মাদকবিরোধী অভিযান : রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৭০

আগের সংবাদ

রাজশাহীর জনসভায় শেখ হাসিনা : আ.লীগ কখনো পালায় না

পরের সংবাদ

ফেনীতে কোটি টাকার কুল উৎপাদনের সম্ভাবনা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সৈয়দ মনির আহমদ, সোনাগাজী (ফেনী) থেকে : মানবদেহের শক্তি জোগান, সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা, যকৃতের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি, হজম শক্তি বৃদ্ধি, ত্বক কোমল করা ও ক্ষুধাবর্ধকসহ ১০টি পুষ্টিগুণ রয়েছে কুলে। প্রতিটি কুলে মানবদেহের জন্য উপকারী বিভিন্ন পরিমাণে জলীয় অংশ, খনিজ পদার্থ, আমিষ, চর্বি, শর্করা, ভিটামিন সি, ভিটামিন-বি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম ও পটাসিয়াম থাকে। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, দেশে চাহিদার তুলনায় কুলের উৎপাদন বেশি। ফেনীতেও দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে নানা জাতের কুল।
জানা যায়, সোনাগাজীর মেজর (অব.) মো. সোলেমানের ৫০০ শতক, পৌর মেয়র খোকনের ৪০০ শতক, ফেনী সদরের কালিদহ পাহারিয়া এগ্রোতে ৭০০ শতক, ধর্মপুরে ফরিদ উদ্দিন মাসুদ ৫০০ শতক, ফাজিলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মজিবুল হক রিপন ৮০ শতক ও আমিন বাজারের পাশে আরো কয়েকজন মিলে ২০০ শতক জমিতে কুলের আবাদ করেছেন। এছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে আরো কয়েকটি বাণিজ্যিক ও সৌখিন কুলবাগান। এখানকার কুল খেতে সুস্বাদু, মিষ্টি, রসালো ও সাইজে অন্য এলাকার কুলের চেয়ে বড়।
এ ব্যাপারে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় কোটি টাকার কুল উৎপাদন হবে। ফেনীর ধর্মপুরের সৌখিন কৃষক মাসুদের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী, আপেল কুল, বাউকুলসহ ৫ প্রজাতির কুল।
ভোরের কাগজকে তিনি জানান, গত বছর ৪০০ শতকের পর এবার আরো ১০০ শতক জমিতে কুলচাষ বাড়িয়েছি। সে বছর ফলনের পাশাপাশি দামও ভালো ছিল।
এবার চলতি বছরে সব মিলিয়ে লাখখানেক টাকা খরচ হলেও মৌসুমের শুরুতেই দেড় লাখ টাকার মতো কুল বিক্রি হয়েছে। এছাড়া তিনি মধ্যপ্রাচ্যের ত্বীন ফল চাষ করেও ব্যপক আলোচিত হয়েছিলেন।
সোনাগাজী উপজেলার মেজর (অব.) মো. সোলেমানের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বারোমাসি আম, নারিকেল, সুপারি, কুলসহ অনেক ধরনের ফলের গাছ। এছাড়া মাছের চাষও করেন তিনি। ১৯৮৬ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যাওয়ার পর তিনি বাণিজ্যিকভাবে এসব চাষ শুরু করেন। তার বাগানে প্রায় ৫০০ শতকজুড়ে নানান জাতের কুল চাষ করেছেন। ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হওয়ায় তিনি অন্যদেরও এ চাষে উদ্বুদ্ধ করেছেন।
তিনি বলেন, আমাদের উৎপাদিত কুল ফেনী ছাড়াও পার্শ্ববর্তী চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ল²ীপুর ও কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে সরবরাহ হচ্ছে। সরকারকে ক্ষুদ্র চাষিদের পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে, উৎসাহ দিতে হবে। তবেই এসব ফলের চাষাবাদ বাড়বে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের ফেনীর উপপরিচালক মো. আকরাম উদ্দিন ভোরের কাগজকে বলেন, ফেনীতে কুলের বাণিজ্যিক আবাদ বাড়ছে। কালিদহ পাহারিয়া এগ্রোসহ কয়েকটি কুলবাগান পরিদর্শন করে দেখা যায়, কুলের ফলন অন্য অঞ্চল থেকে ভালো। এই অঞ্চলের মাটি কুল চাষাবাদের জন্য দারুণ উপযোগী।
পতিত জমিতে কুলচাষ করে ইতোমধ্যে অনেক চাষি আর্থিকভাবে সচ্ছল হচ্ছেন। অন্যদিকে পুষ্টির ঘাটতি পূরণসহ জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন কুলচাষিরা। পতিত জমিতে চাষ করে কৃষিতে নতুন বিপ্লব সম্ভব। গড়ে উঠেছে উচ্চফলনশীল জাতের কুলবাগান। ভরা মৌসুমে পাকা-কাঁচা কুলে থোকায় থোকায় ভরে গেছে বাগানগুলো।
তিনি জানান এখানে বল সুন্দরী, কাশ্মীরি, ভারত সুন্দরী ও টক-মিষ্টি কুলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় জেলায় ছোট বড় বাগান গড়ে উঠেছে।
অল্প সময়ে কুলচাষ একটি লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় কৃষক ও শিক্ষিত বেকার যুবকরা কুলচাষে ঝুঁকছেন। চলতি মৌসুমে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে নতুন নতুন কুলবাগান বেড়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়