সংসদে বিল উত্থাপন : আমানত সুরক্ষা ট্রাস্ট তহবিল গঠন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক

আগের সংবাদ

খুলনা-বরিশালে ‘উন্নয়ন’ ম্যাজিক : খুলনার উন্নয়ন ভাবনা ও ব্যক্তি ইমেজেই খালেকের বাজিমাত

পরের সংবাদ

গ্যাস ও বিদ্যুতের কারণে দাম বেড়েছে চিনির : জাতীয় সংসদে প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২৫ থেকে ২৭ লাখ মেট্রিক টন, তারপরেও বর্তমানে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই। তবে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বাড়ার কারণে স্থানীয় বাজারে চিনির দাম বেড়েছে। গতকাল সোমবার জাতীয় পার্টির হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সংসদকে এ তথ্য জানানা। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। গতকাল প্রশ্ন উত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
টিপু মুনশি বলেন, দেশে চিনির বার্ষিক চাহিদা ২০-২২ লাখ মেট্রিক টন এবং পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা ২৫-২৭ লাখ মেট্রিক টন। চিনি ও পেঁয়াজের উৎপাদন প্রায় ২১ হাজার মেট্রিক টন ও ২৮ দশমিক ১১ লাখ মেট্রিক টন (প্রকৃত উৎপাদন প্রায় ৩৭.৪৯ লাখ মেট্রিক টন। তার মধ্যে প্রক্রিয়াজাত ক্ষতি বাদ দিয়ে অবশিষ্ট থাকে ২৮ দশমিক ১১ লাখ মেট্রিক টন)। চিনির দেশীয় উৎপাদন অতি নগন্য হওয়ায় প্রায় ৯৯ শতাংশ চিনি আমদানি করে পূরণ করা হয়।
তিনি বলেন, দেশ বর্তমানে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই। তবে, আমদানি উন্মুক্ত না থাকলে স্থানীয় সরবরাহে চাপ সৃষ্টি হওয়ায় স্থানীয় মূল্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হয়। আমদানি উন্মুক্ত থাকলে ২০ শতাংশ পেয়াজ আমদানি করা হয়ে থাকে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৭ মে পর্যন্ত চিনি আমদানির এলসি ওপেনের পরিমাণ ১৬ দশমিক ৬৭ লাখ মে. টন এবং পেয়াজ আমদানির পরিমাণ ৫ দশমিক ৬৩ লাখ মে. টন। আন্তজার্তিক বাজারে চিনির মূল্য গত ৩ মাসে প্রতি মে. টন প্রায় ১৬০ ডলার বেড়েছে। এছাড়া আমদানির ব্যয় নির্ধারণে ব্যবহৃত বৈদেশিক মুদ্রা ডলারের মূল্য গত ১ বছরে প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। অপরিশোধিত চিনি পরিশোধনে ব্যবহৃত কেমিক্যালের মূল্যও বেড়েছে। গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বাড়ার কারণে স্থানীয় বাজারে চিনির মূল্য বেড়েছে।
তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে পেঁয়াজ উৎপাদন হলেও আংশিক আমদানি নির্ভরতা রয়েছে। আমদানি নির্ভরতা থাকায় পেঁয়াজের আমদানি মূল্য স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের মূল্য নির্ধারণে প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পেঁয়াজের মূল্যকে সুরক্ষা দেবার জন্য সরকার পেঁয়াজ আমদানির জন্য ‘ইমপোর্ট পারমিট’ ইস্যু করা সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে। ভারতে এ বছর পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো হওয়ায় পেঁয়াজের মূল্য অনেকাংশে কম। এদিকে স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় মূল্য স্থিতিশীল রাখার কারণে ইমপোর্ট পারমিট ইস্যুর বিষয়টি বিবেচনার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
নুরুন্নবী চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী সংসদকে জানান, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে জুলাই-এপ্রিল সময়ে অর্থাৎ গত ১০ মাসে নিটওয়্যার ওভেন, তৈরী পোশাক, হোম টেক্সটাইল, ফুটওয়্যার খাত, হিমায়িত খাদ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য (৭টি খাতে) রপ্তানি করে মোট ৪ লাখ ১৩ হাজার ৩৯০ কোটি ৫ লাখ টাকা বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে।
মন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, নিটওয়্যার তৈরি পোশাক রপ্তানি করে আয় হয়েছে ২ লাখ ৬ হাজার ৯১ কোটি ৮২ লাখ টাকা, ওভেন তৈরি পোশাক থেকে ১৭ লাখ ৩০ হাজার ৮৬৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা, হোম টেক্সটাইল থেকে ৯ হাজার ২৪৭ কোটি ১২ লাখ টাকা, ফুটওয়ার খাত থেকে ৩ হাজার ৮৪৪ কোটি ১২ লাখ, হিমায়িত খাদ্য থেকে ৩ হাজার ৬৫১ কোটি ২৮ লাখ টাকা, পাটজাত পণ্য থেকে ৭ হাজার ৫৭৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা এবং চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছে ৯ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এ সময়ে এসব পণ্য রপ্তানি করে মোট বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে ৪ লাখ ১৩ হাজার ৩৯০ কোটি ৫ লাখ টাকা।
তিনি বলেন, গত ২০০৯-২০১০ অর্থবছর থেকে ২০২১-২০২২ অর্থবছর পর্যন্ত ১৩ বছরে দেশের রপ্তানি আয়ে গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৬৩ শতাংশ। ২০০৯-১০ অর্থবছরে রপ্তানি আয় ছিল ১৬ হাজার ২০৪ দশমিক ৬৫ মিলিয়র ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার ৯৭১ দশমিক ২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর ২০০৯-১০ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ১১ শতাংশ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ দশমিক ৪০ শতাংশ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়