প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
সালেহ এলাহী কুটি, মৌলভীবাজার থেকে : বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন- দেশের চা শিল্প হবে শ্রমিকবান্ধব। এ লক্ষ্যে তিনি চা বাগান মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল জাতীয় চা দিবস উপলক্ষে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে টি রিসোর্ট এন্ড মিউজিয়ামের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ টি বোর্ড আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর ঢাকায় চা দিবসের অনুষ্ঠান করলেও এ বছর চা শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চা বাগান মালিক-শ্রমিকসহ প্রত্যক্ষ অংশীজনদের নিয়ে চায়ের রাজধানী বলে পরিচিত শ্রীমঙ্গলে জাতীয় চা দিবসের মূল অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
টিপু মুনশী বলেন- চা শিল্পের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর যুগান্তকারী সব উদ্যোগের ধারাবাহিকতা ও বর্তমান সরকারের নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে দেশের চা শিল্প টেকসই উন্নয়নে পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন- দেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় পানীয় চা। সিলেটের মালনিছড়া চা বাগানে ১৮৫৪ সালে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে চা চাষ শুরু করা হয়। ধীরে ধীরে এ অঞ্চলের অন্যতম সম্ভাবনাময় শিল্প হিসেবে চা শিল্প বিকশিত হতে থাকে। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে ব্রিটিশ শাসনাধীন উপমহাদেশের এ অঞ্চলে চা শিল্পের অগ্রগতি মূলত ব্রিটিশদের মাধ্যমেই হয়েছে।
তিনি জানান- চায়ের গুণগত মান ঠিক রেখে চা পাতা উত্তোলন, উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে বিশেষ নজরদারিও রাখা হচ্ছে। দেশে যেসব চা বাগান রয়েছে সেগুলোতে আগের তুলনায় চা উৎপাদন বেশি হচ্ছে। এছাড়া দেশের উত্তরাঞ্চলে বিশেষ করে পঞ্চগড়ে মোট উৎপাদনের প্রায় ১৯ শতাংশ চা উৎপাদন হচ্ছে। যে কারণে দিন দিন চা উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি জানান- বর্তমানে দেশে ৯০-৯৫ মিলিয়ন কেজি চায়ের চাহিদা রয়েছে। এ চাহিদা দেশে উৎপাদিত চায়ের মাধ্যমেই পূরণ করা যাচ্ছে। এ বছর দেশে ১০০ মিলিয়ন কেজির বেশি চা উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ সময় প্রথমবারের মতো চালুকৃত ‘জাতীয় চা পুরস্কার’ বিতরণে ৮ ক্যাটাগরিতে নাম ঘোষণা করেন। এগুলো হলো- ১. একর প্রতি সর্বোচ্চ উৎপাদনকারী চা বাগান- ভাড়াউড়া চা বাগান ২. সর্বোচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন চা উৎপাদনকারী বাগান- মধুপুর চা বাগান ৩. শ্রেষ্ঠ চা রপ্তানিকারক- আবুল খায়ের কনজ্যুমার প্রোডাক্টসলি ৪. শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্রায়তন চা উৎপাদনকারী- মো. আনোয়ার সাদাত সম্রাট (পঞ্চগড়) ৫. শ্রমিক কল্যাণের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ চা বাগান- জেরিন চা বাগান ৬. বৈচিত্র্যময় চা পণ্য বাজারজাতকরণের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান- কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেট লিমিটেড ৭. দৃষ্টিনন্দন ও মানসম্পন্ন চা মোড়কের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ চা প্রতিষ্ঠান- গ্রিন ফিল্ড টি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ৮. শ্রেষ্ঠ চা পাতা চয়নকারী (চা শ্রমিক)- উপলক্ষী ত্রিপুরা, নেপচুন চা বাগান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি, চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম।
এছাড়া শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশীয় চা সংসদের সভাপতি কামরান টি রহমান, টি ট্রেডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শাহ মঈনুদ্দিন হাসান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে চা-শ্রমিক জনগোষ্ঠী, চা-বাগান মালিক ও ব্যবস্থাপকসহ চা সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।