পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় : সবাই সার্বভৌমত্বকে সম্মান দেখাবে- এই প্রত্যাশা বাংলাদেশের

আগের সংবাদ

মেয়র প্রার্থীদের প্রতিশ্রæতির ফুলঝুরি : ‘পরিকল্পিত সিলেটে’ প্রাধান্য

পরের সংবাদ

মশা নিধনে চসিককে চিঠি স্বাস্থ্য বিভাগের : চট্টগ্রামে বাড়ছে ডেঙ্গুরোগী

প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামে আবারো মশাবাহিত রোগ ‘ডেঙ্গু’তে আক্রান্তের হার দ্রুত বাড়ছে। বছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে ডেঙ্গু চট্টগ্রামে নতুন ‘আপদ’ হিসেবে দেখা দিয়েছে। একদিনে নতুন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে ২২ জন, যা চলতি বছরে একদিনে শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যায় রেকর্ড। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দৈনিক রোগী ভর্তি বাড়লেও চিহ্নিত না হওয়া অনেক রোগী থেকে যাচ্ছেন হিসাবের বাইরে।
এদিকে, হঠাৎ করে ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা বাড়ায় উদ্বিগ্ন খোদ স্বাস্থ্য বিভাগ। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন। পাশাপাশি ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়ে মশা নিধনে তৎপর হওয়ার জন্য সিটি করপোরেশনকে চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি। গত ৪ জুন নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে মশা নিধনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বিশেষ ক্রাশ প্রোগ্রাম শুরু করলেও এ নিয়ে নগরবাসীর রয়েছে নানা অভিযোগ। নগরীর চকবাজার এলাকার বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বলেন, সিটি করপোরেশনের স্প্রে ম্যানকে মশার ওষুধ ছিটাতে দেখা যায় না। তারা কোনো রকম দায়সারা ভাবে ওষুধ স্প্রে করে চলে যায়। নিয়মিত স্প্রে না করার কারণে নগরীতে মশার উৎপাত বেড়েছে। কয়েল জ্বালিয়েও মশা তাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।’ তবে সিটি করপোরেশনের ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহী বলেন, ‘বর্তমানে মশা নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম অব্যাহত আছে। নগরীর অলি-গলি ও আবাসিক এলাকায় ওষুধ ছিটানো হচ্ছে।
অন্যদিকে, চলতি বছর ডেঙ্গুর সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বর্ষা মৌসুম হওয়ায় সামনের দিনগুলোতে রোগীর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের। তাই ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে বাঁচতে সাধারণ মানুষকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ চিকিৎসকদের। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ২৬১ জন। একই সময়ে গেল বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় ২৫ জন। চলতি বছর জানুয়ারিতে ৭৭, ফেব্রুয়ারিতে ২২, মার্চে ১২, এপ্রিলে ১৮, মে মাসে ৫৩ ও জুনের ১৫ দিনে আক্রান্ত হয়েছে ৭৯ জন। এ সময় মারা গেছে ৪ জন। আক্রান্তদের মধ্যে নগরীতে ১৭৫ ও উপজেলায় ৮৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৩১, মহিলা ৫৮ ও শিশু ৭২ জন। উপজেলা পর্যায়ে সীতাকুণ্ডে ৪৩, আনোয়ারা, বাঁশখালী, মিরসরাই ও সাতকানিয়ায় ৫, রাউজান, হাটহাজারী ও কর্ণফুলীতে ৪, স›দ্বীপে ৩, লোহাগাড়া, পটিয়া ও রাঙ্গুনিয়ায় ২ জন করে এবং চন্দনাইশ ও বোয়ালখালীতে ১ জন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে ২০২০ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ১৭ জন, ২০২১ সালে ২৭১ জন আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি মারা গেছে ৫ জন।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ‘ডেঙ্গু হচ্ছে মশাবাহিত রোগ। ডেঙ্গু কমাতে হলে মশা নিধন করতে হবে। গত বছরের চেয়ে এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেক বেশি। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অবহিত করা হয়েছে। মশা নিধন জোরদার করা না হলে এবার ডেঙ্গু পরিস্থিতি অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি ভয়াবহ হতে পারে। মশা নিধনের জন্য ইতোমধ্যে সিটি করপোরেশনকে চিঠি দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে।’ চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবদুর রব মাসুম বলেন, বর্ষাকাল এলেই ডেঙ্গু রোগের জীবাণুবাহী এডিস মশার উৎপাত বাড়ে। এ সময় এই মশার দংশনে আক্রান্ত হয়ে ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পায়। তাই বৃষ্টি হলেও বাসা-বাড়িসহ চারপাশের আঙ্গিনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানাতে হবে। তিনি বলেন, ডেঙ্গুর কয়েকটি ভেরিয়েন্ট আছে। দ্বিতীয় দফায় ভিন্ন ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত হলে বিপদ। তখন মারাত্মক সমস্যা হতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়