মাছরাঙা টেলিভিশনের সংবাদ উপস্থাপিকা ডা. নাতাশার মৃত্যু

আগের সংবাদ

৫০ বছরের অংশীদারিত্ব উদযাপনকালে বিশ্বব্যাংক এমডি : বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের সর্ম্পক নতুন মাইলফলকে

পরের সংবাদ

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী : নতুন বইয়ে ধর্মবিরোধী কিছু নেই

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : একটি অপশক্তি দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, আমাদের নতুন পাঠ্যবইয়ে কোথাও ধর্মবিরোধী কোনো বিষয় নেই। কারণ আমরা নৈতিকতার শিক্ষায় বিশ্বাস করি এবং ধর্মীয় শিক্ষা সেই নৈতিকতার মূল স্তম্ভ। অথচ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক অপপ্রচার চলছে। বলা হচ্ছে, আমাদের নতুন বইয়ে ইসলাম ধর্মবিরোধী বিষয় আছে। ইসলাম ধর্ম সংক্রান্ত সব বিষয় সরিয়ে দিয়ে ভিন্নধর্মী জিনিসপত্র আনা হয়েছে। এসব একেবারে অসত্য। তিন বছর আগের ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি বইয়ের ছবি দিয়ে এই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। যে বইটি এখন সেখানেও চলে না। একটা অপশক্তি এ অপপ্রচার চালাচ্ছে।
পাঠ্যবইয়ে ভুলের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যারা বইয়ের ভুল শনাক্ত করেছেন তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। নবম-দশম শ্রেণির বইয়ে কিছু ভুল শনাক্ত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বইগুলো খুব মনোযোগ দিয়ে পড়েছে বলেই ভুলটি ধরা পড়েছে। আমি শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ডেনমার্কের সাবেক প্রধানমন্ত্রী লার্স রাসমুসেন বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে নারী শিক্ষা দারুণ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। বিশেষ করে আফগানিস্তান, ইরাক, মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে নারীশিক্ষা বেশ কঠিন। তাদের জন্য এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন দারুণ সুযোগ তৈরি করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি রুবানা হক বলেন, বিগত বছরগুলোতে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এর দারুণ অগ্রগতি হয়েছে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন এখনো চলমান। এখানকার শিক্ষার্থীরা বিশ্বের নানান দেশে সফলতার স্বাক্ষর রাখছেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ব্রিটিশ ফার্স্ট লেডি চেরি ব্লেয়ার, সমাবর্তন বক্তা ছিলেন নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ইমেরিটাস জন সেক্সটন। সমাবর্তনে ৬ জনকে এনডি মাতসুই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৮ দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। করোনার কারণে বিগত তিন বছর সমাবর্তন হয়নি। এবার ২০২০, ২০২১, ২০২২ শিক্ষাবর্ষের ৩০০ স্নাতককে সনদ প্রদান করা হয়। এরপর বিকালে ‘চট্টগ্রাম বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি (সিবিইউএফটি)’ নামের বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ সময় তিনি বলেন, আমরা প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চতর পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় রূপান্তর ঘটাচ্ছি। আমরা চাই প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে অবশ্যই ভাষা, আইটি, উদ্যোক্তা হওয়া শেখাতেই হবে। স্পেশাল কোর্স দিতে হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ করবেন বলেছিলেন, করেছেন। তিনি বলেছেন স্মার্ট বাংলাদেশ করবেন। আমরা যেন সেই স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট নাগরিক তৈরি করতে পারি। যারা হবে সৎ, দক্ষ, সহমর্মী, পরমতসহিষ্ণু, অসা¤প্রদায়িক। যারা যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহস নিয়ে এগিয়ে যাবে এবং প্রোঅ্যাকটিভ হবে।
নগরীর টাইগারপাসের নেভি কনভেনশন হলে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, পরিচালক মো. ওমর ফারুক, এফবিসিসিআইর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। গেস্ট অব অনার ছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। সভাপতিত্ব করেন সিবিইউএফটি ট্রাস্টি বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন চৌধুরী। নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমাদের পোশাক শিল্প প্রতিযোগিতা করছে উন্নত দেশের সঙ্গে। উন্নত প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মেলাতে দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। এ স্বপ্নযাত্রা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চাহিদা পূরণে। তিনি জানান, আগামী মার্চে এই শিক্ষপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। চারটি বিভাগে ৩৫ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন দিয়েছে ইউজিসি। প্রথম সেমিস্টারে মোট ১৪০ জন উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবেন। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমাদের।
এর আগে দুপুরে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকা ফটক খুলে ভিতরে ঢুকে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। এরপর চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষামন্ত্রী। এ সময় তিনি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে চারুকলার সংস্কারে সাধ্যমতো প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানান। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা পরিবেশ উন্নত করতে শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রী দু’জনেই আশ্বাস দেন। স্থানীয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ, মানসম্মত আবাসনসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরীন আখতার, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য বেনু কুমার দে, প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়াসহ ৬০ জন শিক্ষার্থী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়