পদ্মা সেতু : মোটরসাইকেল চলাচল চেয়ে হাইকোর্টে রিট

আগের সংবাদ

আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ : বিশ্বকাপে অপ্রতিরোধ্য টাইগ্রেসরা

পরের সংবাদ

অবৈধ ৫০ স’মিলে রমরমা ব্যবসা রাজস্ব ফাঁকিসহ পরিবেশের ক্ষতি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সরকারের অনুমোদন ছাড়াই প্রায় অর্ধশত স’মিলে (করাত কল) চলছে রমরমা অবৈধ ব্যবসা। অনুমোদনহীন এসব স’মিলে মাসের পর মাস চলছে কাঠ চেরাই। এতে সাবাড় হচ্ছে বনজ, ফলদসহ নানা প্রজাতির গাছ। এসব দেখার যেন কেউ নেই। ফলে একদিকে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে সরকার প্রতিবছর হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। এসব করাত কল সরকারি আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে স্থানীয় সচেতন মহল।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বন আইন ১৯২৭ ও বিধিমালা ২০১২ অনুযায়ী কোনো স’মিল মালিক লাইসেন্স না নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না। লাইসেন্স নেয়ার পর থেকে প্রতিবছর তা নবায়ন করতে হবে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় একটি পৌরসভাসহ ৬টি ইউনিয়নে অর্ধশতাধিক করাত কল রয়েছে। তার মধ্যে ৬টি করাত কলের লাইসেন্স রয়েছে। কিন্তু সেগুলোর নবায়নও হয়নি ঠিকমতো। আর বাকি প্রায় অর্ধশত করাত কলের নেই কোনো অনুমোদন বা লাইসেন্স। ফলে নবায়নের তো প্রশ্নই আসে না।
পৌর সদরের কালিবাড়ি, ভদ্রপাড়া, পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের ভেড়ামারা, অষ্টমনিষা বাজার, খানমরিচ ইউনিয়নের ময়দানদীঘি বাজার, চন্ডীপুর বাজারসহ বিভিন্ন করাত কল ঘুরে দেখা গেছে, কেউ জায়গা ভাড়া নিয়ে, আবার কেউবা নিজস্ব জায়গায় যত্রতত্র করাত কল স্থাপন করে বছরের পর বছর ব্যবসা পরিচালনা করছেন। স’মিল চালানোর ক্ষেত্রে সরকারের সুনির্দিষ্ট বিধান থাকলেও এ উপজেলার চিত্র একেবারেই বিপরীত। কোনো কোনো মালিক ২০-২৫ বছর যাবৎ অনুমোদন ছাড়াই স’মিল চালাচ্ছেন। লাইসেন্সবিহীন এসব স’মিল বন্ধ করার কোনো উদ্যোগও চোখে পড়েনি। তবে এসব স’মিল চত্বরে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ থরে থরে মজুত করে রাখা হয়েছে। কাক ডাকা ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এসব স’মিলে বিরামহীন চলছে কাঠ চেরার কাজ।
এ বিষয়ে খানমরিচ ইউনিয়নের ময়দান দীঘি এলাকার স’মিল মালিক আজিজ, জলিল মেধা জানান, অনুমোদন বিহীনভাবে দীর্ঘদিন ধরে তারা তাদের স’মিল চালাচ্ছেন। এতে কোনো সমস্যা হয়নি। কেউ লাইসেন্স করার বিষয়ে কখনো কিছু বলেনি। কেউ বিষয়টি জানালে লাইসেন্স করার উদ্যোগ নেয়া হতো।
কালিবাড়ি এলাকার স’মিল মালিক নিজাম উদ্দীন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমাদের স’মিল চলছে। অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছি। এখনো অনুমোদন পাইনি। স’মিল যখন চালু করেছি, তা তো বন্ধ রাখতে পারি না।’
কালিবাড়ি এলাকার অন্য স’মিল মালিক মো. রওশন আলী নতুন স’মিল করেছেন। কিন্তু অনুমোদনের কোনো কাগজ দেখাতে পারেননি তিনি।
তবে সচেতন মহল মনে করেন, এভাবে সরকারের অনুমোদন বিহীন স’মিল (করাত কল) চলায় একদিকে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, বন উজাড় হচ্ছে, অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে মোটা অঙ্কের রাজস্ব। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।
এ ব্যাপারে উপজেলা বনবিভাগের ফরেস্টার মো. জাহিদ হাসান জানান, মাঝে মাঝে ইউএনও’র নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানার পাশাপাশি সতর্ক করা হয়। পাবনা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, অবৈধ স’মিলগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান জানান, অবৈধ স’মিল বন্ধে প্রয়োজনে আবারো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়