প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকদের আন্দোলন দুদিন স্থগিত : প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার আশ্বাস বিএসএমএমইউ উপাচার্যের

আগের সংবাদ

আনন্দে পাঠ উৎসবে মূল্যায়ন : ষষ্ঠ ও সপ্তমে চলছে ‘ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন উৎসব’, ঈদুল আজহার পর মূল্যায়নের বিশ্লেষণ

পরের সংবাদ

সংবাদ সম্মেলনে মহিলা পরিষদ : জেন্ডার বাজেট বাস্তবায়নে নিবিড় পরীবিক্ষণের দাবি

প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জেন্ডার বাজেট নিয়ে আরো কাজ করার আছে। নারী-পুরুষের বৈষম্য চিহ্নিত করে বরাদ্দকৃত বাজেট কীভাবে তা দূর করবে, তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বে নারীকে কীভাবে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা হবে, নারীর প্রতি সহিংসতা দূর করতে, প্রচলিত বৈষম্যমূলক রীতিনীতি দূর করতে বাজেট কী ভূমিকা রাখছে- এসব প্রেক্ষিতকে বিবেচনায় রেখে জেন্ডার সংবেদনশীল বাজেট বাস্তবায়ন ও মনিটরিং মেকানিজম তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। জেন্ডার বাজেট বাস্তবায়নকালে নিবিড়ভাবে পরীবিক্ষণ এবং এর আলোকে প্রয়োজনীয় করনীয় নির্ধারণের জন্য জোর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের জেন্ডার সংবেদনশীলতাবিষয়ক প্রতিক্রিয়া তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে জেন্ডার সংবেদনশীলতা বিশ্লেষণ ও সংগঠনের প্রতিক্রিয়া উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা। মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজেট বিশ্লেষণে যে ১৬টি ইন্ডিকেটর ব্যবহার করা হয় তার বিচার বিশ্লেষণে জেন্ডার লেন্স কতটা ব্যবহার করা হচ্ছে তা দেখার আছে।? জেন্ডার বাজেট বিচার বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে সঠিক জেন্ডার লেন্স ও জেন্ডার সংবেদনশীলতার ইন্ডিকেটরসমূহ ব্যবহার করতে হবে।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ বাড়ানো ও এই মন্ত্রণালয়কে ঢেলে সাজানো, অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় জোরদার করা, নারীদের জন্য সরাসরি কাজ করা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ বাড়ানো, এসব মন্ত্রণালয়ের কাজের পরিধি বাড়ানো, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, খাদ্য, জনপ্রশাসন এবং সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জেন্ডারবান্ধব প্রকল্প কতগুলো এবং প্রকল্পগুলো কতটা জেন্ডার সংবেদনশীল তা দেখা।
মূল বক্তব্যে বলা হয়, জেন্ডার নিয়ে কথা বলার সময় এসডিজি, নারী উন্নয়ন নীতিমালা, ৮ম পঞ্চম বার্ষিকী পরিকল্পনাকে বিবেচনায় নিতে হবে। জেন্ডার বাজেট প্রণয়নের ১ মাস আগে প্রতিটি প্রকল্পের সঠিক পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন করতে হবে। ১৬টি ইন্ডিকেটরের উৎকর্ষ সাধনের জন্য গুণগতভাবেও পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন করতে হবে। জেন্ডার বৈষম্যমূলক রীতিনীতি দূরের জন্য কাজ করতে নীতি সহায়তার পাশাপাশি বরাদ্দ থাকা দরকার। বাল্যবিয়ে, নিরাপত্তার অভাব, অপ্রদর্শিত কাজ- এখানে নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে বড় ধরনের কাজ করার সুযোগ আছে, সেই এজেন্ডা বাজেটে আনতে হবে। পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়নের ও সমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পরবর্তী বাজেটে আরো সুনির্দিষ্ট কিছু প্রকল্প নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।
ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন, সমতা প্রতিষ্ঠা, বৈষম্য দূরের জন্য দরকার শক্তিশালী নারী আন্দোলন। নারী আন্দোলনের কারণে জেন্ডার বাজেট এসেছে। সামাজিক রীতিনীতি এখনো জেন্ডারবান্ধব নয়, জেন্ডার বাজেট হলেও তা নারীর ক্ষমতায়নকে তরান্বিত করতে পারছে না। যেসব প্রকল্প নারীদের উন্নয়নে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে সেগুলোর জন্য বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
তিনি আরো বলেন, জেন্ডার বাজেটের আলোকে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও মানুষের জীবনমানের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। বাজেটের মানদণ্ডে কন্যাশিশুর বাল্যবিয়ে, ঝরেপড়া রোধের দিকে গুরুত্ব দেয়া হয়নি।
নারীর সমতা প্রতিষ্ঠিত কতটুকু হয়েছে তা নির্ধারিত মানদণ্ডের বাইরে যেয়ে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। নারীর মর্যাদাবিষয়ক কমিশন করতে হবে। নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে সবার বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করা জরুরি। সমাজের মৌলিক পরিবর্তনের দিকে জোর দিতে হবে। জেন্ডার সমতা আনতে জেন্ডার ইকুয়িটি ও ইকুয়ালিটির প্রতি জোর দিতে হবে। বাজেটকে জেন্ডার সংবেদনশীল করার প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রকে পরিবর্তন করতে হবে। নারীর গৃহকর্মের মূল্যায়ন ও সম্পত্তিতে অধিকার নিশ্চিতের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে আরো কাজ করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়