প্রধান শিক্ষককে পিটুনি : আ.লীগ নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি

আগের সংবাদ

ভোক্তা অধিদপ্তরের মতবিনিময় সভা : আমদানি স্বাভাবিক না থাকলে বাজার নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে

পরের সংবাদ

যুক্তিতর্ক শেষ : জাপানি দুই শিশু কার জিম্মায় থাকবে, জানা যাবে ২৯ জানুয়ারি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জাপানি বংশোদ্ভুত সেই দুই শিশুর অভিভাবকত্বের আইনি লড়াইয়ের মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। শিশু দুটি বাবার, নাকি মায়ের জিম্মায় থাকবে সে বিষয়ে রায়ের জন্য আগামী ২৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল রবিবার ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমানের আদালতে মামলাটির উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে এ দিন ধার্য করা হয়।
যুক্তিতর্কে জাপানি মা নাকানো এরিকোর পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির আদালতে বলেন, ঢাকায় আনা দুই মেয়েদের ১৮ বছর হতে এখনো ৫-৭ বছর বাকি। তাই আইনানুসারে প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তারা মায়ের জিম্মায় থাকার অধিকার রাখে। এছাড়া টোকিয়োতে বিশ্বের সেরা স্কুল-কলেজ রয়েছে। মায়ের কাছে থাকলে তারা ভালো থাকবে। ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়তে পারবে। মেয়েরাও চায় মায়ের কাছে থাকতে। এছাড়া বাবাকে মেয়েদের খরচ দেয়ার কথা বলা হলেও তিনি উচ্চ আদালতের আদেশ মানেননি।
অন্যদিকে জাপানি বাবা ইমরান শরীফের পক্ষের আইনজীবী নাসিমা আক্তার বলেন, বাদী-বিবাদীর বিয়ে মুসলিম শরিয়তে হয়েছে। এতে বাচ্চাদের জিম্মার বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত মেয়ে সন্তান মায়ের কাছে থাকবে। তবে আইনে মায়ের জিম্মা হারানোর বিষয়ে এটাও বলা আছে, কোনো মা যদি বৈবাহিক থাকা অবস্থায় স্বামীর আবাসিকস্থল থেকে দূরে বসবাস করেন তাহলে মা সন্তানদের জিম্মা হারাবেন।
বাচ্চাদের মঙ্গলের বিষয়ে তিনি বলেন, মা জেরায় স্বীকার করেছেন, প্রতিদিন তিনি ১১ ঘণ্টা বাইরে থাকেন। শিশুরা সময় পান ৩-৪ ঘণ্টা। অন্যদিকে মেয়েদের জন্য বাবা ইমরান শরীফ তুলনামূলক বেশি সময় দেন। একমাত্র জন্মদান বাদে ছোটবেলা থেকে তাদের দৈনন্দিন যতেœর জন্য বেশি সময় দিয়েছেন। এখন জীবনের সবকিছু ছেড়ে দিয়ে বাচ্চাদের প্রতি ভালোবাসার জন্য লড়ে যাচ্ছেন বাবা। শিশুদের বাবা সম্পূর্ণ ইংলিশ মিডিয়ামে পড়েছেন। বাবার গাইডলাইনেই মেয়েরা বড় লেখাপড়ায় বড় হয়েছে। এছাড়া জাপানের আইনে চরমভাবে বর্ণ বৈষম্য করা হয়। সেখানে ভারতীয় উপমহাদেশের যে কাউকে তাচ্ছিল্য করা হয়। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কেউ ভালো সরকারি চাকরিতে ঢুকতে পারে না। অথচ বাংলাদেশে বিদেশি কেউ এলে তাদের যথাযথ মর্যাদা করা হয়। আমাদের দেশ কি এতোটাই খারাপ যে, দুইটা শিশুর ভরণপোষণ করতে পারবে না। অন্যদিকে বিচারাধীন অবস্থায় পাবলিক সেন্টিমেন্ট নেয়ার জন্য ভয় দেখিয়ে মা সংবাদ সম্মেলনে পাশে থেকে যেটা বলে দিচ্ছে, বড় মেয়ে সেটাই বলছে।
এদিকে শুনানি শেষে জাপানি মা এরিকো গণমাধ্যমে হাত জোড় করে মেয়েদের নিজের জিম্মায় নেয়ার আকুতি জানান। বাবা ইমরান শরীফও ছলছল চোখে মেয়েদের নিজের কাছে বাংলাদেশে রাখতে নিবেদন করেন। এখন চোখ মামলার রায়ের দিকে।
উল্লেখ্য, বিয়ের ১২ বছর পর সম্পর্কে টানাপোড়নের জের ধরে ২০২১ সালের জুলাই মাসে জেসমিন মালিকা (১৩) ও লাইলা লিনা (১১) নামে দুই মেয়েকে ঢাকায় নিয়ে আসেন বাবা বাংলাদেশি প্রকৌশলী ইমরান শরীফ। এরপর একই মাসে জাপানি মা চিকিৎসক নাকানো এরিকো দুই মেয়েকে ফিরে পেতে বাংলাদেশে আসেন। এরপর তিনি হাইকোর্টে রিট করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়