পদ্মা সেতু : মোটরসাইকেল চলাচল চেয়ে হাইকোর্টে রিট

আগের সংবাদ

আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ : বিশ্বকাপে অপ্রতিরোধ্য টাইগ্রেসরা

পরের সংবাদ

শ্বশুর-জামাইয়ের মাছ কেনার প্রতিযোগিতা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি : কালীগঞ্জ উপজেলার বক্তারপুর, জাঙ্গালিয়া, মোক্তারপুর ও জামালপুর ইউনিয়নের চারমোহনায় বিনিরাইল গ্রামে বসে মাছের মেলা। তবে মেলার বেশির ভাগ অংশই জামালপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বিনিরাইল গ্রামে। আর সে কারণেই এটাকে বিনিরাইলের মাছের মেলা বলা হয়। অনেকে আবার জামাই মেলাও বলে থাকে। মূলত পৌষ সংক্রান্তিতে আড়াইশ বছরের বেশি সময় ধরে পৌঘ মাসের শেষ দিনে বসে পুরনো এই মাছের মেলাটি। আর এই মাছ মেলাকে ঘিরে ভিড় জমায় দূর-দূরান্ত থেকে মাছ কিনতে আসা আগত মেয়ে জামাই ও উৎসুক দর্শনার্থীরা। উৎসবমুখর হয়ে উঠে মেলার পরিবেশ। সারা দিনব্যাপী বড় বড় মাছের দাম নিয়ে চলে হাক ডাক।
মূলত এটা জামাই মেলা। কিন্তু সবাই এটাকে বলে মাছের মেলা। উপজেলার বিনিরাইল গ্রামের মাছের মেলাকে ঘিরে আশপাশের কয়েক জেলায় মানুষের সমাগমে এই দিনটিকে ঘিরেই এখানে মেলায় দিনভর চলে আনন্দ-উৎসব। আর এ দিনটির জন্য পুরো বছরজুড়ে অপেক্ষায় থাকেন স্থানীয়রা। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে লোকজন তো আসছেনই, এর বাইরেও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকেও অনেকে এসেছেন ঐতিহ্যবাহী ২৫০ বছরের পুরনো উপজেলার সর্ববৃহৎ এই মাছের মেলায়। গাজীপুর, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ থেকে অনেক মানুষ কেবল এই মেলা উপলক্ষেই কালীগঞ্জে এসেছেন। এবারের মেলায় প্রায় ২ শতাধিক মাছ ব্যবসায়ী বাহারি মাছের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। মেলায় মাছ ছাড়াও আসবাবপত্র, খেলনা, মিষ্টি ইত্যাদির পসরাও সাজিয়ে বসেছে দোকানি। মাছের মেলায় সামদ্রিক চিতল, বাঘাড়, আইড়, বোয়াল, কালী বাউশ, পাবদা, গুলসা, গলদা চিংড়ি, বাইম, ইলিশ, কাইকলা, রূপচাঁদা মাছের পাশাপাশি স্থান পেয়েছে নানা রকমের দেশি মাছ।
উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের জামাই বি,বাড়ীয়া জেলার নবীনগর এলাকার বাসিন্দা মিঠু সূত্রধর পলাশ বলেন, ঐতিহ্যবাহী দুই শতাধিক মাছের মেলাটি আমার দেখার খুব ইচ্ছা ছিল। শ্বশুরবাড়ি থেকে দাওয়াত পেয়ে চলে এসেছি। মেলা ঘুরে দেখবো এবং কিছু মাছ কিনে নিয়ে যাব।

নরসিংদী থেকে মাছ নিয়ে আসা চল্লিশোর্র্ধ্ব নয়ন কুমার দাস বলেন, বিনিরাইলের মাছের মেলায় প্রচুর দেশি রুই, কাতল, বোয়াল, আইড়, বাঘাইর, চিতল, কালবাউশ ও রিটা মাছের সমাগম হয়েছে। এছাড়া কার্প জাতীয় নানা মাছের আমদানি হয়েছে। এক কেজি থেকে শুরু করে বিশ কেজি পর্যন্ত এসব মাছ বিক্রি হচ্ছে।
বিনিরাইলের মাছের মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য কিশোর আকন্দ জানান, এই মেলাটি প্রথম অনুষ্ঠিত হতো খুবই ক্ষুদ্র পরিসরে এটি অগ্রহায়ণের ধান কাটা শেষে পৌষ-সংক্রান্তি ও নবান্ন উৎসবে আয়োজন করা হতো। প্রায় ২৫০ বছর যাবত মেলাটি আয়োজন হয়ে আসছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ মেলাটি একটি সর্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. খাইরুল আলম জানান, ব্রিটিশ শাসনামল থেকে বিনিরাইলের মাছের মেলা এখন ঐতিহ্যে রূপ নিয়েছে। এ মেলা কালীগঞ্জের সবচেয়ে বড় মাছের মেলা হিসেবে স্বীকৃত। ঐতিহ্যেবাহী এই মেলায় প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার মাছ ক্রয় বিক্রয় হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়