শিমুর মেয়েকে বাবা : ‘মা ভুল করেছি মাফ করে দিও’

আগের সংবাদ

স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি : যে ফর্মুলায় স্মার্ট বাংলাদেশ

পরের সংবাদ

বাণিজ্যিকভাবে ব্রোকলি চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মর্তুজা ফারুক রূপক মেহেরপুর থেকে : প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’, ক্যালসিয়াম ও লৌহসমৃদ্ধ শীতকালীন সবজি ব্রোকলি। অনেকেই সবুজ ফুলকপিও বলে থাকেন। তবে সাদা রংয়ের ফুলকপির চেয়ে সুস্বাদু ও বেশি পুষ্টিগুণে ভরপুর ব্রোকলি। গত মৌসুমে পরীক্ষামূলক চাষ হলেও এবার বাণিজ্যিকভাবে চাষ করেছে জেলার বেশ কিছু কৃষক।
অল্প খরচ, চাহিদা বেশি, দামও ভালো পাওয়ায় ব্রোকলির আবাদের দিকে ঝুঁকছেন জেলার কৃষকরা। মেহেরপুরে জেলার মাটির সবজি আবাদের জন্য খুবই উর্বর হওয়ায় ভিন্ন চাষে আশার আলো দেখছে কৃষি বিভাগ।
চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ৫০ বিঘার মত ব্রোকলি চাষ হয়েছে। ভালো দাম পাওয়ায় আগামীতে আরো বেশি ব্রোকলি চাষ করবে বলে জানিয়েছেন অনেক কৃষক।
এ ব্যাপারে মেহেরপুরের গাংনীর গাড়াডোব গ্রামের কৃষক জাকারুল ইসলাম ভোরের কাগজকে জানান, তিনি ফুলকপি আর বাঁধাকপির আবাদ করতেন। এ আবাদ এলাকার সবাই এক সঙ্গে করায় অনেক সময় লোকসান হতো। পরে স্থানীয় পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতির (পিকেএসএফ) উদ্যোগে তিনি নতুন সবজি হিসেবে ব্রোকলি আবাদ শুরু করেন।
৪ বছর আগে তিনি প্রথমে এক বিঘা জমিতে ব্রোকলি চাষ করে লাভ- লোকসানের পার্থক্য করেন। প্রথমে ব্রোকলির বীজসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ বিনামূল্যে প্রদান করে পিএসকেএস নামক ওই সংস্থাটি। শুরুতে তিনি এক বিঘা জমিতে খরচ বাদ দিয়ে ৫০ হাজার টাকা লাভের মুখ দেখেন। সেই থেকে এখন তিনি ব্রোকলির আবাদ করছেন।
সবজি চাষি আবুল কাশেম জানান, একই জমিতে বারবার একই ফসলের চাষ করা যাবে না বলে কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ দেয়া হয়। তাই নতুন সবজি হিসেবে ব্রোকলির বীজ সংগ্রহ করে দশ কাঠা জমিতে পরীক্ষামূলক চাষ করে গত বছর লাভ পেয়েছি।
এ বছর এক বিঘা জমিতে ব্রোকলি চাষ করেছি। বিক্রি শুরু হয়েছে। বাজারে চাহিদা ও দাম ভালো আশা করছি লাভবান হব। হিন্দা গ্রামের কৃষক শাজাহান আলী জানান, কয়েকজনের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে ব্রোকলি আবাদ করেছেন।
তবে সাদা রংয়ের ফুল কপির চেয়ে রোগ বালাই ও খরচ কম। বাজারেও চাহিদা রয়েছে।
কৃষি বিভাগের হিসেব মতে, প্রতি শতক জায়গায় ২৫-৩০ দিন বয়সের ২০০টি চারা রোপণ করে মাত্র ৫০-৬০ দিন পরই ৪০ মণ ব্রোকলি উৎপাদন করা সম্ভব। ব্রোকলি সাধারণত দোআঁশ ও এঁটেল দোআঁশ মাটিতে ভালো হয়। মধ্য ভাদ্র-মধ্য পৌষ এর মধ্যে বীজ বপন ও চারা রোপণ করতে হয়। ২৫-৩০ দিন বয়সের চারা ৫০ সেন্টিমিটার দূরত্বে রোপণ করতে হয়। রাসায়নিক সারের পরিবর্তে গোবর সার বা কেঁচো কম্পোস্ট সার ব্যবহার করলে ভালো ফলন হয় এবং রোগ বালাই কম হয় বরে জানান পলাশীপাড়া সংস্থার কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা রাব্বি।
পুষ্টিবিদ জান্নাতুন ফেরদৌস জানান, ব্রোকলি একটি ক্রসিফেরি গোত্রের অন্তর্ভুক্ত শীতকালীন সবজি। এতে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফোলেট, আঁশ আছে। এতে হৃদরোগ, বহুমূত্র এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। ব্রকলি জারণরোধী ভিটামিন এ এবং সি সরবরাহ করে কোষের ক্ষতি রোধ করে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শংকর কুমার মজুমদার ভোরের কাগজকে জানান, ব্রোকলি লাভজনক হিসেবে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এবং সবার কাছে সমাদৃত বটে আমাদের দেশে।
কারণ কপি গোত্রের অন্যান্য সবজির চেয়ে ব্রোকলি অপেক্ষাকৃত বেশি পুষ্টি সমৃদ্ধ ও ক্যান্সার প্রতিরোধক। মেহেরপুরের কয়েকজন চাষি ব্রোকলি আবাদ করেছেন। তবে এর তেমন কোনো পরিসংখ্যান এখন পর্যন্ত করা হয়নি। কারণ মেহেরপুরের কিছু কৃষক পরিক্ষামূলক হিসেবে চাষ করছেন। তবে যারা ব্রোকলি চাষ করেছেন তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তারা সবাই ভালো ফলন পেয়েছেন এবং লাভবান হচ্ছেন। আমরাও ব্রোকলির চাষ বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়