রাষ্ট্রপতির ভাষণের আলোচনায় এমপিরা : শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ফের ক্ষমতায় আসার প্রত্যয়

আগের সংবাদ

বরিশালে ড্রেজিং করা বালু ফের নদীতে, খোয়া যাচ্ছে টাকা!

পরের সংবাদ

বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কেপলারের তথ্য : ২০২২ সালে বৈশ্বিক এলএনজি আমদানি রেকর্ড উচ্চতায় > রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : গত ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে নজিরবিহীন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমদানি বাজারে বড় পরিবর্তন দেখা গেছে। এশিয়ার দেশগুলো সাধারণত সবচেয়ে বেশি এলএনজি আমদানি করে। কিন্তু এবার সংকট এড়াতে ইউরোপ আমদানির পরিমাণ রেকর্ড মাত্রায় বাড়িয়েছে। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত মূল্য পরিশোধেও পিছপা হয়নি ব্লকটির দেশগুলো। ফলে এশিয়ার বদলে রপ্তানিকারকদের পছন্দের গন্তব্য হয়ে ওঠে এ অঞ্চল। অন্যদিকে ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে এশিয়ার বেশির ভাগ দেশই আমদানি কমাতে বাধ্য হয়েছে।
মুদ্রাবাজারের তথ্য পরিষেবা দাতা প্রতিষ্ঠান রেফিনিটিভ জানায়, ২০২২ সালে বৈশ্বিক এলএনজি আমদানি বেড়ে ৪০ কোটি ৯০ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। ২০২১ সালে আমদানির পরিমাণ ছিল ৩৮ কোটি ৬৫ লাখ টন। অন্যদিকে পণ্যবাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কেপলার বলছে, আমদানির পরিমাণ ছিল ৪০ কোটি ৫ লাখ টন, ২০২১ সালে যা ছিল ৩৭ কোটি ৯৬ লাখ টন।
ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে এলএনজি আমদানি কমিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ইউরোপ। বিকল্প উৎস থেকে সরবরাহ নিশ্চিত করতে মরিয়া হয়ে ওঠে অঞ্চলটি। এ কারণে গত বছর সেখানে জ্বালানিটির চাহিদা আকাশচুম্বী হয়ে ওঠে। ঊর্ধ্বমুখী চাহিদায় সাড়া দিতে সমুদ্রপথ ও পাইপলাইনের পাশাপাশি রেলপথেও সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়।
এদিকে গত বছর এশিয়ার আমদানি বাজারেও বড় রদবদল পরিলক্ষিত হয়েছে। এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় এলএনজি আমদানিকারক চীন। কিন্তু দেশটিকে পেছনে ফেলে শীর্ষে উঠে এসেছে জাপান।
কেপলারের দেয়া তথ্যমতে, ২০২২ সালে চীন ৬ কোটি ৪৪ লাখ ৪০ হাজার টন এলএনজি আমদানি করেছে। ২০২১ সালের তুলনায় আমদানি কমেছে ১৯ দশমিক ৪ শতাংশ। জাপানের আমদানিও কমেছে। ২০২১ সালে দেশটি ৭ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টন আমদানি করে, গত বছর যা ৭ কোটি ৩৬ লাখ ১০ হাজার টনে নেমেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের আমদানিকারকরা গত বছর স্পট মার্কেট থেকে দূরে ছিলেন। বিপরীতে তারা দীর্ঘ ও মধ্যমেয়াদি চুক্তিতে বেশির ভাগ এলএনজি আমদানি করেছেন। এ কারণেই আমদানিতে নি¤œমুখী প্রবণতা ছিল।
মূলত স্পট মার্কেটে জ্বালানির ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণেই ক্রেতারা ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে বেশি এলএনজি কিনেছেন। গত বছরের ২৬ আগস্ট স্পট মার্কেটে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম রেকর্ড ৭০ ডলার ৫০ সেন্টে আরোহণ করে। অথচ ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি দাম ছিল ২৩ ডলার।
যদিও চলতি বছর জ্বালানিটির দাম রেকর্ড পর্যায় থেকে নেমে এসেছে। ৬ জানুয়ারি শেষ হওয়া সপ্তাহে এশিয়ার বাজারে প্রতি এমএমবিটিইউ লেনদেন হয়েছে ২৫ ডলারে। পর্যাপ্ত মজুত ও শীতের তীব্রতা কম থাকায় পণ্যটির চাহিদা সীমিতই রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দাম কমলেও তা ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়েই অবস্থান করছে। কারণ ২০২১ সালের আগে প্রতি এমএমবিটিইউর বাজারদর কখনো ২০ ডলারের ওপরে উঠতে দেখা যায়নি। জ্বালানিটির উচ্চমূল্য শুধু চীনেই নয়, বরং এশিয়ার অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের আমদানিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ক্রমবর্ধমান ব্যয় সামাল দিতে না পেরে বেশির ভাগ ক্রেতাই আমদানি সীমিত করেছে।
কেপলার জানায়, ভারতে গত বছর আমদানি কমে ২ কোটি ৩ লাখ টনে নেমেছে। ২০২১ সালে দেশটি ২ কোটি ৪০ লাখ ১০ হাজার টন আমদানি করেছিল। ২০১৭ সালের পর এটিই সর্বনি¤œ আমদানি। এশিয়ার চতুর্থ শীর্ষ আমদানিকারক দেশটি ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে সরবরাহ নিশ্চিতে হিমশিম খাচ্ছে। এশিয়ার অন্যান্য দেশের মধ্যে পাকিস্তান ও বাংলাদেশও আমদানি কমিয়েছে। এশিয়ার মোট আমদানি দাঁড়িয়েছে ২৬ কোটি ৩৭ লাখ ৬০ হাজার টনে, ২০২১ সালে যা ছিল ২৮ কোটি ২০ লাখ ৮০ হাজার টন।
গত বছর এশিয়া যেসব এলএনজি কেনেনি, সেগুলো গেছে ইউরোপের দেশগুলোয়। এক বছরের ব্যবধানে ইউরোপের আমদানি ৫৯ শতাংশ বেড়ে ১২ কোটি ৪৯ লাখ ৩০ হাজার টনে উন্নীত হয়েছে। ২০২১ সালে আমদানির পরিমাণ ছিল মাত্র ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৫০ হাজার টন। মোট আমদানির বেশির ভাগই এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। দেশটি ইউরোপে ৫ কোটি ২০ লাখ ৬০ হাজার টন এলএনজি সরবরাহ করেছে, ২০২১ সালে যা ছিল ২ কোটি ১৫ লাখ টন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়