রাষ্ট্রপতির ভাষণের আলোচনায় এমপিরা : শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ফের ক্ষমতায় আসার প্রত্যয়

আগের সংবাদ

বরিশালে ড্রেজিং করা বালু ফের নদীতে, খোয়া যাচ্ছে টাকা!

পরের সংবাদ

যানবাহনে এলইডি লাইট : বরিশালে বাড়ছে অন্ধত্বের ঝুঁকি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এম কে রানা, বরিশাল থেকে : বরিশাল নগরীর সড়ক ও মহাসড়কগুলোতে অটোরিকশা, মাহিন্দ্রা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে বেড়েছে এলইডি লাইটের ব্যবহার। সন্ধ্যা নামলেই সড়কে চলাচল করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ লাইটের আলো এতোটাই তীব্র যে বিপরীত দিক থেকে কিছুই দেখা যায়না। ফলে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। আর এই লাইট ব্যবহার বন্ধ করতে বরিশাল ট্রাফিক বিভাগ থেকে একাধিকবার উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও ধারাবাহিক অভিযান না হওয়ায় এর ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। চিকিৎসকদের মতে, এই আলো সরাসরি চোখে লাগলে চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এমনকি ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
বর্তমানে যে কোনো সাধারণ ব্যক্তি রাতে নগরীসহ সড়ক-মহাসড়কে বের হলেই গাড়ির হেডলাইটের যন্ত্রণায় পড়বে। আর যানবাহনের হেডলাইট এবং এলইডি লাইটের আলোর প্রভাবে রাতে চলাচল অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। নগরীর সর্বত্র দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে নানান ধরনের যানবাহনের সংখ্যা আর সেই সঙ্গে বেড়ে চলেছে এলইডি লাইটের ব্যবহার। যানবাহনে লাগানো এলইডি লাইটের আলো চলাচলের সময় তীব্র আলো চোখে পড়ায় সাধারণ মানুষের পথ চলতে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। প্রতিনিয়ত মানুষ সড়ক দুর্ঘটনার সম্মুখীন হচ্ছে। দিনদিন যেন এই আলোর কারণে জনজীবনে দুর্ভোগের শেষ নেই।
এলইডি লাইটের অধিক ব্যবহারে ট্রাফিক পুলিশসহ প্রশাসনের কোনো মাথা ব্যাথা নেই। মাঝে মধ্যে অভিযান চালালেও তার ধারাবাহিকতা না থাকায় এলইডি লাইটের ব্যবহার কমছে না। রাতে নগরীর ব্যস্ততম সড়ক সদর রোড, নতুন বাজার, বটতলা সড়ক, নথুল্লাবাদ, সিএন্ডবি রোড, সাগরদী বাজার সড়কসহ প্রায় বিভিন্ন অলিগলি ঘুরে সরজমিনে দেখা যায়, প্রতিটি অটোভ্যান, অটোরিকশা, ইজিবাইক, সিএনজি, মাহিন্দ্রা, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য অনেক যানবাহনে এলইডি লাইটের ব্যবহার।
এছাড়াও নগরীর সড়ক ও মহাসড়কে চলাচলকারী বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকারসহ কোনো গাড়ির হেডলাইটের উপরের অংশে এখন আর কালো রং ব্যবহার করা হয় না। যার কারণে এসব গাড়ির আলো সরাসরি বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়ির চালক ও পথচারীদের চোখ ধাঁধিয়ে যায়। আর তখনই ঘটে দুর্ঘটনা।
নগরীর সিএন্ডবি রোড এলাকার বাসিন্দা গোলাম রব্বানী জানান, দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর ধরে মোটরসাইকেলে চলাচল করেন তিনি। এত বছরের অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও তিনি এখন মোটরসাইকেল চালাতে ভয় পান। তিনি বলেন, মোটরসাইকেলসহ প্রতিটি গাড়ির হেডলাইটের উপরের অংশে ছিল কালো রং করা। যাতে করে কারো চোখে আলোকরশ্মি না পড়ে এবং যারা গাড়ি চালায় তাদের গাড়ি চালাতে কষ্ট না হয়। এতে করে দুর্ঘটনাও কম হতো। বর্তমানে নানা প্রকার লাইটের আলো চোখে এমনভাবে এসে পড়ে যে সামনে কি আসছে কিছুই বুঝা যায় না। এজন্য ভয়ে রাতে এখন আর গাড়ি নিয়ে বের হন না তিনি।
এ ব্যাপারে সার্জেন্ট সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এলইডি লাইটের ব্যবহার বন্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান চলছে। তিনি বলেন, যে সব যানবাহনে এলইডি লাইট ব্যবহার করা হয় সেগুলো আটক করে লাইট খুলে ফেলা হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিভিন্ন কারণে অনেক সময় অভিযান কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হলেও অভিযান নিয়মিত চলছে। এ ব্যাপারে তিনি সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
বিএমপির এয়ারপোর্ট থানার ওসি (তদন্ত) লোকমান হোসেন বলেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে আমরাও সম্মিলিতভাবে কাজ করছি। এলইডি লাইট দুর্ঘটনার একটি অন্যতম কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, গড়িয়ারপার এলাকায় নিয়মিত চেকপোস্ট এর পাশাপাশি টহল টিমকেও এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়া আছে। তাছাড়া মহাসড়কে ইজিবাইক চলাচল বন্ধের ব্যাপারেও তাদের অভিযান নিয়মিত আছে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে বিএমপি ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. গিয়াসউদ্দিন ফরাজী বলেন, এলইডি লাইটের ব্যবহার, হাইড্রোলিক হর্ন বা অন্যান্য যে সমস্যা আছে, সেগুলো আমরা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যা যা করা উচিত তা করছি। এলইডি লাইটের ক্ষতিকর দিক এবং চালকদের সচেতনতার জন্য ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া এই লাইটের ব্যবহার বন্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়