দুদক মামলা : আদালতে হাজিরা দিলেন আব্বাস দম্পতি

আগের সংবাদ

শিল্প খাতে বাড়ল গ্যাসের দাম > সবচেয়ে বেশি বাড়ছে ক্ষুদ্রশিল্পে, মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়বে : বিশেষজ্ঞদের অভিমত

পরের সংবাদ

৭ মাস আগের বন্যার ক্ষত : হুমকিতে বিয়াশি গুচ্ছগ্রামের ঘর নির্মাণ হয়নি প্রতিরক্ষা দেয়াল

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পরিতোষ দাস, মদন (নেত্রকোনা) : বন্যার পানিতে মাটি সরে যাওয়ায় নেত্রকোনার মদনে বিয়াশি গুচ্ছগ্রামের বসত ঘরগুলো হুমকির মুখে রয়েছে। বন্যার পানি সরে যাওয়ার সাত মাসেও মেরামতের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছে গুচ্ছগ্রামবাসী। হতাশ হয়ে অনেকেই বসত বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে বাবার বাড়িতে, আবার কেউ চলে গেছে অন্যান্য স্থানে। মূলত প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণ না হলে বর্ষা মৌসুমে যে কোনো সময় হাওরের প্রচণ্ড ঢেউয়ে গুচ্ছগ্রামটি বিলীন হয়ে যেতে পারে। এ নিয়ে গুচ্ছগ্রামের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, ‘শেখ হাসিনার অবদান, গৃহহীনদের বাসস্থান’ স্লোগানে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে মদন উপজেলার হাওরাঞ্চলে বিয়াশি গুচ্ছগ্রামের ৬০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণ করার জন্য ২ লাখ টাকার টি আর ও ৪ লাখ টাকার কাবিটা প্রকল্প নেয়া হয়। কিন্তু কোনো কাজ বাস্তবায়ন হয়নি।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিয়াশি গুচ্ছ গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে ৬০টির মধ্যে ২৮টি পরিবারের লোকজনকে পাওয়া যায়। বন্যায় ১০টি বসতঘরের মাটি সরে গেছে। বিশুদ্ধ পানি পান করার জন্য ১০টি নলকূপ থাকলেও শুরু থেকেই ৩টি অকেজো রয়েছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে গুচ্ছগ্রামের একটি অংশ আলোকিত করার জন্য সৌর প্যানেল থাকলেও তা নষ্ট রয়েছে। গ্রামটির চার দিকের মাটি সড়ে গেছে। প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণের জন্য টাকা বরাদ্দ থাকলেও কোনো কাজ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গুচ্ছগ্রামবাসী।
গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা রহিমা, আছিয়া, সালেহা, মঞ্জু মিয়া ও এমদাদুল হক জানান, গুচ্ছগ্রামে প্রথমে ৬০টির মধ্যে ৬০টি পরিবারই ছিল। কিন্তু আগামী বর্ষায় ঢেউয়ের আতঙ্কে অনেকেই অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। বিষয়টি চেয়ারম্যান ও পিআইও স্যারকে বললেও কোনো কাজ হচ্ছে না।
তারা বলেন, ‘সংযোগ সড়ক না থাকায় এই গ্রামে আমরা অসহায় অবস্থায় আছি। যদি প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণ করা না হয়, তাহলে আগামী বর্ষায় এ গ্রামের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। এই শীতে একটি কম্বল ছাড়া আমাদের ভাগ্যে আর কিছুই জুটেনি।’
ইউপি চেয়ারম্যান সামিউল হায়দার সফি বলেন, ‘বর্ষায় বিয়াশি গুচ্ছগ্রামের ঘরের মাটি সরে যাওয়ায় সংস্কারের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে আবেদন করেছি।’
বিয়াশি গুচ্ছগ্রামের কয়েকটি বসত ঘরের ভিটার মাটি সরে গেছে জানিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শওকত জামিল বলেন, এসব ঘর মেরামতের জন্য তালিকা তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। গুচ্ছগ্রামে প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, অচিরেই কাজ শুরু করা হবে।
মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানজিনা শাহরীন বলেন, ‘আমি গুচ্ছগ্রামে পরিদর্শনে গিয়েছি। সেখানে নাজুক অবস্থা দেখেছি। বিষয়টি নিয়ে পিআইও’র সঙ্গে কথা হয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়