দুদক মামলা : আদালতে হাজিরা দিলেন আব্বাস দম্পতি

আগের সংবাদ

শিল্প খাতে বাড়ল গ্যাসের দাম > সবচেয়ে বেশি বাড়ছে ক্ষুদ্রশিল্পে, মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়বে : বিশেষজ্ঞদের অভিমত

পরের সংবাদ

মূলহোতাসহ গ্রেপ্তার ৫ : দিনে অটোরিকশা চালক জসিম রাতে মোটরসাইকেল চোর

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ঢাকার দুর্র্ধর্ষ মোটরসাইকেল চোর জসিম ওরফে ‘বাইক জসিম’। সে দিনে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালাত। আর রাতে মোটরসাইকেল চুরি করত। এতে করে কেউ তাকে সন্দেহ করত না। এই সুযোগ ও কৌশলে একটি চক্রও গড়ে তোলেন জসিম। সেই চক্রের সদস্যদের নিয়ে রাতের আঁধারে বাসাবাড়ির সামনে পার্কিং করে রাখা মোটরসাইকেল তারা চুরি করত। এভাবে গত ১০ বছরে পাঁচ শতাধিক মোটরসাইকেল চুরি করেছে জসিম।
তবে শেষ রক্ষা হয়নি। মূলহোতা জসিমসহ চক্রের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে মিরপুর থানা পুলিশ। গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন- হারুন, মহসিন, রাজিব ও আশিষ চন্দ্র বিশ্বাস। পুলিশ জানায়, জসিমের একটি দল রয়েছে। জসিমের নেতৃত্বে তারা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মোটরসাইকেল চুরি করে আসছে। জসিমকে বাইক জসিম নামেও ডাকা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. জসীম উদ্দীন মোল্লা নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরে মিরপুরের একটি বাসার গেট কেটে দুটি মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে যায়। যার মোটরসাইকেল চুরি হয় তার নামও জসিম। পরে তিনি মিরপুর থানায় এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে আমরা জানতে পারি, এই চক্রের মূলহোতা জসিম। ১৪ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে রিমান্ডে আনা হয়। তার তথ্যের ভিত্তিতে অন্য চার মোটরসাইকেল চোরকে গ্রেপ্তার করেছি। তাদের কাছ থেকে ৪টি চোরাই মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। জসিম দিনে অটোরিকশা চালায়, আর রাতে মোটরসাইকেল চুরি করে। সে মূলত রাতে বাসাবাড়ির পার্কিংয়ে রাখা মোটরসাইকেলই চুরি করত। দিনে কিংবা সড়কে চুরি করলে ধরা পড়ার ঝুঁকি বেশি থাকে তাই রাতেই চুরি করত জসিম। দিনে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালানোর ফলে কেউ তাকে সন্দেহ করত না।
জসিমকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ডিসি জসীম উদ্দীন বলেন, ২০১৩ সাল থেকে মোটরসাইকেল চুরির সঙ্গে জড়িত জসিম। এই ১০ বছরে ৫০০টি মোটরসাইকেল চুরি করেছে সে। তার একটি চক্র রয়েছে, এর সদস্য সংখ্যা ২০ জন। এই ২০ জনের চক্রটি কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত। এদের মধ্যে একটি গ্রুপ মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে যায়। এই গ্রুপটি অন্য আরেকটি গ্রুপের কাছে চুরি করা মোটরসাইকেল হস্তান্তর করে। পরে আরেকটি গ্রুপ মোটরসাইকেলগুলোকে মেরামত করে অন্য আরেকটি গ্রুপের সহায়তায় বিক্রি করে ফেলে।

জসিমের বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় কমপক্ষে ১২টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে সে কারাগারে যায় ১০ বার। সর্বশেষ গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কারাগার থেকে ছাড়া পায়। জেল থেকে বের হয়ে আবারো মোটরসাইকেল চুরি করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয় জসিম। তার বাবা একজন কৃষক। মাদারীপুরের বেলদারহাট গ্রামের বাড়িতে কৃষি কাজ করেই তিনি জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু তার ছেলেরা সবাই অপরাধ জগতে বেপরোয়া। জসিমের বড় ভাই ডাকাত হানিফ ২০১৮ সালে এবং তার ছোট ভাই ডাকাত ইয়াসিন ২০১৪ সালে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে গিয়ে মারা যায় বলে জানা গেছে।
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন জানান, জসিমের পেশা রিকশা চালক হলেও নেশা ছিল মোটরসাইকেল চুরি। জসিম ঢাকার শীর্ষ মোটরসাইকেল চোর। চক্রটি রাতে চুরি করত। এই চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, অন্যদের ধরতে অভিযান চলছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়