পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় : সবাই সার্বভৌমত্বকে সম্মান দেখাবে- এই প্রত্যাশা বাংলাদেশের

আগের সংবাদ

মেয়র প্রার্থীদের প্রতিশ্রæতির ফুলঝুরি : ‘পরিকল্পিত সিলেটে’ প্রাধান্য

পরের সংবাদ

স্মরণসভায় বক্তারা : সরদার ফজলুল করিমের চর্চা বাড়াতে হবে

প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঢাবি প্রতিনিধি : বিশিষ্ট দার্শনিক, শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দর্শন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সরদার ফজলুল করিমের চর্চা সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়ে তাকে চেতনায় জাগ্রত রাখতে হবে। আর এই চর্চা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাড়ানো দরকার। গত বৃহস্পতিবার বিকাল চার টায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইসফেনদিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তনে সরদার ফজলুল করিমের নবম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে সরদার ফজলুল করিম স্মৃতি পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত এক স্মরণসভায় এ আহ্বান জানান বিশিষ্টজনরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদারের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, সাবেক সচিব একেএম আব্দুল আওয়াল মজুমদার, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কাজী মোহাম্মদ শিষ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নিবেদিতা রায় ও শরীফ নূরজাহান এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মো. মাসুদুর রহমানসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ থেকে আসা তরুণ শিক্ষার্থীরা এবং সরদার ফজলুল করিমের লেখার পাঠক ও শুভাকাক্সক্ষীরা। এ সময় বাঁশির সুরে সরদার ফজলুল করিমকে স্মরণ করেন এস এম মকবুল হোসেন।
মফিদুল হক বলেন, সরদার ফজলুল করিম বাঙালি মধ্যবিত্তের বিকাশ দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনে তিনি জড়িত ছিলেন। এই মানুষটার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসকে বিশাল মাত্রায় খুঁজে পেতে পারি। তিনি ছিলেন ইতিহাসের বাতিঘর।
তিনি আরো বলেন, সরদার ফজলুল করিমের মতো এত তীব্রভাবে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ রাজনীতি কাউকে করতে দেখা যায় না। কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তী সময়ে কমিউনিস্ট পার্টি সশস্ত্র বিপ্লবী হলেও তিনি সেদিকে যাননি। তার জীবনী থেকে বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যায়।
ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, সরদার ফজলুল করিম মানবতাকে ধর্ম হিসেবে মনে করেছেন এবং সে লক্ষ্যেই কাজ করেছেন। আজকে মানবতার বিকাশ ও দর্শন বিষয়ে জানা দরকার। আর এ জন্য সরদার ফজলুল করিম চর্চা জরুরি। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে চর্চা বাড়ানো দরকার। অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার বলেন, পাকিস্তান আমল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জাতীয় জীবনের প্রতিটি সংকটময় মুহূর্তে যথার্থ বুদ্ধিজীবীর দায়িত্ব পালন করেছেন অধ্যাপক সরদার ফজলুল করিম।
আব্দুল আওয়াল মজুমদার বলেন, গর্ব করে বলি, আমি সরদার ফজলুল করিমের ছাত্র। সরকারি চাকরিজীবীদের প্রতি মানুষের নেতিবাচক ধারণা আছে। কিন্তু আমি সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে চাকরি করেছি। কারণ সরদার ফজলুল করিম স্যারের আদর্শ আমাকে বিনয়ী, সাদামাটা জীবন, সৎ, চরিত্রবান, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ করেছে। স্মৃতি রোমন্থন করে কাজী মোহাম্মদ শিষ তার বক্তব্যে বলেন, সরদার ভাইয়ের লেখা যতটুকু পড়েছি। তার সবই প্রথমে মগজে বাসা বেঁধেছে, পরে তা হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে। শিল্পে-সাহিত্যেও সরদার ভাইয়ের অস্তিত্ব খুঁজে পাই।
সরদার ফজলুল করিমের বইগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে স্মরণসভায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাসুদুর রহমান বলেন, আমি স্যারের অনেকগুলো বই পড়েছি। বই পড়ার পরে তার জীবনকে পর্যালোচনা করে যা বুঝেছি, এখন থেকে ১০০ বছর আগে গ্রাম থেকে ঢাকা শহরে আসা। আবার ঢাকায় এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা করা ও ভালো ফলাফল করা সবগুলোতেই তার তীব্র বাসনা লক্ষ্য করা যায়। তিনি আজীবন সমাজের জন্য কাজ করে গেছেন। এই সমাজের জন্য কাজ করতে গিয়ে তিনি স্বেচ্ছায় শিক্ষকতা পেশাকে ইস্তফা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, সরদার ফজলুল করিম ২০১৪ সালের ১৫ জুন ৮৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়