ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সাব কমিশন গঠনের প্রস্তাব বাংলাদেশের

আগের সংবাদ

চিকিৎসার ফি নির্ধারণ কতদূর? : বেসরকারি হাসপাতালে সেবা নেন ৮৬ শতাংশ মানুষ, স্বাস্থ্য খাতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে

পরের সংবাদ

ধার করে চলছে ৭৪ শতাংশ নি¤œ আয়ের পরিবার

প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : মূল্যস্ফীতির চাপে দেশের ৭৪ শতাংশ নি¤œ আয়ের পরিবার ধার করে চলছে। গত ছয় মাসে এসব পরিবারের ব্যয় বেড়েছে ১৩ শতাংশ, কিন্তু তাদের আয় বাড়েনি। এছাড়া ৩৫ শতাংশ পরিবার সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে।
ঢাকার ব্র্যাক সেন্টারে গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশের ৮ বিভাগের ১ হাজার ৬০০ পরিবারের ওপর করা জরিপের ফলাফল তুলে ধরে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং-সানেম। দেশের গ্রাম ও শহরের নি¤œ আয়ের পরিবারের ওপর করা এই জরিপে যেসব পরিবার অংশ নিয়েছে, তাদের ৯০ শতাংশ পরিবার জানিয়েছে অর্থনৈতিক চাপে তাদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতির জন্য বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, দেশে মুদ্রার অবমূল্যায়ন ও বাজার অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি। জরিপটি চলতি মার্চ মাসে করা হয়েছে। তবে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছয় মাসের তথ্য নেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠী বেড়েছে না কমেছে, তা তুলে ধরার জন্য এই জরিপ করা হয়নি। জরিপ করা হয়েছে মূল্যস্ফীতির চাপে দরিদ্র মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক চাপের বিষয়টি নীতিনির্ধারকদের সামনে নিয়ে আসার জন্য।
জরিপটি চলতি মার্চ মাসে করা হয়েছে। তবে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছয় মাসের তথ্য নেয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠী বেড়েছে না কমেছে, তা তুলে ধরার জন্য এই জরিপ করা হয়নি। জরিপ করা হয়েছে মূল্যস্ফীতির চাপে দরিদ্র মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক চাপের বিষয়টি নীতিনির্ধারকদের সামনে নিয়ে আসার জন্য। সানেম বলছে, মূল্যস্ফীতির চাপে খাবারের খরচ মেটাতে মানুষ এখন ব্যাপক কাটছাঁট করে চলছে। জরিপে অংশ নেয়া ৯০ শতাংশ পরিবার জানিয়েছে, তাদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হয়েছে। এর মধ্যে ৯৬ শতাংশ পরিবার মাংস খাওয়া কমিয়েছে। যেমন ছয় মাস আগেও যেসব পরিবারে মাসে চার বার মুরগি খেত, এখন তারা দুই বার মুরগি খায়। মাছ খাওয়া কমিয়েছে ৮৮ শতাংশ পরিবার। এ ছাড়া ৭৭ শতাংশ পরিবার ডিম ও ৮১ শতাংশ পরিবার ভোজ্যতেল খাওয়া কমিয়েছে।
খাদ্যবহির্ভূত পণ্য এবং সেবায়ও নি¤œ আয়ের মানুষ ব্যাপকভাবে খরচ কমিয়েছে। বিশেষ করে পোশাক, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য- এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। জরিপের তথ্য বলছে, শহরের নি¤œ আয়ের পরিবার খাদ্য কিনতে বেশি কাটছাঁট করছে। গ্রামের পরিবারগুলো খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে খরচ কমিয়েছে বেশি।
জরিপের ফলাফল তুলে ধরে সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় নি¤œ আয়ের মানুষ কেমন আছে, তার জন্য জরিপ না করেও বলে দেয়া সম্ভব, তারা কেমন আছে। এ জন্য এই জরিপে যা উঠে এসেছে, তা হয়তো অনেকের জানা।
সানেমের জরিপের তথ্য বলছে, মূল্যস্ফীতির চাপে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত ব্যয় বাড়তে থাকায় গত ছয় মাসে যে ৭৪ শতাংশ পরিবার ধার করে চলেছে, তাদের ধার করা বন্ধ হয়েছে বা বন্ধ হবে, এমন পরিস্থিতি এখনো আসেনি। বরং পরিস্থিতি যদি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে ৮৫ শতাংশ পরিবার মনে করে যে আগামী ৬ মাসে তাদের আরো ধার করতে হবে। জরিপ বলছে, ৩৫ শতাংশ পরিবার তাদের সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে। আর সঞ্চয় বিমুখ হয়েছে ৫৫ শতাংশ পরিবার।
এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সানেম মনে করে, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টিতে এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত। দেশে উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি খাদ্য আমদানিতে আরো বেশি কৌশলী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে তারা। একই সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। বাজার তদারকিতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি প্রয়োজনে ব্যবসায়ী সংগঠনদের সঙ্গে নিয়ে বাজার তদারকি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে তারা। এছাড়া বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম কীভাবে কমিয়ে আনা যায়, তা নিয়ে ভাবতে হবে বলে জানায় সানেম।
জরিপের বিষয়ে সানেমের গবেষণা পরিচালক সায়মা হক বিদিশা বলেন, ঋণ নেয়াকে অনেকে উদ্ধার পাওয়ার প্রক্রিয়া হিসেবে নিয়েছেন। তবে এসব ঋণে সুদের হার অনেক বেশি। ফলে সুদের দুষ্টচক্রের মধ্যে পড়তে পারে এসব মানুষ। বিষয়টি এসব মানুষকে ভবিষ্যতে আরো ভোগাবে। আমাদের দেশে বিমা সুবিধা কম, বিশেষ করে স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো বিষয়ে এসব মানুষ বিনিয়োগ কম করবে। সার্বিকভাবে এসব বিষয় এসডিজির লক্ষ্য অর্জন থেকে পিছিয়ে দেবে। বিষয়টি নিয়ে এখনই নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে উদ্যোগ নিতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়