চট্টগ্রামে ফয়েস লেক বেসক্যাম্প উদ্বোধন

আগের সংবাদ

কাটবে যেসব সংকট : আইএমএফের ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ

পরের সংবাদ

সংসদে রাশেদ খান মেনন : দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেয়নি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : যে সব দেশ উন্নয়নের পথে রয়েছে তারা দুর্নীতি নিরোধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশ পারে নাই বলে মন্তব্য করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি নিয়ে কথা বললে সরকার রাগান্বিত হয়। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
রাশেদ খান মেনন বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতিকে জটিল করে তুললেও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা থেকে সরকার পথচ্যুত হয় নাই। তবে অর্থনীতির প্রয়োজন মেটাতে আইএমএফ-এর কাছ থেকে ঋণ নিতে গিয়ে তাদের শর্ত পূরণ করতে পাবলিক ইউটিলিটি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ¦ালানির মূল্য বৃদ্ধিসহ যেসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে তা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়াকে টেনে ধরছে। বিইআরসিকে এড়িয়ে সরকারের সাম্প্রতিক সময়ে গ্যাসের ৮২শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি শিল্প খাতকে গভীরভাবে আঘাত করবে সন্দেহ নাই। এবং এই আঘাত শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের উপর এসে বর্তাবে। বিদ্যুৎ-জ¦ালানি খাতে মূল্য সমন্বয়ের নামে মূল্যবৃদ্ধি উপরতলার বড়লোকদের জন্য কিছু যায় আসে না। কিন্তু সাধারণ মধ্যবিত্ত-নি¤œবিত্তের উপর এই আঘাত নিদারুণভাবে পড়ছে।
মেনন বলেন, বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি নিয়ে এই সংসদে বহু আলোচনা হয়েছে। আমি তার পুনরাবৃত্তি করতে চাই না। কারণ এতে সরকার কেবল অস্বস্তিবোধ করেন না, রাগান্বিতও হন। এটা ঠিক যে এই সরকার শতভাগ গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন। কিন্তু তার অর্থ এ নিয়ে কোনো জবাবদিহি চাওয়া যাবে না। সর্বশেষ সরকার বিদ্যুৎ আইনের যে সংশোধনী এনেছেন তা এই ক্ষেত্রে জনগণের প্রশ্নের অধিকারকে কেড়ে নেয়া হয়েছে। এখন আর বিদ্যুৎ-জ¦ালানির মূল্যবৃদ্ধির জন্য গণশুনানির প্রয়োজন হবে না। সরকার চাইলেই যে কোনো সময় মূল্যবৃদ্ধি করতে পারবে।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বৈশ্বিক সংকটের কারণে সব দেশেই মূল্যস্ফিতি ঘটেছে। বাংলাদেশ এখনো এই মূল্যস্ফিতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। তবে বাজারে যে নিদারুণ ডলার সংকট চলছে তার পরিণতি আমদানি খাতকে আঘাত করছে। আমি আজ আর খেলাপি ঋণ ও অর্থ পাচার নিয়ে বিশেষ কথা বলব না। তবে দুর্নীতি নিয়ে কথা বলতেই হয়। আমি এর আগে বলেছি কেবল দুর্নীতি রোধ করা গেলেই আমাদের প্রবৃদ্ধি ২.৫ ভাগ বাড়ত। সম্প্রতি সিপিডির এক জরিপে বলা হয়েছে দুর্নীতি ব্যবসার পথে প্রধান বাধা। যে সব দেশ উন্নয়নের পথে রয়েছে তারা দুর্নীতি নিরোধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। চীন তার পার্টির দেড় লাখ সদস্যকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছে। যার মধ্যে পলিটব্যুরো সদস্যও রয়েছে। ভিয়েতনাম তার উপপ্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করেছে। কিন্তু আমরা মন্ত্রী-আমলাদের ক্ষেত্রে কি পেরেছি, পারি নাই।
সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন তার বক্তব্যে ২৫ মার্চ জিয়াউর রহমানের কার্যক্রমের উল্লেখ করে বলেন, জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের জানজুয়ারের নির্দেশে সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাস করতে যান। কিন্তু অগ্রাবাদে গিয়ে তিনি জনগণের প্রতিরোধের মুখে পড়েন। সে কারণে তিনি ফিরে যান এবং ভারতে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করতে থাকেন। সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বিএনপির আমলের দুঃশাসনের চিত্রও তুলে ধরেন। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় আরো অংশ নেন, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, সেলিমা আহমাদ ও মোতাহার হোসেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়