বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের : গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা বিএনপির কারণেই বারবার হোঁচট খায়

আগের সংবাদ

আত্রাই উপজেলা মিলনায়তনের পাশে জলাবদ্ধতা

পরের সংবাদ

ডুমুরিয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে মলা-ঢেলা মাছ

প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শেখ মাহতাব হোসেন, ডুমুরিয়া (খুলনা) থেকে : খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে মলা ও ঢেলা মাছ। ভালো দামও পাচ্ছেন চাষিরা। মুখে হাসি ফুটেছে তাদের মুখে। দেশীয় প্রজাতির মাছ মলা। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি এ মাছ বেশ পুষ্টিসমৃদ্ধ। তাই ডাক্তাররা মলাঢেলা মাছ খেতে রোগীদের পরামর্শ দেন।
আমাদের দেশের খাল-বিল কমে যাওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে এখন মলা মাছ তেমন একটা পাওয়া যায় না। কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতি আবিষ্কার হওয়ার ফলে মলা মাছ এখন বড় পরিসরে চাষাবাদ শুরু হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
পুষ্টিবিদ ফারাহ দীবার পরামর্শ, কিছু কিছু রোগ যেমন, ইউরিক এসিড যদি কারো বেশি থাকে, তখন তাদের কাঁটাসহ মাছ খাওয়া যাবে না। তাদের ছোট মাছ পরিহার করা উচিত। যদি আমরা মাছের ফ্লেশটা নিই, মাছের প্রোটিনটা আমরা সেখান থেকে পাই। যাদের প্রোটিনের দরকার, তারা খুব সহজেই মাছ থেকে গ্রহণ করতে পারেন। মাছের প্রোটিন আমাদের শরীরের জন্য কার্যকর। তাই আমরা মাংসের প্রোটিনটা মাছ থেকে নিতে পারি। এ পুষ্টিবিদ বলেন, মাছের মধ্যে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড আছে, যা আমাদের শরীরের কোলেস্টেরলগুলোকে বের করতে সহায়তা করে। বাচ্চাদের ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট, বাচ্চাদের অন্য সব ডেভেলপমেন্টের জন্য ওমেগা থ্রি এবং বড়দের হার্ট ডিজিজের জন্য ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড খুবই উপকারী। তাই মাছের মাধ্যমে ওমেগা থ্রি আমরা প্রচুর পেতে পারি। যতটা সম্ভব মাছ যদি আমরা ভাপে রান্না করি, মানে কম তাপে কিন্তু অল্প সময়ে রান্না করি, মাছ সহজেই রান্না হয়ে যায়। কিন্তু অতিরিক্ত উচ্চ তাপে, উচ্চ তেলযুক্ত, যদি আমরা ডিপ ফ্রাই করি, তাহলে মাছের যে ওমেগা থ্রি, সেটা কিন্তু তেলের সঙ্গে চলে যায়।
এ ব্যাপারে খুলনা মৎস্য অধিদপ্তরের জেলা মৎস্য অফিসার জয়দেব পাল ভোরের কাগজকে বলেন, মলা ঢেলা মাছের পোনা পরিবহন করা একটা জটিল পদ্ধতি এবং রেদু পরিবহন করা অত্যন্ত সহজ। তাই রেণু নিয়ে নিজে পোনা তৈরি করে চাষাবাদ করাই উত্তম। এতে খরচ ও ঝুঁকি দুটোই কম। যারা অল্প খরচে মলা মাছ চাষ করতে চান প্রথমদিন থেকে ৭ থেকে ৮ দিন পর বেণু ছাড়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করে প্রথমে পুকুরে বিষটোপ ব্যবহার করে সব রাক্ষুসে মাছ মেরে ফেলতে হবে। তারপর পুকুরের সব পানি সেচ দিয়ে ফেলে দিতে হবে। যদি পুকুর আকৃতিতে বড় হয় তাহলে সব পানি অপসারণ করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এক্ষেত্রে অর্ধেক পানি ফেলে দিয়ে পরিষ্কার পানি দিয়ে ভরে দিতে হবে। যদি কোনো পানি পরিবর্তন করার সুযোগ না থাকে তাহলেও চলবে। সেক্ষেত্রে চুনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। বিষটোপ প্রয়োগের দ্বিতীয় দিন শতাংশ প্রতি আধা কেজি চুন পানিতে গুলে ছিটিয়ে দিতে হবে।
উপজেলার খর্নিয়া ইউনিয়নের টিপনা গ্রামের মলা ঢেলা মাছচাষি আলহাজ শেখ ফারুক হোসেন ও হাসানপুর গ্রামের মো. জহিরুল ইসলাম গাজী ভোরের কাগজকে জানান, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দিকের পরামর্শ নিয়ে মলাঢেলা মাছের চাষ করে চলতি বছরে ৩০ হাজার টাকার মলা ঢেলা মাছ বিক্রি করছেন। উন্নত প্রযুক্তি নিয়ে আগামীতে আরো বেশি করে মলা ঢেলা মাছের চাষ করবেন। এ ব্যাপারে ডুমুরিয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দিক ভোরের কাগজকে বলেন, আমাদের খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় মলাঢেলা মাছ চাষ করে অনেক চাষি লাভবান হয়েছেন। এ ব্যাপারে কেউ পরামর্শ চাইলে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়