আইনমন্ত্রী : মানবাধিকারের উন্নতি হওয়ায় র‌্যাব নতুন নিষেধাজ্ঞায় পড়েনি

আগের সংবাদ

পাহাড়ে সন্ত্রাসী-জঙ্গি একাকার : স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর যোগসাজস, দুর্গম হওয়ায় অভিযান চালানো কঠিন

পরের সংবাদ

অগ্নিবর্ণ সাতটি ঘোড়া : জীবনবোধের কথাকাব্য

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বর্তমান সময়ের অসাধারণ গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, সুপরিচিত শ্যামল দত্ত একজন প্রথিতযশা সাংবাদিক, যিনি ১৯৮৭ সাল থেকে অর্থাৎ দীর্ঘ তিন দশকের ওপরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত। দীর্ঘ প্রায় দুই দশক ধরে তিনি ভোরের কাগজের সম্পাদক। আদ্যোপান্ত একজন সাংবাদিক মানুষ হলেও এ কথাও ঠিক যে এ মানুষটার ভেতরে রয়েছে বহুমাত্রিক রূপ। তিনি সুবক্তা, একজন অসাধারণ উপস্থাপক, একজন সাহিত্যিক, লেখক- সর্বোপরি আশির দশকের একজন কবি। শ্যামল দত্তের রয়েছে মৌলিক গ্রন্থ, একাধিক কবিতার বইসহ পঞ্চাশের অধিক গ্রন্থ।
চেতনা, চিন্তন ও মননে বহুধা অভিধায় সিক্ত একজন শ্যামল দত্তের কবিরূপকে বের করে এনে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিতে হলে ফিরে যেতে হয় আশির দশকের কবির জ্যোৎস্নায় ভাসা কাব্যঘরে। আজকে কবির কাব্যগ্রন্থ ‘অগ্নিবর্ণ সাতটি ঘোড়া’ নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি ব্যবচ্ছেদ করার মধ্য দিয়ে কবিকে তার বহুবিধ প্রতিভার ভেতর থেকে বের করে আলোকময় করার জন্য উদ্যোগী হলাম।
‘অগ্নিবর্ণ সাতটি ঘোড়া’ কাব্যগ্রন্থ মূলত সময়ের কাব্য। অসাধারণ দ্রোহের কাব্য। বস্তুত দারুণ এক জীবনবোধের কথাকাব্য! প্রতিটা কবিতা সময়ের প্রেক্ষাপটে নির্মিত হয়েছে। এখান থেকে অনুমিত হয় তৎকালীন সময়ে রাষ্ট্রযন্ত্রের অশুভ দিকে বিচরণ। এটাকেই কবি পুঁজি করে পুরাণে সপ্তাশ্ববাহিত রথে বিচরণকারী সূর্যদেবতার সাত রঙের প্রতীক সাত ঘোড়াকে দেখেছেন অগ্নিবর্ণের। কাব্যগ্রন্থ পড়লে কবিকে হতাশাগ্রস্ত মনে হলেও কবিতার পরতে পরতে যে ঔজ্জ্বল্যের আলোকবার্তা ছড়িয়েছেন তাতে একবাক্যে বলা যায় কবি অনতিক্রম্য এক অপটিমিস্ট বা আশাবাদী মানুষ।
ঐকান্তিক আগ্রহে এই কাব্যগ্রন্থ নিয়ে আলোচনা করতে প্রয়াসী হলাম। কবি নিজেই তার ষোলটি কবিতায় তার মননশীলতা, চিন্তা, চেতনার চৈতন্যে কাব্যগ্রন্থের বৃন্ত বা কেন্দ্র স্থির করেছেন। আলোচনা দীর্ঘতর না করার মানসে এই ষোলটি কবিতাকে বেছে নিলাম ব্যবচ্ছেদের জন্য। কাব্যগ্রন্থের সূচনা হয়েছে কবিতা ‘জন্মদিন’ নিয়ে। বছরজুড়ে ঘূর্ণায়মান একটা নির্দিষ্ট দিনের কোনো এক ক্ষণে জীবন চাকা প্রাণ পেয়ে চলতে শুরু করেছিল। সেই একটা দিনে বাতি জ্বালিয়ে এবং পুনঃ নিভিয়ে পালন করা হয় একেকটা মানুষের একেকটা জন্মদিন আর এটা করতে দেখে তিনি গভীর ভাবাবেগে বললেন-

‘প্রত্যেকটা মানুষের নিজস্ব জন্মদিন থাকে
বুকে তিনশ পঁয়ষট্টি মোমবাতি জ্বালিয়ে রেখেছি
যে কোনটা নিভলেই তোমার আশ্চর্য জন্মদিন হয়ে যাবে।’

কিন্তু কবিতার অন্তরে রয়েছে একটা অন্তক্ষরণ। যেখানে মেকি এক জন্মদিনে যে আয়োজন তাতে উজ্জ্বলতা হারিয়ে যায় নানা বিলাসি আগ্রাসনে, পড়ে থাকে দারুণ শূন্যতা।

‘ভোর’ কবিতা এক দারুণ দ্রোহের কবিতা প্রকৃতির স্বাভাবিক চক্রমণে রাতের গভীরে ভাঙাগড়ার যে কারুকাজের অন্তরাল তা কবি গভীরভাবে সঞ্জাত করেছেন হৃদয়ে, বললেন-

‘স্বপ্ন ভাঙতে ভাঙতে বৃষ্টি।
জলহীন, শুষ্ক কঠিন বৃষ্টি।
দরজার ওপাশে, বিস্মৃতি আর ক্ষুধার্ত নগ্ন হাত
ভিতরে বিগ্রহ ভাঙে, নিশ্বাস হাঁপিয়ে ওঠে।’

কী দারুণ অনুভূতি একেকটা রাত কেমন করে দেহমন্দির ভাঙে সমরে, সংগ্রামে অতীতের বিস্মরণ আর ক্ষুধার করালে সমর্পিত ক্ষরণের কালাকাল। জীবনের কঠিন কাল-কালান্তর অবলোকন করে ‘উৎসর্গ বন্ধুদের’ কবিতায় কালযাপনের শিরদাঁড়ায় দেখলেন উৎসর্গের লাল নদী কেবল ধেয়ে যায় বিপ্লবের উষ্ণীষ পড়ে, বললেন-

‘রক্তে ছল্ ছল্ দাঁড় ভেঙে তলোয়ার হাতে উঠে আসে ক্রুশবিদ্ধ পুরুষ/
কেউ তার খবরও রাখে না।
মানুষের জান্তব ঘৃণায়
তাঁর কণ্ঠ ফুঁড়ে ছুটে যায় তীক্ষè আর্তনাদ।’

‘রাতের কাব্য’ কবিতায় শীতের সুনসান আঁধার আর আলো-আঁধারির এক বাস্তব চিত্র আঁকলেন প্রতীকী আর উপমার সন্নিধানে, ব্যক্ত করলেন-

‘লক্ষ্যহীন ঘুরতে ঘুরতে
লোকটা আঁধারে থমকে দাঁড়ালে
চারপাশে বেশ্যার বুনোগন্ধ ঝিরঝিরে শীতার্ত শূন্যতা।’
আবার অন্যদিকে বললেন-
‘স্তন এক কালো চাঁদ
তার থেকে শুধু ধবল জ্যোৎস্না বের হয়।’

এখানে আমরা সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার একটা লাইনের নৈকট্য লক্ষ করি
‘ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়
পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি’

‘অন্যে’ কবিতায় এনেছেন জন্মান্তরবাদের দারুণ এক ছায়া। আসলে হাঁটতে হাঁটতে মানুষ হারিয়ে যায় জলের বৃত্তের মতো চক্রাকার আবর্তে। কবিকণ্ঠে তাই নিঃসৃত হলো-

‘জলের থাকে বৃত্তের ছন্দ
বললো, একমাত্র অরণ্যই পারে তাকে লুকাতে
কিন্তু সে কি বৃক্ষ হয়ে গেল?
বৃক্ষরাও বদলে নেয় হলুদ বঙ্কল।’

এর পরপরই যুক্তির পসরা সাজিয়ে বসলেন ‘চিত্রকল্প’ কবিতায়! জীবনের দ্রোহিক মুহূর্তগুলো কৈশোর, যৌবন আর বার্ধক্যের নিঃশেষ হতে দেখলেন চিতার কাঠে আগুনের ফুলকিতে। দেখলেন চোখে আগুনমণির আগুনে যাত্রা-

‘বয়সের মাথা খেয়ে তিনরাত গল্প চলে।
চোখে টুকরো আগুন,
সামনে কুড়ানো পাতা হালকা লাল।’

পুরো কাব্যগ্রন্থ হলো দ্রোহের লাল আগুনে আঁকা কবিতার সমষ্টি। আর কবিতা ‘অগ্নিবর্ণ সাতটি ঘোড়া’ হলো কাব্যগ্রন্থের প্রাণ। পুরাণের সূর্য দেবতা সপ্তাশ্ববাহিত রথে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করাকে কেন্দ্র করে পৃথিবীর কল্যাণকর দিকের সঙ্গে সূর্যের যে সম্পর্ক তা নিয়ে নির্মিত হয়েছে এ কবিতা। আর কবিতার মর্মকথা হলো-

‘নিঃশ্বাসে ভয়ঙ্করী ঝড়ের বিপর্যয়
একমাত্র সেই আনে,
ভিতরে যার শূন্যতার মতো বিশাল নিঃশব্দতা।’

বস্তুত সূর্যই একমাত্র পারে মানবসভ্যতার কল্যাণকর দিকগুলো আলোয় ভাসিয়ে দিতে। প্রতিনিয়ত ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে যুদ্ধ করে বিপর্যয় রোধে যেন মরিয়া বুকে একরাশ আলোক নিঃশব্দতা নিয়ে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ছুটে চলছে অবিরাম। যার বাহন সপ্ত ঘোড়ার আগুনমুখী রূপ প্রলয়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামে রত। মানুষ তাই সূর্যমুখী হয়ে সপ্তরঙের ঘোড়ার প্রদক্ষিণ দেখতে দেখতে কেমন যেন আধ্যাত্মিকতায় লীন হয়ে যায়। সেটা কবির অন্তর্দৃষ্টিতে ধরা পড়েছে। তাই ‘আধ্যাত্মিক’ কবিতায় বলে উঠলেন-
‘মানুষের নশ্বর দেহ, এক নতুন সজীবতায়
বালকের স্বপ্নে ভোর হয়’
আধ্যাত্মিকতায় সত্যিকার অর্থে মনের সজীবতার দ্বার উন্মোচিত হয়ে যায় বালকের সারল্যের মতো। অসাধারণ ভাবনার স্ফুরণ। নশ্বরতা নিয়ে জীবনের ধ্যান-ধারণা প্রকটিত হয় আধ্যাত্মিকতার নৈকট্যে। অর্থবহুল না হলে বা স্বপ্নরা যদি স্থবির হয়, ডানাহীন হয়, তাহলে তা নিরর্থক কেবল ঘুমের অধিকারে থাকা হয়। কবির দ্রোহ এখানেই। তিনি শুরুতেই বলে বসলেন একটা সাদা দেয়ালের সঙ্গে লড়াইয়ের কোনো মানেই হয় না। তিনি তাই সাদাস্বপ্ন চান না। স্বপ্ন যদি জীবন নিয়ে চিত্রময় না হয় আর জীবন যদি গতিময় না হয় তাহলে তার কোনো অর্থই হয় না। তাই বলে উঠলেন-
‘তবু একবার, অন্ততঃ একবার ইচ্ছে হয়
অসহ্য সাদায় সেঁটে দেই
বিদঘুটে বসন্ত দাগের মতো একখানা কালো তিল
যাতে তার এই অহঙ্কারী স্বপ্নটুকু ভেঙে যায়।’

তারপরও সময়ের করালে মানুষ নিজেকে জিততে জিততে পরাজিত হতে ভালোবাসে, ভালোবাসে নিজের ভেতরের কোমলতার জন্য, দুর্বল হয়ে পড়ে বেদনার নীল বর্ণে আরক্ত হতে হতে। বেদনা আর যন্ত্রণার মাঝেও কখনো কখনো সুখ খোঁজে মানুষ নিজের সঙ্গে সমঝোতা করে সমর্পিত হতে হতে-

‘তবু মানুষ পরাজিত হতে ভালোবাসে
দুঃখের ভেতরে রাখে রোদে এক টুকরো সুখী রোদ
কিংবা কান্নায় মিশে আছে শিশিরের লাজুক প্রপাত।’

সময়ের কাছে একসময় কবি আপস করতে বাধ্য হয়েছেন। না সুখ না দুঃখ একসময়ে নিয়ে এসেছেন এক বৃন্তে। মনের এই অবস্থা মূলত শূন্যতাবাদের দিকে ধাবিত হওয়ার কথাই ব্যক্ত করে। কবি হ্যালোসিনেশান মনের অবস্থাকে তুলে ধরেছেন তার বৃত্ত কবিতায়-

‘আপাতত
সমস্ত বিস্ময়গুলো কুড়িয়ে এনে
লতাগুল্মের মতো একটু
শুধু একটু বসতে চাই।’

হ্যালোসিনেশানের এই পর্যায়ে কবি জীবনের স্থিতি খুঁজে ফিরছেন সুখমন্দ্রিত ক্ষণগুলোর আলম্বনে। যুবকের ‘স্বপ্নপদযাত্রা’ কবিতায় আমরা ছাপাখানার ভূতের অস্তিত্ব খুঁজে পাই। (কবিতার বিশেষ অংশ ৩৭ পৃষ্ঠার স্থলে ৩৮ পৃষ্ঠায়) এই কবিতায় কবি দুঃখটাকে এক শৈল্পিক ছায়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন, যা একটা যুবকের হৃদয়কে অবলম্বন করে জুড়ে রয়েছে। তবু যুবকের চোখে দেখছেন সুন্দর স্বপ্ন, যা অঙ্কিত হয়েছে এক গভীর দীর্ঘশ্বাসকে কেন্দ্র করে-

‘এই নিখুঁত শিল্পের স্বার্থে
অন্তত কারো গোপন দীর্ঘশ্বাসের স্বার্থে
যুবকের এই আশ্চর্য স্বপ্নপদযাত্রা।’

দুঃখকে নিজের কাছে পুষতে পুষতে কবি নৈরাশ্যবাদী হয়ে গেলেন। উত্তরণের পথ খুঁজে না পেয়ে তিনি একাকিত্বে ডুবে থাকতে চাইলেন। সহজ সাবলীলে ‘একাকিত্ব’ কবিতায় বলে উঠলেন-

‘আমাকে আমার হয়েই থাকতে দাও
পূর্ণতায়
দুঃখী চাদর জড়িয়ে সম্পূর্ণ নিজের,
টুকরো কাচের মতো ছড়ানো ছিটানো না,’

দুঃখটাকে আপন করে নিতে নিতে আলোকময় সূর্যের সামনাসামনি স্থবির পাহাড়, যা সূর্যের আলোকে দ্বিখণ্ডিত করে। কিন্তু কিছু কিছু আলো লুকিয়ে থাকে পাহাড়ের গুহায়। আর সেই আলো-আঁধারী পাহাড়ি জীবনে ওই লুকানো আলোকে পুঁজি করে জীবন চালনা করে। ওইটুকুতেই খুঁজে নেয় যাপিত জীবন। কবিতায় তাই সিক্ত হলো-

‘অদ্বিতীয় পাহাড়ের স্থবির সময়ে
উষ্ণতার চাদর গুটিয়ে
সূর্যটা ভেঙে যায়।’

জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা বারবার উত্তরণের পথে না শব্দের যুগপৎ জেগে ওঠা নিরাশার গভীর আঁধারে টেনে নিয়ে যায়, আশঙ্কায় ভরে ওঠে মন। তাই গন্তব্যে পৌঁছাতে গিয়ে পড়তে হয় দ্বিধাদ্ব›েদ্ব। আত্মবিশ্বাসের মূলে বারবার ঘুরে আসে অবিশ্বাস। মনের এই অবস্থাকে কবি সাহজিক ধারণায় এনে ভাবনার ডানা মেললেন হতাশার সুর ও স্বরে-

‘জানি না কতদূর
কতদূরে গেলে সমুদ্রের আঁজলায় জল
সূর্যের প্রশস্তি গায়,
কত সহজে রোদের বিনিময়ে নগ্ন গোলাপ মেলে
কতদূরে গেলে কতদূরে?’

তারপরেও এক সুন্দরের প্রত্যাশা কবিতার শরীরে ময়ূখের মতো জ্বলজ্বল। হতাশার মাঝেও দারুণ আশাবাদ ব্যক্ত হয়েছে কাব্যচ্ছটায়। পাওয়া না পাওয়ার অ্যালার্জি, শূন্যতাবাদ, দুঃখবাদ আইসোলেশান বা বিচ্ছিন্নতাবোধ, প্রকৃতির বৈরিতা, বিশৃঙ্খলতা, ক্ষুধা, দারিদ্র্য সবই কবিকে তাড়িয়ে বেড়িয়েছে! প্রত্যক্ষ করেছেন সাহজিকভাবে, সংবেদনশীল মনের সাবলীলতায় এঁকেছেন নিখুঁত শব্দচিত্র, কালের কাব্য প্রতিমা। কবিতার বিষয়বস্তুতেও জীবনের চারিধারে বেষ্টিত সমস্যাগুলো কেমন যেন কবিকে দ্রোহী করে তুলেছে। তাই পুরাণে বর্ণিত সূর্যদেবের সপ্তঅশ্বে টানা রথের সাত রংকে তিনি অগ্নিবর্ণে দেখতে পাচ্ছেন। কবির কবিতাগুলো গভীর, সন্দর্ভ নিরেট বাস্তব। কবিতার আলোক ছুঁয়ে যায় নিত্য চলমান আশয়-বিষয়। খুব সহজেই তাই বলা যায় কাব্যগ্রন্থের নামকরণ সার্থক। কাব্যগ্রন্থ ব্যবচ্ছেদে আমরা এখানে শ্যামল দত্তের আরেক রূপ প্রত্যক্ষ করি। ২৪টি কবিতার সমন্বয়ে, তিন ফর্মার বইটির প্রথম সংস্করণ বের হয়েছিল ১৯৮৮ সালে দ্রৌপতি প্রকাশন, ৫৭ আলকরণ লেন, চট্টগ্রাম থেকে। দ্বিতীয় সংস্করণ বের করা হয়েছে আবিষ্কার, ২৫৩/৫৪ কনকর্ড এম্পোরিয়াম শপিং কমপ্লেক্স, কাঁটাবন ঢাকা থেকে, অক্টোবর ২০২০ সালে। প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রæব এষ, অলংকরণ করেছেন ওয়াকিলুর রহমান। ভেতরের কবিতা ছাপায় কিছুটা গরমিল প্রত্যক্ষ হয়েছে। যেমন- ‘যুবকের স্বপ্নপদ-যাত্রা’, ‘একাকিত্ব’, ‘না’, কবিতাগুলোর শেষাংশ খুঁজে পাওয়া যায় অন্যত্র, অন্য পাতায়। এগুলো কবির গভীর চিন্তন ও অনুভবের ফসল। দ্বিতীয় সংস্করণে প্রকাশক আরো মনোযোগী হতে পারত। বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে কবির ‘মা’ ও ‘বাবাকে’। আমি বইটির পাঠকপ্রিয়তা কামনা করছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়