প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকদের আন্দোলন দুদিন স্থগিত : প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার আশ্বাস বিএসএমএমইউ উপাচার্যের

আগের সংবাদ

আনন্দে পাঠ উৎসবে মূল্যায়ন : ষষ্ঠ ও সপ্তমে চলছে ‘ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন উৎসব’, ঈদুল আজহার পর মূল্যায়নের বিশ্লেষণ

পরের সংবাদ

গ্রেপ্তার ১০ : ২২ কোটি টাকার জাল স্ট্যাম্প উদ্ধার

প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প শনাক্ত করার কাজটি বেশ দুরূহ। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার এড়ানো সহজ হবে এমন ধারণা থেকেই নকল স্ট্যাম্প তৈরি কাজ শুরু করেন এ চক্রের প্রধান মো. সোহেল কাজী (৩১)। প্রথমে জাল টাকা বানানোর কথা ভাবলেও পরে প্রতি মাসে ২-৫০০ টাকা মূল্যের ৮-১০ রিম কাগজের জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প তৈরি করা শুরু করে চক্রটি। মূলত অসৎ কিছু ভেন্ডার ও ছাপাখানা মালিকদের সহায়তায় এ কাজটি করে যাচ্ছিল তারা। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন ভেন্ডারদের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের ধরতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে র‌্যাব। অবৈধ জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প তৈরি চক্রের অন্যতম হোতা সোহেল কাজীসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান র?্যাব মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওরান বাজারের র?্যাব মিডিয়া সেন্টারের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র?্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক ও মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আমরা জানতে পারি যে এমন একটি চক্র করোনার পর থেকে জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি তৈরি করে আসছে।
ফলে সাধারণ মানুষ প্রতারিত হওয়াসহ সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল সরকার। এরই প্রেক্ষিতে র‌্যাব প্রতারক চক্রকে আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। একপর্যায়ে গত মঙ্গলবার সাভার আশুলিয়া ও মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ চক্রের অন্যতম হোতা সোহেল কাজীসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে। অন্যরা হলেন- মো. জাহাঙ্গীর আলম ওরফে জাহিদ (৪০), মো. সোহেল রানা (৩৫), মো. সাব্বির হোসেন (২২), মোছা. সাবিনা ইয়াছমিন (৩০), মোছা. শাহনাজ আক্তার (৩১), কামরুল হাসান (২৬), মো. সুমন (২২), বিল্টু (১৯) ও সেন্টু মিয়া।
এ সময় র‌্যাব ২২ কোটি টাকার বেশি মূল্যমানের অবৈধ জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প, এসব তৈরির মেশিন ও বিপুল পরিমাণ অন্যান্য সরঞ্জামাদিও উদ্ধার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে কমান্ডার মঈন বলেন, চক্রটি মূলত সোহেল কাজীর মাধ্যমে পরিচালিত হতো। অবৈধ জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প তৈরি ও বিক্রিতে অন্যরা সোহেল কাজীর সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন।
সোহেল আগে বিভিন্ন প্রিন্টিং প্রেসে চাকরির সুবাদে বিভিন্ন রেভিনিউ স্ট্যাম্প তৈরির কাজ রপ্ত করে নেন। জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প চিহ্নিতকরণ সহজ না হওয়ায় ও বেশি মুনাফা লাভের আশায় তিনি নিজ ব্যবস্থাপনায় এসব তৈরি ও বিক্রয়ের পরিকল্পনা করেন। আশুলিয়ার কনফিডেন্স প্রিন্টিং প্রেসের মালিক ও অন্যান্য কর্মচারীদের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র ধরে এ ছাপাখানায় জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প ছাপার কাজ শুরু করেন। ওই প্রেসে তার জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প মুদ্রণের কাজে নিয়োজিত ছিলেন গ্রেপ্তার সাব্বির, সুমন, কামরুল সেন্টু ও বিল্টু।

তিনি আরো বলেন, জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প মুদ্রণের পর পারফেক্ট মেশিনের মাধ্যমে কাটিং ও ছিদ্রকরণ করা হত। পরবর্তী সময়ে গ্রেপ্তারকৃত জাহাঙ্গীরের মাধ্যমে রাজধানীর উত্তরা, বনানী, গুলশান, সাভার ও টঙ্গীসহ দেশের বিভিন্ন আদালতে কোর্ট ফি এবং জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প সরবরাহ করা হত। বিভিন্ন সময় স্ট্যাম্প সরবরাহ করার সুবাদে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প তৈরি করতে পারে এমন অনেক ব্যক্তির পরিচয় হয় যারা তারা সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করেন। এভাবে তারা ১০-১৫ জনের একটি চক্র গড়ে তোলেন। এছাড়াও তার সঙ্গে বিভিন্ন অনুমোদিত ভেন্ডারদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় তিনি তাদের কাছে কম মূল্যে জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি সরবরাহ করতেন। ভেন্ডাররা এসব জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করতেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়