নম্বর জালিয়াতির অভিযোগ : নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে হাইকোর্টে তলব

আগের সংবাদ

ভোটের হাওয়া কোন দিকে? বরিশালে চার প্রার্থীর মধ্যে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস

পরের সংবাদ

সাহিত্যের ভুবনে মগ্ন সাধক

প্রকাশিত: জুন ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আমাদের অহংকার, আমাদের গৌরব- বাংলা সাহিত্যের ভুবনে একজন মেধাসমৃদ্ধ লেখক কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। তার পুরোটা অবয়বজুড়ে চাঁদের আলোর স্নিগ্ধতা। মেধা-মননে সূর্য আলোর প্রখরতা। সূ², নিপুণ, পরিশ্রমী, মেধাদীপ্ত তার কলম সংসার। পাঠক শ্রেণি বিমুগ্ধতায় তার গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, শিশু-কিশোর লেখালেখির জগতে বিচরণ করেন। তুলে নিতে পারেন মুক্ত-মানিক খচিত অমূল্য সাহিত্যের শব্দভাণ্ডার। মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি, সমাজ, ইতিহাস, ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলোচ্ছ¡াস, দুই দেশের সীমানায় জমে থাকা অসন্তোষ ছিটমহলের মানুষের পীড়ন, সবকিছুই তার লেখনিতে উঠে আসে সাবলীলভাবে। তাই তো ওনার পাঠকপ্রিয়তা শীর্ষে।
কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন আপার লেখার সঙ্গে পরিচয় সেই কৈশোর থেকে। কিন্তু তাকে দেখার সৌভাগ্য হয় ২০০১ সালে। এত বড় মাপের একজন লেখক আপাদমস্তক যার কেবল জ্ঞান প্রজ্ঞা মননের দ্যুতি, তার সামনে দাঁড়িয়ে মনে হয়েছে এতটাই সহজ-সরল শিশুর মতো। এতই অমায়িক তার ব্যবহার। সেটা ছিল ২০০৪ সালের কথা। আমার গল্পের বই ‘হলদে পাতার গুঞ্জন’ বইটি নিয়ে আপার রুমে ঢুকলাম বাংলা একাডেমির প্রথম তলায় সেই পুরাতন বিল্ডিংটিতেই। আপা আমাকে দেখে হাসিমুখে বসতে বললেন, কী কাজ জানতে চাইলেন। সেটা ছিল ফেব্রুয়ারি মাস বইমেলার সময়। আপা আমার এই বইটির মোড়ক উন্মোচন করতে হবে আপনাকে। আপা হাত বাড়িয়ে বইটা নিলেন। পৃষ্ঠা উল্টিয়ে কয়েক পাতা চোখ বুলিয়ে নিলেন। কিছু উঁচু আওয়াজেই একটি গল্প থেকে কয়েকটা লাইনও পাঠ করলেন। বললেন, বাহ ভালোই হয়েছে। সেটা ছিল মুক্তিযুদ্ধের গল্প। পাকিস্তানি বাহিনীর সৈন্যের উর্দু উচ্চারণের কথনের লাইন। বললেন কয়টায় সময় দিয়েছি। বললাম ৫টায় আপা। যথারীতি তিনি উপস্থিত। আমি বিমোহিত, বিস্মিত তার ব্যবহারে। সে কথা কোনো দিনও ভুলব না। মনের মণিকোঠায় ওনার কথাগুলো গেঁথে রাখলাম। আপা আপনার স্নেহে ধন্য আমরা, আমাদের পথ চলার পাথেয় আপনি। এরপর থেকে অনেকবারই আপার সঙ্গে দেখা হয়েছে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, বইমেলায়, বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে। কত ছবি তোলা হয়েছে আপার সঙ্গে। দেখা হলে এতটাই অমায়িকভাবে কথা বলেন শ্রদ্ধেয় আপা, ভীষণ অবাক লাগে। এমনই আটপৌরে সহজ-সরল মানুষ তিনি। সবার সঙ্গেই তিনি মিশেন এভাবেই। কিন্তু যখন কোনো বিষয়ভিত্তিক আলোচনা বা বক্তব্য তিনি দেন। আমরা তার মুগ্ধ শ্রোতা হয়ে যাই। এতটাই জ্ঞানগর্ভ একেবারে শিকড় থেকে উত্থিত সাবলীল অনর্গল বলে যেতে পারেন। আমরা যখন তার গল্প উপন্যাস পড়ি তখন ডুবে যাই তার সেই লেখার মধ্যে। এমনি আকর্ষণ করার মতো ক্ষমতা তার লিখনির।
শক্তিমান সৃষ্টিশীল লেখক তিনি, নবরূপ নতুনকে ধারণ করেই তার লেখার জগত। তাই তার লেখায় একঘেয়েমি নেই। প্রতিটা বিষয়বস্তু নতুনকে চিনিয়ে দেয়। ভাষায়ও নেই ছন্দপতন। সাহিত্যের গভীরে তার উপস্থিতি শ্রম মেধা প্রজ্ঞা জ্ঞান দিয়েই তিনি সাধনা করে উত্তরণ ঘটিয়েছেন। ওনার জনপ্রিয়তা পাঠকপ্রিয়তা তুঙ্গে। তিনি যে কেবল বাংলাদেশের বিশিষ্ট লেখক তা কিন্তু নয়। তিনি সমভাবে ভারতেও সমাদৃত। তার লেখা গল্প-উপন্যাসের চাহিদা তেমনিভাবে ভারতেও। রবীন্দ্রভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘যাপিত-জীবন’ ও ‘নীল ময়ূরের যৌবন’ উপন্যাস পাঠ্য, ‘নিরন্তর ঘণ্টাধ্বনি’ ও ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’ উপন্যাস যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ পত্রে পাঠ্য। আরো বিভিন্ন কলেজে ওনার গল্পগুলো পাঠ্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উইমেন ও জেন্ডার স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টে ‘কালকেতু ও ফুল্লরা’ উপন্যাস পাঠ্য।
সুন্দর কর্মময় জীবনে কেবল কথার পিঠে কথা গেঁথে যাওয়াই নয়, লেখার মধ্যে তত্ত্ব-উপাত্ত ঢেলে নিরন্তর অনবদ্য শিল্পসমৃদ্ধ নবীনতর সাধনায় মগ্ন হয়েই ওনার লেখার উত্তরণ ঘটিয়েছেন। গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, শিশু ও কিশোর লেখায় সর্বত্রই তার ক্ষুরধার মেধার জানান দিয়ে চলেছেন। তাই তিনি সমকালের লেখক। অতীতেও যেমন লিখেছেন উচ্চমার্গের লেখা বর্তমানেও তার চাইতে কম নয়। কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন আপা তার সৃষ্টিশীল কর্মকাণ্ডের তাড়নায় নিত্যই নবরূপ সৃষ্টি করে চলেছেন সাহিত্য ভাণ্ডারে বিবিধ রতন। অতি সাধারণ বিষয় তার ক্ষুরধার মেধা মননের সৃষ্টিতে হয়ে ওঠে অনন্য। ওনার অনবদ্য লেখনির গুণেই আজো সমভাবে সমাদৃত বোদ্ধা পাঠকের কাছে। কেবল বোদ্ধা পাঠকই নয়, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, শিশু-কিশোর থেকে বয়োবৃদ্ধ সবাই তার পাঠক। তিনি তার কাজের সারা জীবনের সাধনার মূল্যায়নও পেয়েছে প্রচুর, তারও চেয়ে বেশি পেয়েছেন আমাদের ভালোবাসা। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সম্মাননা ও পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাহিত্য সাধনার স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লিটারেচার’ উপাধি, ফাউন্ডেশন অব সার্ক রাইটারস এন্ড লিটারেচার এবং গভর্নিং কাউন্সিলে সার্ক দেশসমূহের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত সদস্য তিনি। পেয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক, রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার, মোহাম্মদ এনামুল হক স্বর্ণপদক, আলাউল সাহিত্য পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক শিশু সাহিত্য পুরস্কার, আরো অনেক অনেক সম্মাননা এবং পুরস্কারে তিনি ভূষিত হয়েছেন।
তার প্রতিটি গল্প-উপন্যাসই পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। যেমন জলোচ্ছ¡াস, হাঙর নদী গ্রেনেড, গায়ত্রী সন্ধ্যা- এক, দুই, তিন, কালকেতু ও ফুল্লরা, যাপিত জীবন, নীল ময়ূরের যৌবন, পোকামাকড়ের ঘরবসতি, ভালোবাসা প্রীতিলতা, কাঁটাতারে প্রজাপতি, ভূমি ও কুসুম ইত্যাদি। শক্তিমান লেখকের গল্পগ্রন্থও সমৃদ্ধ মতিজানের মেয়েরা, জলবতী মেঘের বাতাস, উৎস থেকে নিরন্তর ইত্যাদি।
মেধা ও মননের সমৃদ্ধ লেখক তার শিশু কিশোর সাহিত্যে অবদান অনবদ্য। লিখেছেন বর্ণমালার গল্প, কাকতাড়–য়া, বায়ান্ন থেকে একাত্তর, মুক্তিযুদ্ধ, চাঁদ বুড়ির পান্তা ইলিশ, সাগর ইত্যাদি শিশু-কিশোর লেখার মধ্যে তিনি ফিরে পান নিজের শৈশব কৈশোর ছেলেবেলা। এমনই তার লেখার ভাষা গঠনশৈলী যে কেউ পড়লেই মনে হবে। যেন আমরা ঘুরে আসছি আমাদের হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো থেকে। মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, গ্রাম বাংলা প্রকৃতি, শৈশবের শাপলা শালুক মাঠ ঘাট পুতুল খেলা সবই তার সমৃদ্ধ লেখনীতে প্রাণবন্ত ও শিক্ষণীয় হয়ে উঠেছে। শক্তিমান লেখক আমাদের শ্রদ্ধেয় আপা কেবল গল্প, উপন্যাস, শিশু-কিশোরদের লেখনিতেই মেধাসম্পন্ন তা কিন্তু নয় উনার ‘প্রবন্ধ’ লেখনী শেকড় অন্বেষায় ভাষা দক্ষতায় কাল উত্তীর্ণ। শব্দশৈলীতে পারদর্শী একজন দক্ষ লেখক তিনি।
লেখকের গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না, যেমনি নিষ্ঠাবান লেখক তেমনি সন্তান এবং সংসারের প্রতি, মানুষের প্রতি যতœবান। আমাদের শ্রদ্ধেয় আপার অনেক বেশি প্রাপ্তি জয় আনন্দ সবই কানায় কানায় পূর্ণ। তার জীবনের পাতায় একটি দুঃখবোধ মাঝেমধ্যে তাকে আমি থেকে নড়িয়ে দেয়। কষ্টের বোঝাটা বোবা কান্নায় বয়ে যায়। প্রাণ কাঁদে হু হু করে। চারদিক ছাপিয়ে কেবল বর্ষণ এত আদরের মেয়ে লারা নেই। ভাবতেই বুকটার ভেতরে ভীষণ আর্তনাদ করে ওঠে। কার কাছে কীভাবে সান্ত¡না পাবেন তিনি। নিজের পাঁজর ভাঙা সেই বেদনা বয়ে চলেছেন নিত্যই। আল্লাহতায়ালা উনাকে এই কষ্টের সময় নিজের মাঝে নিজেকে থিতিয়ে রাখতে পারেন। পারছেন বলেই এতটা পথ পাড়ি দিয়ে যাচ্ছেন ‘ক্লান্তি আমায় ক্ষমা কর প্রভু’ বলে। পাথরেই যে ফুল ফোটে তার তো পানির প্রয়োজন নেই। সে তার রূপে-গুণে নিজেই হয়ে ওঠে অমরাবতী। আপা নিজেই আরাধনায় নিষ্ঠার এক অয়োময় রূপ। নিজের ভুবনে নিজেই কখনো ঘুরে বেড়ান। নিজের মতো নিজের জগতে, এ যেন বহমান অলকানন্দা।
সৃজনশীল লেখক তিনি তার লেখা অনূদিত হয়েছে ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি, কন্নড়, রুশ, মালে, ফরাসি, জাপানি, উর্দু, মলয়েলাম, কোরিয়ান প্রভৃতি ভাষায়। বিশাল ক্যানভাসে তার উপন্যাস বিষয়বস্তু সমাজ, সংসার, রাজনীতি, ঐতিহ্য, ইতিহাস, ধর্মবর্ণ, জড়া, আনন্দ, বিভিন্ন বৃত্তিজীবী মানুষের ধর্ম-বর্ণ বৈষম্যের অভিশাপ থেকে জীবনের দ্রোহ সবই সূ²ভাবে তুলে ধরেছেন।
গায়ত্রী সন্ধ্যা উপন্যাসের ব্যাপ্তি সাতচল্লিশ থেকে আটান্ন দ্বিতীয় খণ্ডের ঊনষাট থেকে ঊনসত্তর। এভাবেই তার উপন্যাসে উঠে এসছে- রাজনীতি, সামরিক শাসনের পীড়ন, বাঙালির উত্তরণ। ঘাত-প্রতিঘাত, বিদ্রোহী প্রতিবাদী বাঙালি জাতি মেরুদণ্ড সোজা করে বিজয় ছিনিয়ে আনতে জানে। ভূমি ও কুসুম উপন্যাসে উঠে এসেছে তিন বিঘা করিডোর ছিটমহলের জনপদের মানুষের দুঃখ-বেদনা, জয়-পরাজয়। স্বাধীন রাষ্ট্রে পরাধীনতার বেড়াজালে আটকে পড়া মানুষের আর্তনাদ বুক ভাঙা চিৎকার সবই বিমূর্ত রূপে ধরা দিয়েছে। যাপিত জীবনে কিচ্ছা-কাহন আনন্দ উল্লাস জীবন্ত পটভূমিতে লেখা। তার লেখনীর গুণে ইতিহাস শিল্পগুণে গুণান্বিত হয়ে পাঠকপ্রিয়তা পেয়ে যায়।
তিনি যেমন বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে-গঞ্জে চষে বেড়িয়েছেন। স্বচক্ষে যা কিছু দেখেছেন তার প্রতিফলন তার সাহিত্যকর্মে গবেষণাধর্মী কাজে লাগিয়েছেন। শক্তিমান লেখক তিনি কুড়িয়ে নেয়া শব্দ ফুলের মালা গেঁথেছেন তাই নান্দনিক হয়ে উঠেছেন। তিনি বিদেশেও সমানভাবেই আমন্ত্রিত হয়ে গিয়েছেন বিভিন্ন সেমিনার এটেন্ড করতে। ভাবের আদান-প্রদান, দেশ ভ্রমণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে তার সাহিত্যকর্মে। আমাদের শ্রদ্ধেয় আপার লেখা উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র হয়েছে দেশে এবং বিদেশেও প্রখ্যাত সত্যজিৎ রায় বিশিষ্ট লেখক সেলিনা হোসেন আপার লেখার প্রশংসা করেছেন এবং তিনি ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তার উপন্যাস নিয়ে চলচ্চিত্র করবেন। তার গল্প এবং উপন্যাস গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে কতটা তা বলে বোঝানোর অপেক্ষা রাখে না। তিনি নিজের মধ্যে সৃষ্টিশীল বিষয়বস্তু ধারণ করেছেন, লালন করেছেন নব নব রূপে নতুনের আহ্বানে নিবেদন করেছেন। নিরন্তর লিখে চলেছেন নব ধারা জলে অবগাহন করে তাই তো তার লেখনীর ক্ষয় নেই।
শক্তিমান লেখক আমাদের সবার শ্রদ্ধেয় আপা কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন এমনভাবেই তার সৃজনশীল, সৃষ্টিশীল কাজ করে যাবেন। আমাদের বাংলা সাহিত্যের ভাণ্ডার আরো সমৃদ্ধ হবে উনার লেখনীতে। আমার একান্ত দোয়া সৃষ্টিকর্তা আল্লাহতায়ালার দরবারে আপাকে রোগমুক্ত রাখুন, দীর্ঘ আয়ুতে পথ চলার তৌফিক দান করুন। যেন লম্বা সময় ধরে কাজ করে যেতে পারেন সুস্থতায়। আমাদের ভালোবাসায় আপনি ভালো থাকবেন আশা করি আমাদের শ্রদ্ধেয় আপা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়