হাইকোর্টে বিএনপি নেতা খোকন ও মিলনের জামিন

আগের সংবাদ

ভোটের আগাম প্রচারে আ.লীগ : সভা-সমাবেশে উন্নয়ন তুলে ধরে নৌকায় ভোট চাওয়া হচ্ছে

পরের সংবাদ

৮০ শতাংশ প্রস্তুতি সম্পন্ন : ঢাবিতে পুরনো আমেজে বিদ্যাদেবীর আবাহন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রাফিউজ্জামান লাবীব : বিদ্যা ও সংগীতের দেবী সরস্বতীর কৃপা-লাভের আশায় প্রতি বছরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হল মাঠে বিভিন্ন বিভাগের অংশগ্রহণে পূজার আয়োজন করা হয়। কিন্তু করোনা ও ওমিক্রণের ছোবলে গত দু’বছর অনাড়ম্বরভাবে পালিত হয়েছে পূজা। তবে সব ধকল কাটিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সেই পুরনো আমেজে ফিরছে সরস্বতী পূজা।
হিন্দুধর্মের রীতি অনুসারে, সরস্বতী বিদ্যা, বাণী ও সুরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে সাদা রাজহাঁসে চেপে দেবী সরস্বতী জগতে আসেন। আর বিদ্যা, বাণী ও সুর পাওয়ার আশায় সরস্বতীর পূজায় নিবেদিত হন পূজারিরা।
পূজা উদযাপন উপলক্ষে দিনরাত পরিশ্রম করে প্রস্তুতি সম্পন্ন করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ বছর পূজায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউট, চারুকলা অনুষদ এবং হল প্রশাসনের কেন্দ্রীয় প্রতিমাসহ মোট ৭৩টি পূজা মণ্ডপ বসবে। হল মাঠে বিভাগগুলোর মণ্ডপ, উপাসনালয়ে কেন্দ্রীয় মণ্ডপ এবং চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের তৈরি করা হলের পুকুরে বৃহৎ এবং সবথেকে আকর্ষণীয় প্রতিমাটি বসবে।
চারুকলা অনুষদের ২০১৫-১৬ এবং ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের তত্ত্বাবধানে এবারের প্রতিমাটি আগের সব প্রতিমার থেকে বড় বলে উল্লেখ করেছেন কারুকার্য বিভাগের শিক্ষার্থী তন্ময় মণ্ডল। তিনি বলেন, আমাদের তৈরি করা এই প্রতিমাটি হবে আগের তৈরিকৃত সব প্রতিমা থেকে বড়। এটি বসা অবস্থায় আছে এবং উচ্চতা ৩২ ফিট। আমরা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে কাজ শুরু করেছি।
এর আগে করোনার কারণে গত দুবছর হলের কেন্দ্রীয় উপাসনালয়ে একটি প্রতিমার মাধ্যমে পূজা সম্পন্ন হয়েছিল। গতকাল মঙ্গলবার এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত পূজা প্রস্তুতির ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। বাকি কাজ আজ রাতের মধ্যেই সম্পন্ন হবে বলে জানান তারা।
আগামীকাল সকাল সাড়ে ৬টায় প্রতিমা স্থাপনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পূজার কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর সাড়ে ৭টায় বাণী বন্দনা, ৮টা ১০মিনিটে পুষ্পাঞ্জলি, সাড়ে ১১টায় প্রসাদ বিতরণের মাধ্যমে পূজার কার্যক্রম শেষ হবে। এরপর বিকাল ৪টায় অতিথি আপ্যায়ন করা হবে। এছাড়াও পূজা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ও জগন্নাথ হলে আবাসিক শিক্ষার্থী মিঠুন চন্দ্র রায় বলেন, করোনার কারণে দুবছর জাঁকজমকভাবে পূজা উদযাপন করতে পারিনি। তবে এবার সেরকম কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। ব্যাপক আমেজে উদযাপিত হবে এবারের পূজা। আমি যেহেতু হলে থাকি, প্রতিনিয়তই পূজার প্রস্তুতি দেখে পুলকিত হচ্ছি।
এদিকে পূজার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত সিসি ক্যামেরা, পুলিশ, আনসার ও হল প্রশাসনের নিরাপত্তা কর্মীরা কাজ করবেন, যাতে কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা না ঘটে। পূজার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা হলের আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. রতন চন্দ্র ঘোষ ভোরের কাগজকে বলেন, নিরাপত্তার জন্য পূজার সময়ে অতিরিক্ত ১৬টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। হলের প্রবেশ পথ, পূজা মণ্ডপের আশপাশে এবং হলের প্রধান উপাসনালয়ে এসব সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। এই সিসি ক্যামেরাগুলোকে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান করা হবে, যেন সুযোগসন্ধানী কেউ অপ্রত্যাশিত কিছু করার সুযোগ না পায়।
পূজার প্রস্তুতির বিষয়ে হল পূজা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও হলটির আবাসিক শিক্ষক দেবদাস হালদার ভোরের কাগজকে বলেন, আমরা ইতোমধ্যে পূজার প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করেছি। বাকি কাজ চলমান আছে। সবার মধ্যেই একটা উৎসবমুখর পরিবেশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যদিও এটি হিন্দু শিক্ষার্থীদের পূজা, কিন্তু বর্তমানে এটা এই গণ্ডি পেরিয়ে সব ধর্মের শিক্ষার্থীদের কাছে একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে।
পূজা ও সার্বিক বিষয়ে পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহিরলাল সাহা ভোরের কাগজকে বলেন, দুবছর পর আমরা পুরনো সেই আমেজে ফিরতে পারছি। এটি অত্যন্ত আনন্দদায়ক। আমরা ইতোমধ্যে সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছি। পূজা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। পূজার পরেরদিন ছোট পরিসরে একটি সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়