আ.লীগ নেতা টিপু হত্যার প্রতিবেদন পেছাল

আগের সংবাদ

মাদকের বিরুদ্ধে ‘নতুন যুদ্ধ’ : তালিকায় ৯৩ শীর্ষ মাদক কারবারি, এক লাখ মাদকাসক্ত, জনসচেতনতা বাড়াতে প্রস্তুত অ্যাপ

পরের সংবাদ

লাখাইয়ে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ : সাবেক উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাহান কারাগারে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শফিকুল আলম চৌধুরী, হবিগঞ্জ থেকে : জেলার লাখাই উপজেলার সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের ৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় আটক হয়েছেন লাখাই উপজেলার সাবেক প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (বর্তমানে হবিগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা) মোহাম্মদ জাহান।
গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি জেলা ও দায়রা জজ আহসানুল ইসলামের আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই ঘটনায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
তারা হলেন- লাখাই উপজেলার বামৈ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান এনামুল হক মামুন, সাকে উপসহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক অফিস সহকারী হাবিবুর রহমান ও অফিস সহায়ক মো. গোলাম কিবরিয়া। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের আইনজীবী হাবিবুর রহমান।
তিনি বলেন, সরকারের দায়িত্বশীল পদে থেকে এবং জনপ্রতিনিধি হয়ে যদি কেউ এমন দুর্নীতি করেন তবে জনগণের ভোগান্তির শেষ থাকে না। আমি বিশ্বাস করি তাদের বিচার হলে অন্যরা এসব দুর্নীতি করতে সাহস পাবে না এবং জনগণও রেহাই পাবে। অভিযোগে জানা যায়, লাখাই উপজেলার বামৈ ইউনিয়ন পরিষদের ২০১৭-১৮ অর্থবছরের কাচা আবুর বাড়ি থেকে বামৈ পূর্বগ্রাম কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা পুনর্নির্মাণের জন্য বরাদ্দকৃত ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকার প্রকল্পের সভাপতি হিসেবে মহিলা ইউপি সদস্য লুৎফা চৌধুরীকে রেকর্ডপত্রে দেখানো হয়।
একই ইউনিয়নের ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ভাদিকারা হাড়ি বাড়ি পশ্চিমের কালভার্ট থেকে হাজি আব্দুল বাছির মিয়ার বাড়ি হয়ে ভাদিকারা উত্তর শুয়া মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের ২ লাখ ৫৪ হাজার টাকা ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ভাদিকারা জুম্মাহাটি থেকে আবুল কালাম মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা উন্নয়ন প্রকল্পের ৩৮ হাজার ৭০০ টাকা প্রকল্পের সভাপতি হিসেবে মহিলা সদস্য মোছা. বিউটি আক্তারকে রেকর্ডপত্রে দেখানো হয়। এ তিনটি প্রকল্পের কোনো রেকর্ডপত্রে ইউপি সদস্য লুৎফা চৌধুরী ও বিউটি আক্তার স্বাক্ষর করেননি এবং কোনো বিল নেননি মর্মে দেখা যায়। প্রকল্পগুলোর মাটির কাজসহ উন্নয়নমূলক কাজও করা হয়নি।
অফিস সহায়ক মো. গোলাম কিবরিয়া, সাবেক অফিস সহকারী হাবিবুর রহমান, তৎকালীন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহানের নির্দেশে বিভিন্ন প্রকল্পের মাস্টার রোল নিজেরা পূরণ করে প্রকল্প কমিটির স্বাক্ষর নিজেরা দিয়ে কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের টাকা উত্তোলনে সহায়তা করেন। বামৈ ইউপির তৎকালীন চেয়ারম্যান এনামুল হক মামুন প্রকল্প কমিটির সভাপতিসহ অন্যদের ভুয়া স্বাক্ষর সংবলিত তালিকা পিআইও অফিসে দাখিল করেন মর্মেও দেখা যায়। মূলত ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক মামুন এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহান, তার অফিসের কর্মচারী মো. গোলাম কিবরিয়া এবং হাবিবুর রহমান পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন প্রকল্পের মাস্টার রোল পূরণ করে নিজেদের মনোনীত প্রকল্প কমিটির নাম নিজেরা লিখে নিজেরা স্বাক্ষর দিয়ে প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করেন।
রাস্তা বা অন্যান্য প্রকল্পের উন্নয়নমূলক কাজ না করে বর্ণিত প্রকল্প সমূহের সর্বমোট ৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
এসব অভিযোগে বামৈ ইউরি সাবেক সদস্য ইকবাল মিয়া দুদকে লিখিত অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুদক সমন্বিত হবিগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের তৎকালীন উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শোয়ায়েব হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা একই কার্যালয়ের তৎকালীন উপপরিচালক মো. এরশাদ মিয়া তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ওই মামলায় পিআইও মোহাম্মদ জাহান আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়