটফর্ম শেড নির্মাণ/পুনর্নির্মাণ ও তিনটি প্ল্যাটফর্ম শেড বর্ধিত করা, অ্যাপ্রোচ সড়ক, ড্রেন, অফিস ও আবাসিক ভবন নির্মাণ/পুনর্নির্মাণ এবং আনুষঙ্গিক কাজ করা হচ্ছে। এক্সেস কন্ট্রোল ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লাইটিংসহ রেলভূমির সীমানা প্রাচীর বেড়া নির্মাণ, টেলিকমিউনিকেশনসহ সাতটি স্টেশনে কম্পিউটারবেজড ইন্টারলকিং (সিবিআই) সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপন ও সিটিসির সঙ্গে ইন্টারফেসিং, ৩৭টি লেভেলক্রসিং গেটে সিগন্যাল ওয়ার্নিং সিস্টেম স্থাপন এবং ডিজাইন, দরপত্র সেবা, কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন এবং ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ডে পরামর্শক সেবা দেয়া হচ্ছে। ব্রিজ, ট্র্যাক ও মাটির কাজে, সিগন্যালিং কাজের ব্যয় বাড়ানো, পরামর্শক সেবা খাতের ব্যয় বাড়ানো এবং পৃথক একটি পরামর্শক সেবা প্যাকেজ অন্তর্ভুক্তি ও প্রকল্পের মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, ঢাকা-টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ৩৩ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার লুপলাইনসহ ১১৬ কিলোমিটার ও চারটি স্টেশন পুনর্নির্মাণ প্রকল্পে খরচ মোট ১ হাজার ১০৬ কোটি টাকা। এছাড়া রয়েছে দুটি ব্রিজ, ২২টি কালভার্ট, ১৮টি প্ল্যাটফর্ম, ১১টি প্ল্যাটফর্ম শেড ও সাতটি ফুটওভার ব্রিজ। গত জানুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ছিল প্রায় ৬৮ শতাংশ। মোট ৫৫ কিলোমিটার এমব্যাংকমেন্টের মধ্যে ৪৪ কিলোমিটার নির্মিত হয়েছে। ৯৬ কিলোমিটার ট্র্যাকের মধ্যে নির্মাণ হয়েছে ১৭ দশমিক ৬৭ কিলোমিটার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়