তুরাগ : মাদক কারবারির হাতে ছুরিকাহত এসআই

আগের সংবাদ

বাজারে ক্রেতার নাভিশ্বাস

পরের সংবাদ

ফলমণ্ডিতে আমদানি দরের চেয়ে চারগুণ বেশি দামে খেজুর বিক্রি : উন্নত জাতের খেজুরকে নি¤œমানের দেখিয়ে আমদানি

প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামেরে পাইকারি ফলের বাজার ফলমণ্ডিতে বাড়তি দামে ফল বিক্রিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। রমজানের শুরুতে সেখানে অভিযান চালিয়ে বাড়তি দরে ফল বিক্রি করায় কয়েকজন ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছিল জেলা প্রশাসন। এবার ফলমণ্ডিতে বড় ধরনের অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে। রাজস্ব ফাঁকি দিতে ফলমণ্ডির ব্যবসায়ীরা উন্নতমানের খেজুরকে নি¤œমানের দেখিয়ে আমদানি করেন। পরে আমদানিকারক, কমিশন এজেন্টদের সঙ্গে সিন্ডিকেট করে এসব খেজুর কেনা দরের থেকে চারগুণ বেশি দরে বিক্রি করেন ফলমণ্ডি ব্যবসায়ীরা।
গতকাল শনিবার জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে এসব অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে। অভিযানে আমদানি নথি যাচাই করে দেখা গেছে, ফলমণ্ডি বাজারে ১২ জন খেজুর আমদানিকারক রয়েছেন। গত জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ৪০ হাজার ২৪ মেট্রিক টন খেজুর আমদানি হয়েছে। এগুলো কেজিপ্রতি গড়মূল্য ৮৯ টাকা ৩৬ পয়সা। এর মধ্যে আমদানিকারক ‘আল্লাহর রহমত স্টোর’ গত চার মাসে ৩৩টি এলসির মাধ্যমে ২ হাজার ৫৭২ টন খেজুর আমদানি করে কেজিপ্রতি ৭০ টাকা ১৪ পয়সা দরে। ‘আলী জেনারেল ট্রেডিং’ ১৬৮ টন খেজুর কেজিপ্রতি ১০৪ টাকা দরে আমদানি করেছে। অথচ ফলমণ্ডির ব্যবসায়ীরা জাহিদি, নাসার, আল মাদাফ, ফারাহ জাতের খেজুর আমদানি মূল্যের চেয়ে তিন থেকে চারগুণ দামে বিক্রি করছে। অর্থাৎ পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি আজওয়া ৭৫০ থেকে ১ হাজার টাকা, মাবরুম ১২০০ টাকা থেকে ১৩০০ টাকা, মরিয়ম ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, দাবাস ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, মেজডুল খেজুর ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা ও আলজেরিয়া খেজুর ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বাড়তি দরে খেজুর বিক্রি করায় ফলমণ্ডির পাইকারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ‘আল্লাহর রহমত স্টোর’কে ৫০ হাজার টাকা, আলী জেনারেল ট্রেডিংকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের বৃহত্তম খেজুর আমদানিকারক অ্যারাবিয়ান ফ্রুট ফ্যাক্টরি লিমিটেড এবং মদিনা ট্রেডিংয়ের হয়ে চট্টগ্রামে চড়া দামে খেজুর বিক্রি করায় ফ্রেশ ফ্রুট গ্যালারিকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জানা গেছে, অ্যারাবিয়ান ফ্র্রুট ফ্যাক্টরি লিমিটেড ৯২১১ টন খেজুর কেজি প্রতি ৮৪ টাকা ৬৪ পয়সা দরে আমদানি করেছে। প্রতিষ্ঠানটি আজওয়া, মেজডুল, মাবরুক, সাফওয়া, মরিয়ম ইত্যাদি উন্নত জাতের খেজুর আমদানি করে সেগুলো কম দাম দেখিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করিয়েছে।এতে করে তারা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। সেই খেজুর চড়া দামে বিক্রি করছে। জাতভেদে খেজুরের দাম পাঁচশত থেকে হাজার টাকার উপরেও বিক্রি হচ্ছে। মদিনা ট্রেডিংও একইভাবে খেজুর স্বল্পমূল্যে আমদানি এবং চড়া মূল্যে বিক্রি করছে।

তবে ফল ব্যবসায়ীদের দাবি, বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চড়া দামে বিক্রি করতে পাইকারি খেজুর ব্যবসায়ী ও কমিশন এজেন্টদের বাধ্য করছেন।
জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম বলেন, রাজস্ব ও শুল্ক ফাঁকি দিতে উন্নত জাতের খেজুরকে নি¤œজাতের খেজুর দেখিয়ে আমদানি করেছে ব্যবসায়ীরা। সে খেজুর আবার ফলমণ্ডিতে তিন থেকে চারগুণ চড়া দরে বিক্রি হচ্ছে। মূলত ফলমণ্ডি ব্যবসায়ী সমিতির সাভপতি, সাধারণ সম্পাদক, আমদানিকারক ও কমিশন এজেন্টরা সিন্ডিকেট করে বাড়তি দরে খেজুরসহ বিভিন্ন ফল বিক্রি করছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়