তুরাগ : মাদক কারবারির হাতে ছুরিকাহত এসআই

আগের সংবাদ

বাজারে ক্রেতার নাভিশ্বাস

পরের সংবাদ

একাত্তরের গণহত্যায় পাকিস্তানের দায়বদ্ধতা ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি : ড. মো. মোরশেদুল আলম

প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৫, ২০২৩ , ১১:১১ অপরাহ্ণ

২৫ মার্চ, জাতীয় গণহত্যা দিবস। বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক নৃশংস, ভয়ংকর ও বিভীষিকাময় কালরাত্রি হচ্ছে এই ২৫ মার্চ। একটি স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে বাঙালির অস্তিত্বকে পৃথিবীর বুক থেকে চিরতরে মুছে ফেলার জন্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের এই দিনে ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামক নীল নকশা অনুযায়ী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও গণহত্যা চালায়। সে সময়ের অবরুদ্ধ পরিস্থিতি সম্পর্কে লন্ডনভিত্তিক দ্য সানডে টাইমস পত্রিকার পাকিস্তান সংবাদদাতা এন্থনি ম্যাসকারেনহাসের বর্ণনা থেকেও ধারণা পাওয়া যায়। এ পত্রিকায় বাংলাদেশের গণহত্যার ওপর তার লেখা বিস্তারিত রিপোর্ট ১৯৭১ সালের ১৩ জুন ‘Genocide : Full Report’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, মার্চের শেষ দিকে যখন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দুই ডিভিশন সৈন্য ‘বাঙালি বিদ্রোহীদের’ দমন করার জন্য পূর্ব পাকিস্তানে পাঠানো হয়, তখন তা গোপন রাখা হয়। প্রকাশিত এ রিপোর্টের প্রথম পৃষ্ঠায় বলা হয়, মার্চ মাসের শেষদিক থেকে পশ্চিম পাকিস্তানের সৈন্যবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের হাজার হাজার বেসামরিক অধিবাসীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ইয়াহিয়ার সামরিক সরকারের পক্ষে এ ভয়ংকর সংবাদ চাপা দেয়া সম্ভব হয়নি। কলেরা ও দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা উপেক্ষা করে পূর্ব পাকিস্তান থেকে ৫০ লাখেরও বেশি বাঙালি ভারতে গিয়ে আশ্রয়প্রার্থী হওয়ার কারণ এ হত্যাযজ্ঞ। পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনী শুধু বাংলাদেশ আন্দোলনের সমর্থকদের হত্যা করেনি, হিন্দু ও মুসলমানদের তারা নির্বিচারে হত্যা করেছে। সাংবাদিক জন পিলজারও Daily Mirror পত্রিকায় পাকিস্তানি সেনাদের দ্বারা নির্বিচারে বাঙালিদের হত্যা ও নির্যাতনের এক ভীতিজনক বিবরণ প্রদান করেন। তিনি বলেন, পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক সরকার বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি অধিবাসীর বিরুদ্ধে গণহত্যামূলক অভিযান পরিচালনা করছে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অতর্কিত বর্বর আক্রমণের উদ্দেশ্য ছিল বাংলার মানুষকে হত্যা ও নির্যাতন করে তাদের মধ্যে ভীতি সঞ্চারের মাধ্যমে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের প্রতি জোরপূর্বক আনুগত্য স্বীকার করিয়ে নেয়া এবং এর মাধ্যমে দেশের একটি বড় অংশকে দেশ থেকে পলায়নে বাধ্য করা। তাদের দলিলপত্র ও লেখনীতে ‘আমাদের কোনো মানুষ প্রয়োজন নাই, শুধু জমি প্রয়োজন’, ‘সবুজ দেশটাকে আমরা লাল রংয়ে রূপান্তরিত করব’ ইত্যাদি বিষয়ের প্রমাণ পাওয়া যায়। বাল্টিমোর সানের সাংবাদিক জন উডরাফ মন্তব্য করেন, ‘বাংলাদেশের একমাত্র বাস্তবতা হলো ভীতি এবং মৃত্যু ছিল সহজ এবং আকস্মিক। গ্রামের পর গ্রাম উজাড় করে দেয়া, বসতির পর বসতিতে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেয়া এই ছিল স্বাভাবিক। গণহত্যা বা ধ্বংসসাধনে কোনো বাধাবিপত্তি বা বিবেকের দংশন ছিল না।’
বাংলাদেশের গণহত্যা নিয়ে ১৯৭১ সালের ২ আগস্ট নিউজউইক ও টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ কাহিনী হয়। নিউজউইকের শিরোনাম ছিল ‘বাংলা- একটি জাতির হত্যা’। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বর্বরতার কতিপয় নিদর্শন দিয়ে কাহিনী শুরু হয়। টাইমের শিরোনাম ছিল- ‘পাকিস্তান- সোনার বাংলার ধ্বংস সাধন’। পাকিস্তানের অভিযান ছিল অত্যন্ত নৃশংস ও নিষ্ঠুর। বাঙালির দুর্দশা ছিল অবর্ণনীয়। ২৫ অক্টোবর টাইম ম্যাগাজিনে প্রচ্ছদ কাহিনী হয় ‘পাকিস্তান- এমন কি আসমানও কাঁদছে’। পাকিস্তানি সামরিক শাসকগোষ্ঠী এবং পশ্চিম পাকিস্তানের কিছু ক্ষমতালোভী রাজনৈতিক নেতা মনে করতেন যে, এরূপ গণহত্যার মাধ্যমেই রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান সম্ভব। এ বর্বরোচিত উপায়ে পূর্ব বাংলাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য পশ্চিম পাকিস্তানের উপনিবেশ হিসেবে বহাল রাখা যায় বলে মনে করতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাঙালি নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ ও শিশুদের ওপর যে অবর্ণনীয় নির্যাতন, অত্যাচার, নিপীড়ন চালিয়েছিল হিটলারের পর থেকে এ পর্যন্ত এমন পৈশাচিক দৃষ্টান্ত আর এ বিশ্বে দেখা যায়নি। সিডনি শনবার্গের মতে, ইতিহাস, ভৌগোলিক অবস্থান, ক্ষমতার ভারসাম্য ও নির্বাচনী ফলাফল সবকিছু মিলেই গড়ে উঠেছে পূর্ব পাকিস্তানের সংকট। তবে এই রক্তক্ষয়ী উত্তালতা সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে কেবল, একজন কূটনীতিক যেমন বলেছেন, ‘উপমহাদেশের বিকারতত্ত্বের নিরিখে’। ২৫ মার্চ রাতে বাঙালি জাতির স্বায়ত্তশাসন আন্দোলন দমন করার জন্য পাকিস্তানি বাহিনী যখন পূর্ব পাকিস্তানে আকস্মিক অভিযান শুরু করল তখন থেকেই ন্যায়বিদ্যা ও যুক্তির স্বাভাবিক মান অচল হয়ে পড়েছে। পশ্চিম পাকিস্তানি সৈন্যদের কাণ্ডজ্ঞানহীন নির্মমতা এটাই প্রকাশ করছে, যে কোনো মূল্যে ও যে কোনো উপায়ে হলেও সামরিক কর্তৃপক্ষ পূর্ব পাকিস্তানের ওপর তাদের কর্তৃত্ব বজায় রাখবে।
মার্ক টালি একাত্তরে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের প্রধান ভাষ্যকার ছিলেন। তিনি ‘আমরা হত্যাযজ্ঞের প্রমাণ দেখেছি’ শিরোনামে এক নিবন্ধে লেখেন, ‘সে সময় আমি বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের প্রধান ভাষ্যকার হিসেবে কাজ করতাম। তাই আমি জড়িয়ে গিয়েছিলাম। এই চাকরির সুবাদেই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে হত্যাযজ্ঞের পর প্রথম সাংবাদিক দলের সদস্য হিসেবে সেখানে ঢুকতে পেরেছিলাম।… তাই সেনাবহিনীর চালানো হত্যাযজ্ঞ বাংলাদেশের জনমনে কী প্রভাব ফেলছে, সেটি তুলে ধরা সাংবাদিকদের মধ্যে ছিলাম আমি।… আমরা হত্যাযজ্ঞের প্রমাণ দেখতে পেয়েছিলাম। সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের প্রমাণ জোগাড় করতে পেরেছিলাম। আমরা দেখেছি, কেমন ক্ষতি হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ক্ষতিসাধন করা হয়েছে, তাও আমরা দেখেছি। ঢাকা থেকে রাজশাহী যাওয়ার সময় রাস্তার পাশের গ্রামগুলোকে দেখেছি ভস্মীভূত অবস্থায়। এটা স্পষ্ট ছিল যে নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী নির্বিচার আগুন দিয়েছে। তারা গ্রামের পর গ্রাম উজাড় করেছে, যাতে মানুষ তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারে।’
বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসররা এ গণহত্যা চালায়। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পদ্ধতি হলো : বয়লারে ও ফার্নেসে জীবন্ত নিক্ষেপ করে, ধানভাঙা ঢেঁকির গর্তে মাথা রেখে ঢেঁকিতে পাড়া দিয়ে মাথার খুলি ভেঙে চুরমার করা, নির্যাতন শেষে কুয়ায় নিক্ষেপ করা, জবাই করা, সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করা এবং বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা। জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলামী, পিডিপি প্রভৃতি দল ইসলাম ধর্ম ও পাকিস্তান রাষ্ট্র রক্ষার নামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সক্রিয় সহযোগিতা করে। এ দলগুলো শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর, আলশামস ইত্যাদি বাহিনী গঠনের মাধ্যমে বাঙালিদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন, গণহত্যা, ধর্ষণ ইত্যাদি অপকর্ম পরিচালনা করে। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে পাকিস্তানি হায়েনাদের দ্বারা ৩০ লাখেরও অধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। প্রায় ১৪ লাখ নারী বিভিন্নভাবে নির্যাতিত, নিগৃহীত এবং স্বামী-পুত্র-কন্যা বা অভিভাবক হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রকাশিত নিউজ ম্যাগাজিন পিক্সের তথ্যানুযায়ী মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সৈন্যদের দ্বারা এদেশের ৩ লাখ নারী ধর্ষিতা হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনী এবং তাদের দোসরদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যা, জাতিগত নিপীড়ন এবং হিন্দু বিদ্বেষের কারণে প্রাণভয়ে ও নিরাপত্তার সন্ধানে লাখ লাখ মানুষ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছিল। এপ্রিল মাসে শরণার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৫৬ জন এবং পরবর্তী মাসগুলোতে তা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পায়। ফলে ১৫ ডিসেম্বরে শরণার্থীর সংখ্যা ৯৮ লাখ ৯৯ হাজার ৩০৫ জনে উন্নীত হয়। ১৯৮১ সালে সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার ৩৩তম বার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘের এক রিপোর্টে বলা হয় যে, মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানি সৈন্যরা স্বল্পতম সময়ে ১৫ লাখ মানুষ হত্যা করে। স্বল্পতম সময়ে সর্বাধিক মানুষ নিহত হওয়ার এরূপ ঘটনা বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন।
গণহত্যার ফলে দেশের বেশ কয়েকটি গ্রামের নারীরা বিধবা হয়ে পড়েন। এসব গ্রাম বিধবা পল্লী হিসেবে পরিচিত। কয়েকটি বিধবা পল্লীর নাম নিচে উল্লেখ করা হলো : ১) শেরপুর জেলার বানিয়াপাড়া, সূর্যদি, আন্ধারিয়া গ্রাম। ২৪ নভেম্বর এসব গ্রামের প্রায় ১৫০ জন মানুষকে একসঙ্গে হত্যা করা হয়। সেদিন প্রায় ৫০ জন নারী বিধবা হন। এ গ্রামগুলো এখন বিধবা পল্লী হিসেবে পরিচিত। ২) ২৬ জুলাই শেরপুর জেলার সোহাগপুর গ্রামের ১৮৭ জন নিরীহ মানুষ গণহত্যার শিকার হয়েছিলেন। ফলে সেখানের প্রায় ৫৪ জন নারী বিধবা হয়েছিলেন। গ্রামটিও বিধবা পল্লী হিসেবে পরিচিত। ৩) ঠাকুরগাঁও জেলার চকহলদি, জাঠিভাঙ্গা, জগন্নাথপুর, সিঙ্গিয়া, চণ্ডীপুর, আলমপুর, বাসুদেবপুর, গৌরীপুর, মিলনপুর, খামারভোপলা, ঢাবঢুবসহ মোট ১২টি গ্রামের কয়েক হাজার নরনারী, শিশু, বৃদ্ধ ২২ এপ্রিল সকাল বেলা মৃত্যুভয়ে ভারতের উদ্দেশে রওনা দেয়। এ সংবাদটি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নিকট পৌঁছালে ২৩ এপ্রিল গণহত্যা চালানো হয়। ওইদিন ৩৫০ জন নারী বিধবা হন। এদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন চকহলদি গ্রামের। তাই গ্রামটি বিধবা পল্লী হিসেবে পরিচিত। কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহর থেকেই পাকিস্তানিরা তাদের দোসরদেরকে সঙ্গে নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে হত্যা শুরু করে। বহু স্থানে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়ের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেও তারা উপাসনারত ও আশ্রয় গ্রহণকারী নিরপরাধ মানুষগুলোকে গুলি করে হত্যা করেছে, ধরে নিয়ে গুলি করে ও জবাই করে হত্যা করেছে। ঘাতকেরা ধর্মের নামে সবচেয়ে বড় ধর্মবিরোধী কাজ করেছিল। অনেক স্থানেই হত্যার পর ধর্মীয় বিধিবিধান না মেনেই নিহতদের মৃতদেহ নদীতে ফেলে, তাদের দ্বারা খননকৃত গণকবরে মাটি চাপা দিয়ে, মৃতদেহ একস্থানে জড়ো করে পুড়িয়ে ফেলে তারা। মৃতদেহের প্রতি ন্যূনতম সম্মান প্রদর্শন করেনি তারা। সর্ব ক্ষেত্রেই ধর্মীয় বিধিবিধান ভঙ্গ করেছে তারা। ধর্মরক্ষার দোহাই দিয়ে পাকিস্তানি সামরিক শাসকেরা এদেশের অসংখ্য ধর্মপ্রাণ ও নিরীহ জনগণকে নির্মমভাবে হত্যা করে।’

পাকিস্তানি সামরিক জান্তা দীর্ঘ ৯ মাস ধরে সাংবাদিকতা, তথ্যসংগ্রহ ও বিতরণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। তাই গণহত্যা ও নির্যাতনের অনেক তথ্যই অজানা রয়ে যায়। মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশের ২০ জেলায় গণহত্যার সংখ্যা ৫ হাজার ১২১টি। গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের জরিপ অনুযায়ী প্রতিটি গণহত্যায় ৫ থেকে ১ হাজারেরও বেশি মানুষ হত্যার তথ্য পাওয়া গেছে। এ ২০টি জেলা হলো : গাইবান্ধা, জামালপুর, নড়াইল, পঞ্চগড়, মৌলভীবাজার, যশোর, লালমনিরহাট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার, বরিশাল, নীলফামারী, নারায়ণগঞ্জ, বগুড়া, নাটোর, কুড়িগ্রাম, পাবনা, রাজশাহী, সাতক্ষীরা, ভোলা ও খুলনা। ২০টি জেলার বধ্যভূমির সংখ্যা ৪০৪, গণকবর ৫০২টি এবং নির্যাতন কেন্দ্র ৫৪৭টি। ১৯৭১ সালে গণহত্যা সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে ৬ ডিসেম্বর যুদ্ধকালীন পাকিস্তানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব ‘হিলাল-ই-জুররত’-এ ভূষিত হয়। তারা হলো : লে. জেনারেল টিক্কা খান, লে. জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী, লে. জেনারেল আবু বকর ওসমান মিঠ্ঠা, লে. জেনারেল গোলাম ওমর, লে. জেনারেল রহিম খান, ব্রিগেডিয়ার এস এ আনসারি এবং ব্রিগেডিয়ার জাহানজেব আরবাব। মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী পরিচালিত এই বর্বরোচিত গণহত্যার বিষয়টি স্বীকার করে পাকিস্তান সরকারকে এর জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও সংগঠনগুলোকে এই গণহত্যার স্বীকৃতি দিতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়