কাতার নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : প্রবাসে অপরাধে জড়ালে দায় নেবে না সরকার, দালালের মাধ্যমে কেউ বিদেশমুখী হবেন না

আগের সংবাদ

বিপর্যয় সামালের সক্ষমতা কম : ইঞ্জিনিয়ার ও প্যারামেডিকেল টিম নেই, প্রয়োজন উন্নত প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম

পরের সংবাদ

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব : এক বছরে আর্জেন্টিনার ক্ষতি ৫০০ কোটি ডলার

প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইতোমধ্যে বছর পেরিয়েছে। এ যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সারা বিশ্বের অর্থনীতি। বিশ্বজুড়ে চলছে জ্বালানি সংকট, মূল্যস্ফীতি আকাশচুম্বি। নিত্যপণ্যের বাজারে লেগেছে আগুন। দরিদ্রদের পাশাপাশি মধ্যবিত্তদেরও জীবনযাপন কঠিন হয়ে উঠেছে। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এক বছরে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে লাতিন আমেরিকান দেশ আর্জিন্টিনার।
সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছরপূর্তির দিনে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে আর্জেন্টিনার অর্থনীতি মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই যুদ্ধ আর্জেন্টিনার বাণিজ্য ভারসাম্যের ওপর বিশাল আঘাত হেনেছে। এতে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে অন্তত ৪৯৪ কোটি ডলার। যুদ্ধসৃষ্ট মূল্যস্ফীতির ধাক্কা দেশটির কৃষি ও জ্বালানি খাতকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেছে। যুদ্ধের কারণে জ্বালানি সংকট, পণ্য পরিবহনে বাড়তি খরচের কারণে শেষপর্যন্ত লাভের মুখ দেখতে পারেনি আর্জেন্টিনা। জানা গেছে- ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার আগে আর্জেন্টিনার জ্বালানি ঘাটতির পূর্বাভাস ছিল ১৯৯ কোটি ডলারের। কিন্তু যুদ্ধের ধাক্কায় তা বেড়ে ৩৭৫ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বলিভিয়ান গ্যাসের পেছনে খরচ বেড়েছে ১১৪ শতাংশ, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসে বেড়েছে ২৩৩ শতাংশ এবং গ্যাসঅয়েলে বেড়েছে অন্তত ৮৫ শতাংশ।
নাইট্রোজেন সার উৎপাদনে ব্যবহৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি কৃষিপণ্যের দামকেও প্রভাবিত করেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এক বছরে সয়াবিনের দাম বেড়েছে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ, গমের ৩৩ দশমিক ৭ শতাংশ ও ভুট্টার ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ। ইউক্রেন যুদ্ধের আগে ২০২২ সালে আর্জেন্টিনার মোট রপ্তানি পূর্বাভাস ছিল ৩ হাজার ১৮ কোটি ডলারের। কিন্তু যুদ্ধ শুরুর প্রেক্ষাপটে আরো ৬১ কোটি ৭০ লাখ ডলারের পণ্য বেশি রপ্তানি করেছে দেশটি। কিন্তু এটি তাদের জ্বালানি খাতের ক্ষতি পূরণের জন্য যথেষ্ট ছিল না। আর্জেন্টাইন অর্থনীতি মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধের কারণে আমদানি-রপ্তানির পরিবহন খরচও বেড়ে গেছে। যুদ্ধের আগে দেশটি মালমাল পরিবহনে মোট ব্যয় ৩০০ কোটি ডলারের পূর্বাভাস দিয়েছিল। কিন্তু এখন তার পরিমাণ ৪৮০ কোটি ডলারে পৌঁছানোর কথা বলা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, যুদ্ধের কারণে আর্জেন্টিনার জ্বালানি খাতে ভর্তুকিও বেড়েছে। প্রতিবেদন বলছে, ২০২২ সালে এ খাতে দেশটির ভর্তুকি বেড়ে ১৭৯ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। অবশ্য ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে তাদের জ্বালানি আমদানিও বেড়েছে। যদি দাম অপরিবর্তিত থাকত তাহলে গত বছর আর্জেন্টিনার জ্বালানি আমদানিতে ব্যয় হতো ৯০৩ কোটি ডলার। কিন্তু নতুন হিসাবে এর পরিমাণ ১ হাজার ৩২৭ কোটি ডলারে পৌঁছানোর কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ যুদ্ধের জেরে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় আর্জেন্টিনার অতিরিক্ত খরচ হয়েছে অন্তত ৪২৪ কোটি ডলার। এর ফলে তাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও কমেছে। তবে এর মধ্যেও কিছু কিছু খাতে বাণিজ্যের পালে লেগেছে সুসময়ের হাওয়া। যেমন- আর্জেন্টিনার কৃষি খাত। রাশিয়া-ইউক্রেন দুই দেশই বিশ্বের অন্যতম প্রধান শস্য সরবরাহকারী। যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার শস্য রপ্তানি কার্যত থমকে গেছে। এর ফলে বিকল্প দেশগুলোতে চাহিদা বেড়েছে ব্যাপকভাবে। আর্জেন্টিনার কৃষি খাতে লেগেছে সেই সুসময়ের হাওয়া। ঊর্ধ্বমুখী দামের সঙ্গে বেড়েছে রপ্তানি। তাতে কিছুটা সমৃদ্ধ হয়েছে দেশটির অর্থভাণ্ডার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়