ডিএসসিসি মেয়র : হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে

আগের সংবাদ

নির্বাচনী বছরে কর্মসংস্থানে জোর : বেকার ৩ কোটি ৩৯ লাখ ৮৭ হাজার, সরকারি পদ খালি সাড়ে ৩ লাখের বেশি

পরের সংবাদ

সাম্প্রতিক বইমেলায় নতুন কবি ও লেখকের ভবিষ্যৎ

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাংলা একাডেমি কর্তৃক ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২৩ এবার কেমন যেন ভাবাচ্ছে প্রথম থেকে। এবারের বইমেলার রকমসকম নিয়েও চিন্তনের অবকাশ রয়েছে। একটা অতিমারি বা করোনার প্রকোপের পর ২০২০ এবং ২০২১-এর সংকটময় তথা বই মেলার হ য ব র ল অবস্থা কাটিয়ে গত বছর ২০২২ বইমেলা কিছুটা স্বস্তির মুখ দেখতে শুরু করলেও এবারে ছাপার সরঞ্জামের মূল্যবৃদ্ধি অর্থাৎ ছাপার কাগজ থেকে কালি ও আনুষঙ্গিক সমস্ত জিনিসপত্রের লাফিয়ে লাফিয়ে মূল্যবৃদ্ধিতে একদিকে প্রকাশকরা যেমন হতভম্ব হয়ে পড়েছেন অন্যদিকে অস্থির একটা পরিস্থিতির সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। প্রকাশনা ব্যবসায় ধস না নামলেও গতি নির্বিঘেœ হয়েছে শ্লথ। কবি ও লেখকরা হচ্ছে আশাহত, উৎসাহ হারাচ্ছে আর্থিক সক্ষমতার দৌর্বল্য অনুভব করে। প্রকাশকদের কেউ কেউ বইমেলার আগের মাসগুলোতে অর্থাৎ প্রকাশনার প্রস্তুতি পর্বে বলেই রেখেছেন এবার তারা মৌলিক গ্রন্থ ছাড়া আগের মতো অন্য কোনো লেখক বা কবির বই প্রকাশের দায়িত্ব নিজ স্কন্ধে নেবেন না। এ সংবাদটা অনেক নামিদামি লেখকের স্বপ্নভঙ্গের একটা আশঙ্কা বৃদ্ধি করেছে যে আগের মতো হয়তো বই প্রকাশের সুযোগ পাবে না ভেবে। তবে এখানেই শেষ নয়, নতুন কবি ও লেখকের হতোদ্যম বই প্রকাশের ক্ষেত্রে একটা ঋণাত্মক প্রভাব ফেলবে এবার। বই বের করতে হলে নবীন বা অপরিচিত কবি বা লেখককে গুনতে হবে পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি টাকা। এবার এদের একটা বিরাট অংশ নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা মগজে ধারণ করে। এখানে একটা কথা না বললেই নয় যে, শত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও প্রকাশকরা তাদের প্রকাশনের ধারাকে সংকোচন প্রসারণের মধ্যে একটা সংগতি রক্ষা করে মেলায় তাদের স্টল খুলে বইয়ের পশরা সাজিয়ে বই বিক্রির চেষ্টা করে চলেছেন। মুনাফা যাই হোক না কেন এই অস্থির প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও তাদের এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য।
এবার আসা যাক এই বইমেলা কেন? কেনই বা বাংলা একাডেমি ঘটা করে বইমেলার আয়োজন করে? এতে লেখক, কবি ও সাহিত্যিকের কোনো উপকার হয় কি? বই মেলায় নবীন লেখক বা কবি সাহিত্যিকের প্রকাশিত বইয়ের বিক্রির সুযোগ কেমন থাকে? এবারের মেলায় ক্রেতার হার কেমন হতে পারে? এসব নিয়ে একটা মেঘযুক্ত ধারণা ঘুরপাক খাচ্ছে বইমেলার সাজঘরে।

দুই. প্রতি বছর তারপরও কেন জানি বইমেলাকে কেন্দ্র করে বাঙালির প্রাণ জেগে ওঠে, মেতে ওঠে অনন্য উৎসবে। ২১ ফেব্রুয়ারি স্মরণে রেখে প্রতিবারই বাংলা একাডেমি ঢাকা বইমেলার আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চলেছে প্রায় চল্লিশ বছর ধরে। তথ্যসূত্র অনুসারে ১৯৮৩ সালে তৎকালীন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কাজী মঞ্জুরে মওলা বাংলা একাডেমিতে প্রথম ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’র আয়োজন সম্পন্ন করেন বলে মনে করা হলেও বইমেলার শুভসূচনা হয় স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। মুক্তধারার প্রকাশক চিত্তরঞ্জন সাহা কর্তৃক ঢাকা বিশ্ব^বিদ্যালয় সংলগ্ন বটতলে মাত্র ৩২টি বই নিয়ে এ মেলা শুরু করেন এবং ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত এ মেলা চালু রাখেন। তখন কলেবর ছিল সাদামাটা ও ছোট পরিসরের। তবে ১৯৭৬ সাল থেকে মুক্তধারার পাশাপাশি অনেক প্রকাশক তাদের প্রকাশনা নিয়ে মেলায় তাদের বিভূতি ছড়াতে চেষ্টা করেছে বইমেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে। এ জন্য মুক্তধারার প্রকাশক চিত্ত রঞ্জন সাহাকে বই মেলার পথিকৃৎ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ছোট্ট পরিসরে এ মেলা শুরু হলেও ১৯৮৩ পর বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কাজী মঞ্জুরে মওলার বিশেষ আগ্রহ ও ঐকান্তিকতায়, নিষ্ঠা ও একাগ্রতায় এখন তার বিস্তৃতি বিশাল। প্রথম থেকেই বইমেলা আয়োজনের একটা বিশেষ উদ্দেশ্য ছিল, তা হলো একটা মননশীল ও সৃজনশীল জাতি গঠনের। এর নিরিখে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বোধ ও বোধের জায়গাটা গভীর করার জন্য, সর্বোপরি নবীন প্রজন্মকে আলোর পথ দেখানোর আশায় এ অমর একুশে গ্রন্থমেলার আয়োজন করা হয়েছিল। তবে এ আয়োজনের বড় উদ্দেশ্য ছিল দেশের লেখক, শিক্ষক, কবি প্রাবন্ধিক, গবেষকরা যেন নিজেদের মেধা, মনন ও চিন্তাভাবনা পাঠকদের জানাতে পারেন, সবার মাঝে বিস্তার ঘটাতে পারেন তাদের সুন্দর বোধ, সৃষ্টির সৃজনী ধারা। এখন বইমেলার আবহ ও আবেদন বিশাল পরিসরজুড়ে, বৈভব ছড়াচ্ছে ভিন্নরকম নিত্যনতুন আয়োজনের ছড়াছড়ির মাধ্যমে। ছোট-বড় সব প্রকাশনার শৈল্পিক সাজসজ্জার আয়োজন, নিজেদের সম্প্রচারের জন্য গণমাধ্যমগুলোর আলাদা স্টল, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা স্টল, লিটল ম্যাগের জন্য আলাদা জায়গা, সাংস্কৃতিক ও নাটকের প্রকাশনার আলাদা পরিসর, লেখকদের জন্য আলাদা কর্নার, শিশুদের জন্য আলাদা কর্নার, শিশু-কিশোররা যেন আলাদাভাবে তাদের প্রয়োজনীয় বই নিতে পারে তার জন্য আলাদা সময়সীমা, বিভিন্ন জায়গায় বসার জন্য আলাদা বসার ব্যবস্থা, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মেলা প্রাঙ্গণের মধ্যে রয়েছে পথনাটকের আয়োজন। বইমেলা বা গ্রন্থমেলার ব্যাপ্তি বিশাল হওয়ার কারণে বাংলা একাডেমি নিজস্ব প্রাঙ্গণের সঙ্গে যুক্ত করেছে ক্রমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও। শুরুর দিকে এ মেলার ব্যাপ্তি ছিল ১৪ দিন। পরে ২১ দিন করলেও এখন গোটা মাসজুড়ে চলে বইমেলা। এখান থেকে খুব সহজে অনুমিত হয় মেলার গুরুত্ব ও বিশালতা।

তিন. তবে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বইমেলা বলুন বা গ্রন্থমেলা বলুন এর বাহ্যিক কাঠামোর সঙ্গে অভ্যন্তরীণ ব্যাপারেরও পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। তাই গ্রন্থমেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিটা বিষয় মানসিক উৎকর্ষের চেয়ে আর্থিক উৎকর্ষের বিষয়ে ধ্যাননিষ্ঠ হয়েছে বেশি। বলাবাহুল্য আর্থিক সঙ্গতি না থাকলে আজ প্রকাশনালয়ের মাধ্যমে বই বের করা একরকম দুরূহ ব্যাপার। এখানে একটা বিষয় স্পষ্ট- আর্থিকভাবে কোনো লেখক কবি সঙ্গতিপূর্ণ না হলে বা খ্যাতিমান কোনো লেখক কবি বা সাহিত্যিক ব্যতীত তাদের গ্রন্থকে পাঠকের কাছে তুলে ধরতে পারছেন না আজকালকার প্রকাশকরা। আগেও বলেছি এর প্রধান কারণ ছাপা কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামের ক্রম ঊর্ধ্বমুখী মূল্য বৃদ্ধি। কোনো প্রকাশকই এখন লোকসানের মুখে পড়তে চান না। কেননা বাজারে নবীন/নতুন কবি, লেখকের বইয়ের কাটতির বিষয়ে প্রকাশকরা কোনো আগাম লাভজনক চিন্তা করতে পারছেন না।
তাই নতুন লেখক, কবিদের বই প্রকাশকরা নিজ উদ্যোগে বের করতে আজ অপারগতা, অনীহা প্রকাশ করছেন প্রকাশ্যে। তবে এ কথাও স্বীকার করতে হয় যে কিছু কিছু প্রকাশক প্রবীণ লেখক ও কবিদের বই ছাপাচ্ছেন নিজ উদ্যোগে অনেকটা নিজ স্কন্ধে ঝুঁকিটা নিয়েই। তবু আমি প্রকাশকদের এক্ষেত্রে এগিয়ে রাখছি কেননা সময় যতই জটিল আবর্তে খাবি খাক না কেন তারা প্রতি বছরই তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন বইমেলার বহিরাবরণকে দৃষ্টিনন্দন রূপে সাজিয়ে তুলতে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়, স্টল ভাড়া ও
আনুষঙ্গিক নিয়মাচার মেনে ভাড়া বৃদ্ধিসহ একগাদা উপাচার মাথায় নিয়ে তারা তাদের ব্যবসাকে শানিত করার চেষ্টা করে চলছে।

চার. এত কিছুর পরও নবীন কবি, লেখকদের নিয়ে কেউ ভাবছেন কি এই ক্রান্তিকালে? বাজারে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে কোনো কাব্যগ্রন্থ, গল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধ সম্ভার এলেও এর কত শতাংশ পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হবে। পাঠকের কাছে নবীন লেখক বা কবির পূর্ব পরিচিতি না থাকায় দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে উঠে আসা লেখক ও কবি সাহিত্যিকের বইমেলায় আলো ফেলতে পারে না, ফলে এসব বই কেনায় আগ্রহ মোটেও থাকে না পাঠকের।
এক্ষেত্রে লেখকের পরিচিত কেউ কেউ বই ক্রয় করে থাকলেও তা নগণ্য। তবে কিছু কিছু নবীন লেখকও যে খরাময় এ পরিস্থিতি কাটিয়ে মেলায় নিজেকে বিকশিত করে তোলেন বৈ কি। কিন্তু একটা সময় বাংলা একাডেমির গ্রন্থমেলা আয়োজন করার উদ্দেশ্য ছিল দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রতিভাবান লেখকদের তুলে এনে আলোকময় করা। আজকাল সত্যি বলতে কি বাংলা একাডেমি এসব বিষয় নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করলেও তা সুদূরপ্রসারী নয়। এ জন্য বাংলা একাডেমি নানা জটিলপথ অতিক্রম করলেও তা বিশেষ ফলদায়ক হয়ে উঠছে না। ফলে স্থানীয়ভাবে প্রকৃত কবি, লেখক ও গবেষক সঠিকভাবে চিহ্নিত না হয়ে স্বজনপ্রীতির অপছায়ায় তারা মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে দীপ্তিময় দিশার সন্ধান না পেয়ে। এবারও বাংলা একাডেমির কর্ণধার ও কর্মকর্তারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নতুন লেখক, কবি সাহিত্যিক ও গবেষকের সন্ধানে গেল ক- মাস আগে উদ্যোগ গ্রহণ করে সদস্য সংগ্রহের জন্য কর্মশালার আয়োজন করেছেন। এ প্রক্রিয়া কতটুকু ফলপ্রসূ হয়েছে তা বাংলা একাডেমিই সঠিক বলতে পারবে। কেননা বাংলা একাডেমির কর্মকর্তাদের এরই মাঝে সব জানা হয়ে গেছে। সে যা হোক বাংলা একাডেমি এবারও নিজের উদ্দেশ্য আদর্শকে সমুন্নত রেখে মেলার সৌরভ বৃদ্ধি করার মানসে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মেলা শুরু করেছে।

পাঁচ. একটা কথা এখানে নিঃসন্দেহে বলা যায়- দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত লেখক, কবি, সাহিত্যিক ও গবেষকদের প্রবন্ধ, নিবন্ধ, গল্প, উপন্যাস ও কবিতা ছাপিয়ে এদেরকে আলোর মুখোমুখি উপস্থাপন করছে দেশের জাতীয় ও স্থানীয় খবরের কাগজ, লিটল ম্যাগ অর্থাৎ পাক্ষিক, মাসিক, ত্রৈমাসিক ও ষান্মাসিক বিশেষ কাগজগুলো। এক্ষেত্রে দৈনিক খবরের কাগজের সম্পাদকরা এসব নবীন লেখকদের জাতীয় পর্যায়ে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কাজটি সুচারুরূপে সম্পাদন করে যাচ্ছেন। আজ নবীন কবি ও লেখকদের মধ্যে যারা যে মাধ্যমেই মেলায় আত্মপ্রকাশ করুক না কেন তাদের একটা বিরাট হার্ডেল ক্রস করতে হচ্ছে বা স্ট্রাগল করতে হচ্ছে। যাকে আমরা বলি নৈঃশব্দিক সংগ্রাম। এত কিছুর পরও নবীনদের গায়ে একটা তকমা এঁটে বসে তা হলো ‘ভূঁইফোড়’। প্রবীণ বা খ্যাতিমান লেখকের বইয়ের রমরমা বাজারে তাই প্রথম দিকে এসব নবীন লেখকদের সৃজিত বইগুলো নেতিয়ে পড়ে এবং পরে মেলায় একসময় অনাদৃত হয়ে আপন আলয়ে ফিরে যায় বন্ধ্যাত্ব নিয়ে আর শেষমেশ বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিতদের মাঝে উপহার হিসেবে বিলোতে থাকে নিজের পরিচয় দিতে। সোজা কথা একজন নবীন লেখক বা কবিকে তাই প্রাথমিক স্তরে একটা বিশাল বৈরীক্ষেত্র পাড়ি দিতে হয়। তারপর কোনোদিন আলোকময় হয়ে ওঠে নিজস্ব দীপ্তিতে, আপন সৌষ্ঠবে অথবা চলমান প্রথায় নিজের ইচ্ছেয় হোক বা অনিচ্ছায় গা ভাসিয়ে দিয়ে।
আমার আলোচ্য বিষয় এসব বিষয় নিয়ে আবর্তিত হতে নয় বরং নবীন কবি, লেখক, সাহিত্যিক ও গবেষকদের প্রকাশিত বইয়ের ভবিষ্যৎ বা এর পরিণতি নিয়ে। আসলে বিষয়টা কম বেশি মেলা সম্পর্কিত আয়োজক, প্রকাশক, নবীন, প্রবীণ লেখক ও পাঠককে নিঃসন্দেহে ভাবাচ্ছে ও ভাবাবে যতদিন মেলা চলতে থাকবে সে রাজধানী হোক বা শহর মফস্বলে হোক। মেলা শেষে সবাই একটা বিচার বিশ্লেষণে অবশ্যই নেমে পড়বে এবং শেষমেশ তা মানসিক উৎকর্ষতা থেকে আর্থিক উৎকর্ষতায়। কে কতটা উৎরে গেল এই সমরে। তবে নতুন লেখক, কবি সাহিত্যিক ও গবেষক সবাই জানে নিজ উদ্যোগে যারা বই প্রকাশ করেছেন তারা লাভের মুখ দেখবেন না কিন্তু নিজেকে প্রকাশ করার একটা সুযোগ যে তৈরি করতে পেরেছেন অন্তত, সেখানেই খুঁজে পান শ্লাঘা, আত্মতুষ্টির মোক্ষম পথ। তবে এদিক দিয়ে প্রকাশকের লাভ বৈ লোকসানের কোনো সুযোগ থাকে না। যা যায় কবি লেখকদের ঘাড়ের ওপর দিয়ে যায়। কিন্তু যে কথা দিয়ে শুরু করেছিলাম তা হলো এবার অনেক প্রতিভাবান ও প্রতিশ্রæতিশীল কবি লেখকের লেখা পাণ্ডুলিপিতেই রয়ে গেছে প্রকাশিত হয়নি আর্থিক অনটনের কারণে। পাঠককুল ও প্রকাশিত বইয়ের যে মূল্য তাতে বই কিনতে অনীহা প্রকাশ করে থাকে। এক্ষেত্রে বই কেনার চেয়ে মেলায় ঘুরে আনন্দ পেতে ভালোবাসে। যদি কিছু বই কিনতে হয় পাঠককুল প্রথিতযশা খ্যাতিমান প্রবীণ কবি লেখকদের বই কিনে নেয়, নবীন লেখক ও তাদের নতুন বই পড়ে থাকে মেলার স্টলে বইয়ের রেখে একটা বোঝা হয়ে। শেষান্তে হয় উপহার উপঢৌকন হিসেবে না হয় ভাঙারির দোকানে জায়গা করে নেবে নিয়তিকে মেনে। এ পরিণতি নতুন নয় বড় প্রাচীন। এ বিষয়ে আমাদের আরো ভাবতে হবে কীভাবে নবীন কবি, লেখকদের দৈন্যদশা থেকে বের করা আনা যায়। সরকারকেও এ বিষয়ে ভাবতে হবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে যাতে নবীন কবি, লেখক, সাহিত্যিক ও গবেষক প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে দীপ্যমান হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়