রাষ্ট্রপতির ভাষণের আলোচনায় এমপিরা : শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ফের ক্ষমতায় আসার প্রত্যয়

আগের সংবাদ

বরিশালে ড্রেজিং করা বালু ফের নদীতে, খোয়া যাচ্ছে টাকা!

পরের সংবাদ

জয়পুরহাটে আগাম জাতের আলুতে লোকসানের শঙ্কা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কবির হোসেন, জয়পুরহাট থেকে : জয়পুরহাটে আগাম জাতের আলু তোলা শুরু হয়েছে। ভালো দাম পাওয়ার আশায় আলু চাষিরা এ মৌসুমে আগাম জাতের আলু রোপণ করেছিলেন। চলতি বছর আলুর ফলন গত মৌসুমের চেয়ে ভালো হলেও দাম নিয়ে হতাশায় পড়েছে চাষিরা। আলু চাষে খরচ বাড়লেও কাক্সিক্ষত মূল্য পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছে কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- এখন যারা আলু তুলছেন, তাদের সব খরচ বাদ দিয়ে কিছুটা লাভ থাকছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর বাজার মনপ্রতি ১০০ টাকা থেকে ১৫০-২০০ টাকা কমে গেছে। এভাবে কমতে থাকলে এখন যারা আলু তুলবেন তাদেরকে লোকসানের মুখে পড়তে হবে বলে জানান তারা।
আলু উৎপাদনে দেশের তৃতীয় বৃহৎ জেলার ক্ষেতলাল, কালাই সদর উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়- স্থানীয় কৃষাণ-কৃষাণীরা আগাম জাতের আলু তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মৌসুমের শুরুতে মূলত ক্যারেজ, রোমানা, স্ট্রিক, গেলোনা নামিউজিকা, ফ্রেশ, ফাটা পাকরি এবং বট পারকরি আলু তোলা হচ্ছে।
সদরের নতুন হাটে আলু বিক্রি করতে আসা চাষিরা জানান, বাজারে এখন প্রতি মণ ক্যারেজ আলু ৪৪০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। আর গ্রানোলা আলু ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মণ। যত দিন যাচ্ছে আলুর দাম কমে যাচ্ছে। আলুর বাজার দর এভাবে চলতে থাকলে চাষিদের লোকসান গুনতে হবে।
মৌসুমের শুরুতে এবার দেড় বিঘা জমিতে আগাম জাতের বটপাকরি ও রেমিউজিকা জাতের আলু চাষ করেছেন জয়পুরহাট সদর উপজেলার জামালপুর গ্রামের আলু চাষি মোকারম হোসেন। ভোরের কাগজকে তিনি জানান- রোপণের ২ মাস ৬ দিন বয়সে আলু তুলেছি।
জমিতে বিঘাপ্রতি ফলন হয়েছে ৬০-৬৫ মণ। বিক্রির সময় পাইকারি ক্রেতাকে প্রতি বস্তায় ৩ কেজি হারে বিঘাপ্রতি কয়েক মণ আলু বেশি দিতে হয়। ফলে বিঘাপ্রতি ৬৫ মণ ফলন হলেও সব বাদে ৬০ মণের দাম পাওয়া যায়। বর্তমানে আলুর বাজার অত্যন্ত কম। মৌসুমের শুরুতে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা মণ দরে আলু বিক্রি করেছি। অনেকেই ১৪০০ টাকা দরে আলু বিক্রি করেছে। খরচ বাদে ভালই লাভ হয়েছে। তবে এখন বাজারে দিন দিন যেভাবে আলুর দাম নেমে যাচ্ছে তাতে লোকসান গুনতে হবে কৃষককে।
আলুর পাইকারি ক্রেতা ফরিদ হোসেন, কাজল ও সাহেব আলী বলেন, বাজারে এখন আগাম জাতের আলু উঠতে শুরু করেছে। এসব আলু ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের মোকামে সরবরাহ করা হচ্ছে। কাঁচা বাজারের মূল্য সঠিক ভাবে বলা যায় না। এক সপ্তাহ পরে আলুর দাম বাড়তেও পারে। আবার কমতেও পারে।
এ ব্যাপারে জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল করিম ভোরের কাগজকে জানান, জেলায় এবার ৪০ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চাষ হয়েছে প্রায় ৩৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৭ হাজার ১০০ হেক্টর, পাঁচবিবিতে ৭ হাজার, কালাইয়ে ১১ হাজার ১০০, ক্ষেতলালে ৯ হাজার এবং আক্কেলপুরে ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুর ফলন ভালো হয়েছে এবং লক্ষ্যমাত্রার অধিক জমিতে আলু চাষ হয়েছে।
তিনি বলেন- বর্তমানে আলুর বাজার কিছুটা নি¤œমুখী। এতে চাষিদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। জেলার হিমাগারগুলোতে এখন পর্যন্ত অতিরিক্ত আলু সংরক্ষিত রয়েছে। ফলে আগাম জাতের আলুর দাম কিছুটা কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আগামী ২/১ সপ্তাহের মধ্যেই হিমাগারে সংরক্ষিত অতিরিক্ত আলু শেষ হলে নতুন আলুর দামও বাড়বে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়