১ মিনিট ‘ব্ল্যাকআউট’ : আলোর মিছিলে গণহত্যার স্বীকৃতি দাবি

আগের সংবাদ

পাঠ্যবই কেলেঙ্কারি : গোয়েন্দা নজরদারিতে ৪ কর্মকর্তা

পরের সংবাদ

চট্টগ্রামে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন : অসা¤প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়

প্রকাশিত: মার্চ ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসা¤প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ের মধ্য দিয়ে গতকাল রবিবার চট্টগ্রামে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মদানকারী বীর সন্তানদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ, কুচকাওয়াজ, আলোচনা, গান-কবিতাসহ নানা আয়োজন ছিল চট্টগ্রামে।
স্বাধীনতা দিবসের প্রথম প্রহরে এবং গতকাল রবিবার সকাল থেকেই নগরীর মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুল প্রাঙ্গণে অস্থায়ী শহীদ মিনারে সব বয়সের মানুষের সমাগম ঘটে। সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি শুরু হয়। এর পর মেয়র নগরীর টাইগারপাসে অস্থায়ী নগর ভবনের সামনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম, হাসান মুরাদ বিপ্লব, আবুল হাসনাত মোহাম্মদ বেলাল, সচিব খালেদ মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শেখ রাসেল চত্বরে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে বিভাগীয় কমিশনার আমিনুর রহমান জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় ও পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ জাতীয় পতাকার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন। উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানও। এরপর অস্থায়ী শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রশাসনের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানরা। ডিআইজি ও পুলিশ সুপার নগরীর হালিশহরে জেলা পুলিশ লাইনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেন। সিএমপি কমিশনার নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনের শহিদ মিনারেও শ্রদ্ধা জানান। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ৮টায় নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ শুরু হয়। এতে পুলিশ বাহিনী, কারারক্ষী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিএনসিসি, স্কাউটস ও গার্লস গাইডের সদস্যরা অংশ নেন। কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন বিভাগীয় কমিশনার আমিনুর রহমান। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই অনুষ্ঠানে শারীরিক কসরত ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সকালে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া নগর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদসহ নেতাকর্মীরা ছিলেন। এছাড়া, দারুল ফজল মার্কেটে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। নগর যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আরও বিভিন্ন সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
এদিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা নগরীর ষোলশহরে বিপ্লব উদ্যানে স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এ সময় নগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, উত্তরের আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার এবং দক্ষিণের আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) চট্টগ্রাম জেলা কমিটির উদ্যোগে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় জেলা সিপিবির সভাপতি অশোক সাহা, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর, সহকারী সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়া, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উত্তম চৌধুরী, ফরিদুল ইসলাম, সিতারা শামীম উপস্থিত ছিলেন। জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ইমরান চৌধুরীর ও সাধারণ সম্পাদক টিকুল দাশের নেতৃত্বে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো হয়। ওয়ার্কার্স পার্টি, উদীচী, ন্যাপ, জাসদ, বাসদসহ আরো বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং বোধন আবৃত্তি পরিষদ, প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।
এদিকে, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর অবস্থায় থাকা বিদেশি বিভিন্ন জাহাজের নাবিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বন্দরের কর্মকর্তারা। এ সময় বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ফুল ও উপহার সামগ্রী তাদের দেয়া হয়।
এছাড়া সকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় উপউপাচার্য বেনু কুমার দে, রেজিস্ট্রার, সিন্ডিকেট সদস্য, প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর, শিক্ষক সমিতির কর্মকর্তারা, ডিন, বিভিন্ন হলের প্রভোস্টরা উপাচার্যের সঙ্গে ছিলেন। এরপর অফিসার সমিতি, কর্মচারী সমিতি, কর্মচারী ইউনিয়ন, সাংবাদিক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। বেসরকারি প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উদ্যোগে নগরীর জিইসি মোড়ে ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় উপাচার্য ড. অনুপম সেন, উপউপাচার্য কাজী শামীম সুলতানা ও ট্রেজারার একেএম তফজল হক, রেজিস্ট্রার খুরশিদুর রহমানসহ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছিলেন। প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়