চট্টগ্রাম অফিস : মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সাবেক ডিভিশনাল স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর কামাল উদ্দীন আহমদ আর নেই। গতকাল শুক্রবার বিকাল চারটায় নগরীর আসকারদীঘির পাড়ে নিউ লাইফ হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি স্ত্রী, পাঁচ কন্যা, জামাতা, চারভাইসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। আজ শনিবার সকাল ন’টায় প্রয়াতের মরদেহ তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে রাখা হবে। সকাল ১০ টায় হযরত মিসকিন শাহ (র.) মাজার সংলগ্ন মাঠে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে তার নিজ গ্রাম ফটিকছড়ির ধর্মপুর গ্রামের আজাদীবাজারস্থ মুন্দার বাড়িতে। বাদ জোহর দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
এডভোকেট কামাল উদ্দীন আহমদ ১৯৪২ সালের ১ জানুয়ারি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি ধর্মপুর গ্রামের মুন্দারবাড়ির এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। স্কুল জীবনেই ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের সময় থেকে তিনি আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬২ সালে আইয়ুব খানের হামুদর রহমান শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে অগ্রজদের সঙ্গে আন্দোলন করেন। আর এজন্য তাকে কারাবরণ করতে হয়। ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক ছয় দফা এবং ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ফটিকছড়ির ধর্মপুর গ্রাম এলাকায় একজন সক্রিয় সংগঠকের ভূমিকা পালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের পর ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় সালিশি আদালতের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন।
১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদার নেতৃত্বে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী গাড়ি আক্রমণের ঘটনা মামলার অন্যতম সাক্ষী তিনি। ১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম আইন কলেজ থেকে তিনি আইন পাস করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি আইন পেশা শুরু করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।